০৯ অক্টোবর ২০২৩, ০৫:১৩ পিএম
কেয়ামতের আগে ছোট-বড় অনেক আলামত দেখা যাবে। তার মধ্যে একটি ছোট আলামত বর্ণনায় রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, দাসী তার মনিবকে জন্ম দেবে। এ হাদিসের ব্যাখ্যার আগে হাদিসটি একবার দেখে নিই। হজরত ওমর (রা.) বর্ণিত দীর্ঘ হাদিসের এক পর্যায়ে এসেছে—قَالَ: فَأَخْبِرْنِي عَنِ السَّاعَةِ، قَالَ: «مَا الْمَسْئُولُ عَنْهَا بِأَعْلَمَ مِنَ السَّائِلِ» قَالَ: فَأَخْبِرْنِي عَنْ أَمَارَتِهَا، قَالَ: «أَنْ تَلِدَ الْأَمَةُ رَبَّتَهَا، وَأَنْ تَرَى الْحُفَاةَ الْعُرَاةَ الْعَالَةَ رِعَاءَ الشَّاءِ يَتَطَاوَلُونَ فِي الْبُنْيَانِ
অর্থ: ‘আগন্তুক বললেন, আমাকে কেয়ামত সম্পর্কে অবহিত করুন। রাসুল (স.) বললেন, এ বিষয়ে প্রশ্নকারীর চেয়ে যাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছে তিনি অধিক অবহিত নন। আগন্তুক (ফেরেশতা জিব্রাইল) বললেন, আমাকে এর আলামত সম্পর্কে অবহিত করুন। রাসুল (স.) বললেন, তা হলো এই যে, দাসী তার প্রভুর জননী হবে। আর নগ্নপদ, বিবস্ত্রদেহ দরিদ্র মেষপালকদের বিরাট বিরাট অট্টালিকার প্রতিযোগিতায় গর্বিত দেখতে পাবে।’ (সহিহ মুসলিম: ৮, ইফাবা: ১)
হাদিসে নবী (স.) কেয়ামতের দুইটি আলামত উল্লেখ করেছেন। একটি হলো- দাসী তার মালিকের জননী হবে। শিরোনাম অনুযায়ী হাদিসের এই অংশের ব্যাখ্যা নিচে আলোচনা করা হলো।
আরও পড়ুন: কেয়ামতের আলামত: ইলমশূন্য বক্তা বেড়ে যাবে
‘দাসী মনিবকে জন্ম দেবে’ এর ব্যাখ্যা
১. এর দ্বারা মায়ের সাথে দুর্ব্যবহার করা উদ্দেশ্য। অর্থাৎ লোকেরা নিজের মায়ের সাথে এমন খারাপ আচরণ করবে, এমন দুর্ব্যবহার করবে, যেমনটা মালিক তার কর্মচারীর সঙ্গে করে থাকে। মারধর করা, গালাগাল করা, তার দ্বারা খেদমত নেওয়া ইত্যাদির মাধ্যমে সন্তান নিজ মায়ের সাথে দাসীর মতো আচরণ করবে।
আরও পড়ুন: কেয়ামতের যেসব আলামত সৌদি আরবে প্রকাশ পাবে
২. বাস্তবেই বাঁদী-দাসীর সন্তান বাদশাহ হবে। ফলে উক্ত দাসী মা হওয়ার পরও তার সন্তান বাদশা হওয়ায় তার অধীনত হবে। এ অর্থে হাদিসের বাহ্যিক অর্থই উদ্দেশ্য। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন অসংখ্য দাসীর সন্তান পরবর্তীতে বাদশা ও সম্রাট হয়েছেন। যেমন বাদশা মামুনর রশীদের মা দাসী ছিলেন।
৩. উম্মে ওয়ালাদ বিক্রির রেওয়াজ হবে। উম্মে ওয়ালাদ হলো যার গর্ভ থেকে মনিবের ঔরসে সন্তান জন্ম নিয়েছে। এমন উম্মে ওয়ালাদকে বিক্রি করা হারাম। কিন্তু কেয়ামতের কাছাকাছি সময়ে এমন উম্মে ওয়ালাদ বিক্রি হবে। ফলে এমনও হবে যে, উক্ত বাঁদীর সন্তানই তাকে দাসী হিসেবে ক্রয় করে নেবে। এ ব্যাপারে সন্তানের কোনো খবরও থাকবে না যে, সে তার মাকেই দাসী হিসেবে ক্রয় করে নিয়েছে। সে তার থেকে দাসীর মতোই সেবা নেবে। (ফাতহুল বারি: ১/১২২, দরসে মুসলিম, মাওলানা তাকি উসমানি: ২৪৬)