images

ইসলাম

নারীর খৎনা সম্পর্কে হাদিস

০৪ অক্টোবর ২০২৩, ০৪:৪৫ পিএম

পুরুষদের খৎনা করা একটি মহান সুন্নত। যুগে যুগে বড় বড় নবী-রাসুলও এ সুন্নত পালন করেছেন। সাইদ ইবনে মুসাইয়াব (রহ.) থেকে বর্ণিত, হজরত ইবরাহিম (আ.) হলেন খতনার সুন্নত পালনকারী সর্বপ্রথম ব্যক্তি। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা: ২৬৪৬৭)

কিন্তু মহিলাদের খৎনা করা আবশ্যকীয় বিষয় নয়। ইসলামে এর কোনো বিশেষ মর্যাদাও নেই। এটি সুন্নতও নয়। বরং এটি জায়েজ। তাই এটি নিয়ে অযথা বাড়াবাড়ি করা কাম্য নয়। 

বিজ্ঞজনদের মতে, তৎকালীন আরবে মহিলাদের খৎনার প্রচলন ছিল পরিবেশ শুষ্ক হওয়ার কারণে। সেখানকার মহিলাদের জরায়ুর উপরিভাগ হত খুবই রুক্ষ ও মোটা। সতি পর্দা ছিন্ন না হলে সন্তান না হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। তাই তৎকালীন আরবের লোকেরা সতি পর্দা ছিন্ন করার জন্য মহিলাদের খৎনা করার প্রথা চালু করে। 

রাসুল (স.) যখন জানলেন যে, এটি করার ফলে মহিলাদের উপকার হয়, তিনি এ বিষয়ে অতিরঞ্জন না করার আদেশ দিয়েছেন। যেমন হাদিসে এসেছে- হজরত উম্মে আতিয়্যাহ আনসারি (রা.) থেকে বর্ণিত, মদিনার এক মহিলা খৎনা করাত। তখন তাকে রাসুল (স.) বললেন- তুমি অতিরঞ্জন করো না। তবে এটি পুরুষের জন্য অধিক উপকারী আর মহিলাদের প্রিয় হয়ে থাকে। ইমাম আবু দাউদ (রহ) বলেন, এ হাদিসের একজন রাবি মুহাম্মদ বিন হাসসান মাজহুল। আর এ হাদিসটি জঈফ। (সুনানে আবু দাউদ: ৫২৭১, বায়হাকি কুবরা, হাদিস: ১৭৩৩৮)

আরও পড়ুন: ৪ আমলেই নারীর জান্নাত

অন্য হাদিসে এসেছে, হজরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) ইরশাদ করেছেন, খৎনা পুরুষের জন্য সুন্নত আর মহিলাদের জন্য ইজ্জত। (বায়হাকি কুবরা, হাদিস: ১৭৩৪৪, মুসনাদে আহমদ: ৫/৭৫, কানযুল উম্মাল: ৪৫৩০৫)

সবগুলো হাদিস এ কথাই প্রমাণ করে যে, প্রয়োজনে মহিলাদের খৎনা করা উত্তম। তবে এটি সুন্নত বা জরুরি কিছু নয়। এ কারণেই ফুকাহায়ে কেরাম এবং হাদিস ব্যাখ্যাকারগণ মহিলাদের খৎনাকে সুন্নত বা জরুরি সাব্যস্ত করেননি। তাই মহিলাদের শারীরিক ক্ষতির আশঙ্কা থাকলে খৎনা করতে বাধ্য করা জায়েজ হবে না।

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ তোমাদেরকে অসুবিধায় ফেলতে চান না; কিন্তু তোমাদেরকে পবিত্র রাখতে চান এবং তোমাদের প্রতি স্বীয় নেয়ামত পূর্ণ করতে চান, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। (সুরা মায়েদা: ৬)

(বিস্তারিত জানতে পড়ুন: ফাতহুল বারি লিইবনে হাজার: ১০/৩৮৪-৩৮৭; আলবাহরুর রায়েক: ১/৫৮; ফাতহুল কাদির: ১/৬৩)