ধর্ম ডেস্ক
৩০ নভেম্বর ২০২৩, ০৩:২২ পিএম
ইসলামে আত্মীয়তার সম্পর্ক অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বান্দাদের আত্মীয়তার সম্পর্কের ব্যাপারে বিশেষভাবে সতর্ক করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা সতর্ক থাকো রক্তসম্পর্কিত আত্মীয়দের ব্যাপারে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের পর্যবেক্ষক।’ (সুরা নিসা: ১)
প্রিয়নবী (স.)-ও উম্মতদের এ ব্যাপারে কঠোরভাবে সতর্ক করেছেন। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহকে ও শেষ দিনে বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার রক্তের সম্পর্ক বজায় রাখে। (বুখারি: ৬১৩৮)
আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারীর প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি আরোপ করে তিনি আরও ইরশাদ করেন, ‘আত্মীয়তার সম্পর্ক বিচ্ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।’ (সহিহ মুসলিম: ৬৪১৫)
আরও পড়ুন: আত্মীয়ের বাড়িতে ঘুরতে গেলে যে সওয়াব
মুমিনের জন্য আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা জরুরি। এই সম্পর্ক কেউ ছিন্ন করলে আল্লাহ তাআলা তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখবেন না বলে হুঁশিয়ারি এসেছে হাদিসে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহ সবকিছু সৃষ্টি করলেন। সৃষ্টির কাজ শেষ করার পর আত্মীয়তার সম্পর্ক উঠে বলল, ‘(আমার এই উঠে দাঁড়ানোটা) আপনার কাছে বিচ্ছিন্নতা থেকে আশ্রয়প্রার্থীর উঠে দাঁড়ানো।’ তিনি (আল্লাহ) বললেন, ‘হ্যাঁ, তুমি কি এতে সন্তুষ্ট নও যে তোমার সঙ্গে যে সুসম্পর্ক রাখবে, আমিও তার সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখব। আর যে তোমার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করবে, আমিও তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করব।’
সে (রক্তের সম্পর্ক) বলল, ‘অবশ্যই।’ আল্লাহ বললেন, ‘তাহলে এ মর্যাদা তোমাকে দেওয়া হলো।’ এরপর রাসুলুল্লাহ (স.) বললেন, তোমরা চাইলে (এই আয়াতটি) পড়ে নাও, ‘ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে সম্ভবত তোমরা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে এবং তোমাদের আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করবে। ওরা তো তারা, যাদের আল্লাহ অভিশপ্ত করে বধির ও দৃষ্টিশক্তিহীন করেন।’ (সুরা মুহাম্মদ: ২২-২৩) (বুখারি: ৪৮৩০)
আরও পড়ুন: কোরআনের দৃষ্টিতে যারা সফলকাম
আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা অনেক মূল্যবান আমল। এই আমলের প্রতি মুমিনের বিশেষ কদর থাকা উচিত। এই বাঁধন ছুঁয়ে আছে খোদার আরশ। নবীজি বলছেন, ‘আল্লাহ তাআলা বলেন, আমি রহমান! আর এই ‘রাহিম’—আত্মীয়তার বন্ধন। তাকে আমার নাম থেকেই একটি নাম দিয়েছি। যে ব্যক্তি এই বন্ধন রক্ষা করবে আমি তার সঙ্গে বন্ধন রক্ষা করব। আর যে ব্যক্তি তার সঙ্গে বন্ধন ছিন্ন করবে আমিও তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করব।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৬৯৬)
আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকারীদের জন্য পরকালীন প্রতিদানের পাশাপাশি দুনিয়াতে একটি বিশেষ ফজিলত রয়েছে। তা হলো- রিজিকে প্রশস্ততা। আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি শুনেছি, আল্লাহর রাসুল (স.) বলেছেন, যে ব্যক্তি পছন্দ করে যে, তার জীবিকা বৃদ্ধি হোক অথবা তাঁর মৃত্যুর পরে সুনাম থাকুক, তবে সে যেন আত্মীয়ের সঙ্গে সদাচরণ করে। (বুখারি: ২০৬৭)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।