images

ইসলাম

নামাজ আল্লাহর কাছাকাছি পৌঁছার তাৎক্ষণিক মাধ্যম

২৫ অক্টোবর ২০২৩, ০৫:০৮ পিএম

প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ ইবাদত। ঈমান আনার পর সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো নামাজ। একজন মুমিন ঘরে-বাইরে, পথে-ঘাটে, দেশে-বিদেশে, সাগরে-মহাকাশে যেখানেই অবস্থান করে, তাকে নামাজ পড়তেই হবে। কেননা আল্লাহ তাআলার নির্দেশ, ‘...নির্ধারিত সময়ে সালাত আদায় করা মুমিনদের জন্য অবশ্যকর্তব্য।’ (সুরা নিসা: ১০৩)

নামাজ মূলত খোদাপ্রদত্ত এক মহান নেয়ামত। নামাজের সময় মুসল্লি আল্লাহ তাআলার কাছাকাছি অবস্থান করেন, মহান রবের সঙ্গে একান্তে আলাপচারিতা করেন। আল্লাহর রাসুলের (স.) ভাষায়- ‘মুমিন যখন নামাজে থাকে সে তার প্রতিপালকের সঙ্গে নিভৃতে কথা বলে।’ (সহিহ বুখারি: ৪১৩)

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ নামাজে দাঁড়ালে সে তার সামনের দিকে থুথু ফেলবে না। কেননা সে যতক্ষণ তার জায়নামাজে থাকে, ততক্ষণ মহান আল্লাহর সঙ্গে চুপে চুপে কথা বলে।’ (সহিহ বুখারি: ৪১৬)

আরও পড়ুন: পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ৬টি বড় পুরস্কার

এসব হাদিসের আলোকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, নামাজ হচ্ছে হেকমাহপূর্ণ এক অলৌকিক তরবিয়ত-ব্যবস্থা। নামাজের মাধ্যমেই ইখলাস, আত্মশুদ্ধির মহৎ গুণাবলীর বিকাশ ঘটে, যা বান্দাকে পৌঁছে দেয় আল্লাহর সান্নিধ্যের স্বর্ণশিখরে। নামাজ আল্লাহ তাআলার ভালোবাসা ও সন্তুষ্টি লাভের মাধ্যম। আরবিতে একটি কথা আছে যে, ‘আসসালাতু মিরাজুল মুমিনিন’ তথা ‘নামাজ মুমিনের জন্য মেরাজস্বরূপ’। এটি হাদিস না হলেও এর মর্ম উল্লেখিত বিশুদ্ধ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। তবে এ কথাও সত্য যে, নামাজের সঙ্গে মেরাজের একটা সম্পর্ক আছে। কেননা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মেরাজের রাতে ফরজ হয়েছিল। (বুখারি: ৩৮৮৭; মুসলিম: ১৬২, ১৬৪)

নামাজ বান্দাকে সকল প্রকার পাপাচার, প্রবৃত্তিপূজা, ক্ষণস্থায়ী ভোগ-বিলাসের অন্ধ মোহ থেকে মুক্ত করে পূত-পবিত্র ও উন্নত জীবনের অধিকারী বানিয়ে দেয়। বিকশিত করে তোলে তার ভেতরের সকল সুকুমারবৃত্তি। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেন- اِنَّ الصَّلٰوةَ تَنْهٰی عَنِ الْفَحْشَآءِ وَ الْمُنْكَرِ ‘নিশ্চয়ই সালাত অন্যায় ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা আনকাবুত: ৪৫)

আরও পড়ুন: ৪০ দিন জামাতে নামাজ পড়লে কী হয়
আল্লাহ তাআলা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়কারীকে জান্নাত এবং সম্মানজনক পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা নিজেদের নামাজের হেফাজত করে তারাই জান্নাতে সম্মানের পাত্র হবে।’ (সুরা মাআরিজ: ৩৫)

মহানবী (স.) বলেন, ‘আল্লাহ তাঁর বান্দাদের ওপর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন। যে ব্যক্তি তা যথাযথভাবে পালন করবে, আর অবহেলার কারণে এর কোনোটি পরিত্যাগ করবে না, মহান আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানোর অঙ্গীকার করেছেন। আর যে ব্যক্তি তা (যথাযথভাবে) আদায় করবে না, তার জন্য আল্লাহর কাছে কোনো প্রতিশ্রুতি নেই। তিনি ইচ্ছা করলে তাকে শাস্তি দেবেন কিংবা জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।’ (সুনানে আবি দাউদ: ১৪২০)

যে ব্যক্তি নামাজ পড়ে না তার ঈমান খুবই দুর্বল। ইসলামে তার অংশগ্রহণ খুব সামান্যই। মহানবী (স.) ইরশাদ করেছেন, যার মধ্যে নামাজ নেই, তার ভেতর দ্বীনের কোনো হিস্যা নেই। (মুসনাদে বাজ্জার: ৮৫৩৯) আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে প্রত্যহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যথাযথ আদায় করার তাওফিক দান করুন। নামাজি হিসেবে কবুল করুন। আমিন।