images

ইসলাম

মৃত ব্যক্তিকে স্বপ্নে দেখলে কী হয়?

ধর্ম ডেস্ক

২৭ নভেম্বর ২০২৩, ০৫:১০ পিএম

শেষ জামানায় ভালো মানুষ স্বপ্ন দেখবে বেশি এবং তাদের স্বপ্ন সত্য হতে পারে। রাসুলুল্লাহ (স.) এ বিষয়ে জানিয়েছেন যে, ‘কেয়ামত যখন নিকটবর্তী হবে, তখন (সৎ) মুসলিমের অধিকাংশ স্বপ্ন মিথ্যা ও ভ্রান্ত হবে না। তোমাদের মধ্যকার অধিক সত্যবাদী লোক সর্বাধিক সত্য স্বপ্নদ্রষ্টা হবে। তিনি বলেন, মানুষের স্বপ্ন তিন ধরনের হয়ে থাকে। ১. ভালো স্বপ্ন, যা আল্লাহর পক্ষ থেকে সুসংবাদ বহন করে ২. কষ্টদায়ক স্বপ্ন, যা শয়তানের পক্ষ থেকে হয় ৩. মনের মধ্যে উদ্ভূত কল্পনা, যা স্বপ্নে দেখা যায়। (মুসলিম: ২২৬৩)

মৃত ব্যক্তিকে স্বপ্নে দেখা অস্বাভাবিক কিছু নয়। ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী, এতে ক্ষতির বা লাভের কোনো সংকেত নেই। তবে, অবস্থাভেদে ভিন্ন ভিন্ন করণীয় রয়েছে। সেগুলো হলো- কেউ স্বপ্নে মৃত ব্যক্তিকে ভালো অবস্থায় দেখলে বা ভালো কোনো সংবাদ বা উপদেশ দিতে শুনলে আল্লাহর শুকরিয়া করবে এবং আপনজনদের জানাতে পারবে। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, যখন তোমরা কেউ ভালো স্বপ্ন দেখবে, তখন আলহামদুলিল্লাহ পড়বে এবং সে নিজের প্রিয় লোকদের কাছে তা বলতে পারে। (সহিহ বুখারি: ৬৯৮৫)

আরও পড়ুন: নবীজিকে স্বপ্নে দেখার আমল

আর যদি মৃত ব্যক্তিকে খারাপ অবস্থায় দেখা যায় বা সে খারাপ সংবাদ প্রদান করে তাহলে বুঝতে হবে যে, এই স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে। এ বিষয়ে রাসুলুল্লাহ (স.)-এর নির্দেশনা হলো- বাম দিকে তিনবার থুক মেরে ‘আউজুবিল্লা-হি মিনাশ শায়ত্ব-নির রজীম’ বলবে এবং পার্শ্ব পরিবর্তন করবে। (সহিহ মুসলিম: ২২৬২, মেশকাত: ৪৬১৩) অন্য বর্ণনায় এসেছে দাঁড়িয়ে (দু’রাকাত) সালাত আদায় করবে এবং কাউকে বলবে না। এই স্বপ্ন তার কোনো ক্ষতি করবে না। (সহিহ বুখারি: ৭০৪৪, ৬৫৮৩; সহিহ মুসলিম: ২২৬১-৬৩; মেশকাত: ৪৬১২)

জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) জুমার খুতবাদানরত অবস্থায় জনৈক ব্যক্তি এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমি স্বপ্নে দেখলাম যে, আমার ঘাড়ে আঘাত করার ফলে আমার মাথা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে গেল। তারপর আমি তা ধরে এনে পুনরায় আমার ঘাড়ে স্থাপন করলাম। রাসুল (স.) হেসে উঠে বললেন, ঘুমের মধ্যে তোমাদের কারো সাথে শয়তান খেলা করলে সে যেন তা লোকের কাছে না বলে। (মুসলিম: ২২৬৮; মেশকাত: ৪৬১৬; ইবনে মাজাহ: ৩৯১২)

আরও পড়ুন: মৃত ব্যক্তির দোষ-ত্রুটি বর্ণনা ইসলাম সমর্থন করে না

উল্লেখ্য, খারাপ স্বপ্ন দেখলে বা মৃত ব্যক্তিকে স্বপ্নে দেখলে সদকা করার যে প্রথা সমাজে চালু আছে তা বিদআত। এ থেকে বিরত থাকা কর্তব্য। বরং মৃত ব্যক্তির মাগফেরাতের জন্য যেকোনো সময় দোয়া ও সদকা করা যায়। (মুসলিম: ৯২০, ১৬৩১; বুখারি: ১৩৮৮; মেশকাত: ১৬১৯, ১৯৫০)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সকল প্রকার বিপদাপদ, ভয়ঙ্কর বিষয়াদি থেকে হেফাজত করুন। কুসংস্কার ও বিদআত থেকে মুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।