রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

নবীজিকে স্বপ্নে দেখার সঠিক আমল

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৪ মার্চ ২০২২, ০২:৪৬ পিএম

শেয়ার করুন:

নবীজিকে স্বপ্নে দেখার সঠিক আমল

প্রিয়নবী (স.)-কে স্বপ্নে দেখা অনেক বড় সৌভাগ্যের বিষয়। নবীপ্রেমিকদের জন্য এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি হতে পারে না। কেননা যে চোখ প্রিয়নবী (স.)-কে (ঈমানের সঙ্গে) দেখবেন, সে ব্যক্তির জন্য জাহান্নামের আগুন হারাম হয়ে যায়। সাহাবি, তাবেয়ীসহ অনেক বুজুর্গানে দ্বীন নবী করিম (স.)-কে স্বপ্নে দেখেছেন। আর নবী করিম (স.)-কে স্বপ্নে দেখা বাস্তবে দেখার মতো। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন—

‘যে আমাকে স্বপ্নে দেখল, সে আমাকেই দেখল। কেননা বিতাড়িত শয়তান আমার রূপ ধরতে পারে না। আর যে আমার ওপর মিথ্যাচার করল, সে তার দোজখের আসন গ্রহণ করল।’ (সহিহ বুখারি: ১১০)

অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘যে আমাকে স্বপ্নে দেখল, শিগগিরই সে আমাকে জাগরণে দেখবে অথবা সে যেন আমাকে জাগরণেই দেখল। আর শয়তান আমার রূপ ধরতে পারে না।’ (সহিহ মুসলিম: ২২৬৬)

কারা নবী (স.)-কে স্বপ্নে দেখেন

মনে রাখতে হবে, যে যাকে ভালোবাসেন, সবকিছুতে প্রিয়কে অনুকরণ-অনুসরণ করেন, সবসময় তাঁর সাক্ষাতের প্রতীক্ষায় থাকেন, কেবল তিনিই তাঁকে স্বপ্নে দেখার সৌভাগ্য অর্জন করতে পারেন। সেহিসেবে পূর্ণ ইসলাম পালনকারী ও সুন্নতের অনুসারীরাই কেবল রাসুলুল্লাহ (স.)-কে দেখতে পারেন।

বেঈমানদের কেউ নবী করিম (স.)-কে দেখার দাবি করলে—সেটা বরাবরই মিথ্যা দাবি। 

ইসলামের ইতিহাস থেকে জানা যায়, ইমাম আবু হানিফা, আবদুর রহমান জামি, জালালুদ্দীন রুমি, শেখ সাদি, সাদুদ্দীন তাফতাজানি, হজরত শাহ ওলিউল্লাহ দেহলভি, আবদুল আজিজ, শায়খ জাকারিয়াসহ যুগে যুগে অসংখ্য নবীপ্রেমিক রাসুলুল্লাহ (স.)-কে স্বপ্নে দেখেছেন। বর্ণিত আছে, ইমাম মালেক (রহ.) অধিকাংশ রাতেই নবী করিম (স.)-কে স্বপ্নে দেখতেন।

রাসুল (স.)-কে স্বপ্নে দেখতে যা করবেন

রাসুল (স.)-কে স্বপ্নে দেখতে হলে তাঁর প্রতি অন্তরে অধিক ভালোবাসা থাকতে হবে। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁর সুন্নতের প্রতিফলন ঘটাতে হবে। বেশি পরিমাণে দরুদ পাঠ করতে হবে। (ফতোয়ায়ে ফকিহুল মিল্লাত: ২/২৩৪)

দেখতে কেমন ছিলেন প্রিয়নবী (স.)

নবী করিম (স.) দেখতে কেমন ছিলেন। কোন আকৃতিতে তাকে স্বপ্নে দেখা যাবে। শামায়েলে তিরমিজির বর্ণনায় তাঁর আকার-আকৃতির বর্ণনা দেওয়া হয়েছে এভাবে—

‘তিনি ছিলেন মানানসই দীর্ঘদেহী। তার গায়ের রঙ দুধে-আলতায় মিশ্রিত গোলাপের মতো। গোলগাল হালকা-পাতলা চেহারা। ঘন দাড়ি। মুখগহ্বর প্রশস্ত। ঘাড় যেন রৌপ্যপাত্রে রক্তঢালা। কেশরাশি সামান্য কোঁকড়ানো-বাবরি। মেদহীন সুঠাম দেহ। হাত-পায়ের আঙুলগুলো শক্তিশালী ও মজবুত।

বাহু, কাঁধ ও বুকের ওপরে পশমবিশিষ্ট। অতিরিক্ত পশমমুক্ত শরীর। বুকে নাভি পর্যন্ত পশমের দীর্ঘ রেখা। দুই কাঁধের মাঝখানে মোহরে নবুওয়ত। মাথা ও অস্থিবন্ধনীগুলো কিছুটা বড়সড়। প্রশস্ত ললাট। চক্ষুগোলক ডাগর ডাগর। চোখের মণি কুচকুচে কালো। পাপড়ি লম্বাটে। ভ্রুযুগল অমিলিত প্রশস্ত ঘন।

ভ্রুদ্বয়ের মাঝখানে প্রস্ফুটিত একটা রগ, যা রাগের সময় স্ফীত হতো। উন্নত চকচকে নাসিকা। দাঁতগুলো বিযুক্ত রুপার গাঁথুনি। এক কথায় তার অপূর্ব রূপমাধুর্য বর্ণনাতীত। যে কেউ তাকে প্রথম দর্শনে হতভম্ব হয়ে পড়ত। সে একথা বলতে বাধ্য ‘জীবনে এমন সুন্দর মানুষ দ্বিতীয়জন দেখিনি।’

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর মধ্যে সত্যিকারের নবীপ্রেমিকদের প্রিয়নবী (স.)-কে স্বপ্নে দেখার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর