ধর্ম ডেস্ক
০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:১৮ পিএম
ইসলামি শরিয়তে ১৫ দিনের কম সময়ের জন্য ৪৮ মাইল বা ৭৭.২৫ কিলোমিটার দূরত্বে সফর করলে নামাজ কসর করার বিধান। এটি ফরজ বিধান। মুসাফির ব্যক্তি সফর অবস্থায় ইচ্ছাকৃত চার রাকাত নামাজ পূর্ণ করলে গুনাহগার হবে এবং এক্ষেত্রে নামাজ পুনরায় পড়তে হবে। আর যদি ভুলক্রমে চার রাকাত শুরু করে দেয় এবং প্রথম বৈঠক করে থাকে, তাহলে সাহু সেজদা করে নিলে ফরজ নামাজ আদায় হয়ে যাবে। আর যদি প্রথম বৈঠক না করে থাকে, তাহলে ফরজ আদায় হবে না, আবারও পড়তে হবে।
আরবি কসর শব্দের অর্থ হলো কম করা, কমানো। চার রাকাতবিশিষ্ট ফরজ নামাজ যেমন- জোহর, আছর ও এশা- এই তিন নামাজ মুসাফিরকে কসর করতে হয়। অর্থাৎ ফরজ চার রাকাতের পরিবর্তে দুই রাকাত পড়তে হয়। মাগরিব ও ফজর নামাজের কোনো কসর নেই। পবিত্র কোরআনে কসর সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘তোমরা যখন জমিনে সফর করবে, তখন তোমাদের জন্য নামাজের কসর করায় কোনো আপত্তি নেই। (সুরা নিসা: ১০১)
আরও পড়ুন: দান সদকা করবেন যাদের
প্রশ্ন হলো- নিজের গ্রামের বাড়িতে তথা নিজের বাড়িতে কয়েক দিনের জন্য বেড়াতে গেলে নামাজ কসর করতে হবে কি না? এর উত্তরে ফুকাহায়ে কেরামের বক্তব্য হলো- গ্রামে আপনার নিজের বাড়িতে গেলে মুসাফির হবেন না। বরং আপনি মুকিমই থাকবেন। তাই সেখানে গেলে আপনাকে পূর্ণাঙ্গ নামাজই পড়তে হবে। ব্যক্তি নিজ স্থায়ী নিবাসে গেলে কখনো মুসাফির হয় না।
নারীর ক্ষেত্রে সাধারণত শ্বশুরবাড়িই মূল বাড়ি। কেননা সেখানেই তিনি মূলত পরিবার নিয়ে থাকেন। এমতাবস্থায় বাবার বাড়িতে ১৫ দিনের কম সময়ের নিয়তে বেড়াতে গেলে তিনি মুসাফির হবেন। তাই তার কসরই পড়তে হবে। একইভাবে কোনও পুরুষ নিজের বাড়ি থেকে ১৫ দিনের কম সময়ের জন্য শশুরবাড়ি বেড়াতে গেলে এবং শশুরবাড়ি ৪৮ মাইলের দূরত্বে হলে তাকে কসর করতে হবে।
আরও পড়ুন: বিয়ের পর নারীরা কি বাবার বাড়িতে মুসাফির?
সফররত অবস্থায় সুন্নত-নফল না পড়লে কোনো অসুবিধা নেই। তবে সফরের মধ্যে কোথাও অবস্থানকালীন তাড়াহুড়া না থাকলে সুন্নত নফল পড়া উত্তম।
(বাদায়েউস সানায়ে: ১/৯১: বাহরুর রায়েক: ২/২৩০, ২/২৩৬; রদ্দুল মুহতার: ২/১৩১, ফতোয়ায়ে ফকিহুল মিল্লাত: ৪/২৮৩,৩২৮; ফতোয়ায়ে শামি: ২/৬১৪; তাবয়িনুল হাকায়েক: ১/৫১৭; আহসানুল ফতোয়া: ৪/৭৫-৭৬; সুনানে আবু দাউদ: ১/৬১৪; ফতোয়া দারুল উলুম জাকারিয়া: ২/৫১৪, ফতোয়া দারুল উলুম দেওবন্দ: ৪/৪৮৩, আপকি মাসায়িল আওর উনকা হল: ২/৩৮৩)