images

ইসলাম

দেখা-সাক্ষাতে নবীজির ৪ সুন্নত

ধর্ম ডেস্ক

০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০২:০৯ পিএম

দেখা-সাক্ষাৎ সুসম্পর্ক অটুট রাখার অন্যতম মাধ্যম। মুসলমানদের পারস্পরিক সাক্ষাতে আল্লাহ তাআলা খুশি হন, তিনি তাদের ভালোবাসেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘এক ব্যক্তি তার ভাইয়ের সাক্ষাতের জন্য অন্য এক গ্রামে গেল। আল্লাহ তাআলা তার জন্য পথিমধ্যে একজন ফেরেশতা নিযুক্ত করেন। ওই ব্যক্তি যখন ফেরেশতার কাছে পৌঁছল, তখন ফেরেশতা জিজ্ঞেস করল, তুমি কোথায় যেতে চাইছ? সে বলল, আমি অমুক গ্রামে আমার এক ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করব। ফেরেশতা বলেন, তার কাছে কি তোমার কোনো অবদান আছে, যা তুমি আরো প্রবৃদ্ধি করতে চাও? সে বলল, না। আমি তো শুধু আল্লাহর জন্যই তাকে ভালোবাসি। ফেরেশতা বলল, আমি আল্লাহর পক্ষ থেকে (তাঁর দূত হয়ে) তোমাকে জানাতে এসেছি যে আল্লাহ তোমাকে ভালোবাসেন, যেমন তুমি তোমার ভাইকে তাঁরই সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ভালোবেসেছ।’ (মুসলিম: ৬৪৪৩)

সাক্ষাৎকালে মুমিনের পালনীয় কিছু সুন্নত এখানে তুলে ধরা হলো—

১. সালাম দেওয়া
কারো সঙ্গে কুশল বিনিময়ের অন্যতম সুন্নত হলো, সহি-শুদ্ধভাবে সালাম দেওয়া। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যখন তার ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে, তখন সে যেন তাকে সালাম দেয়। অতঃপর দুজনের মধ্যে যদি গাছ, দেয়াল বা পাথর আড়াল হয়ে যায় এবং তারপর আবার সাক্ষাৎ হয়, তাহলেও যেন তাকে সালাম দেয়।’ (আবু দাউদ: ৫২০০)

আরও পড়ুন: মাথা নিচু করে পা ছুঁয়ে সালাম, ইসলাম কী বলে

২. মুসাফাহা করা
কারো সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে কুশল বিনিময়ের আরেকটি সুন্নত হলো, সুন্নত পদ্ধতিতে মুসাফাহা করা এবং তাকে যথাযথ সম্মান করা ও গুরুত্ব দেওয়া। আনাস ইবনু মালিক (রা.) বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি যখন রাসুলুল্লাহ (স.)-এর সাক্ষাতে এসে মুসাফাহা (করমর্দন) করত, তখন সেই ব্যক্তি তার হাত টেনে না নেওয়া পর্যন্ত তিনি নিজের হাত টেনে নিতেন না। আর সে তার চেহারা ফিরিয়ে না নেওয়া পর্যন্ত তিনি ওই ব্যক্তি থেকে নিজের চেহারা ফিরিয়ে নিতেন না। তিনি কখনো তাঁর পা দুটি তাঁর সামনে বসা লোকদের দিকে প্রসারিত করতেন না।’ (তিরমিজি: ২৪৯০)

৩. হাসিমুখে কথা বলা 
আবু জার (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (স.) আমাকে বলেছেন, ভালো কোনো কিছু দান করাকে হীন মনে করে না, এমনকি হোক সেটা ভাইয়ের সঙ্গে হাসিমুখে সাক্ষাৎ দেওয়া।’ (মুসলিম: ৬৫৮৪)

আরও পড়ুন: আল্লাহ সহজ-সরল মানুষের জন্য যা বরাদ্দ রেখেছেন

৪. উত্তম কথা বলা
কুশল বিনিময়ের অন্যতম একটি সুন্নত হলো- ভালো কথা বলা। অহেতুক কথা বর্জন করা। প্রিয়নবী (স.) ভালো কথা বলাকে সদকা বলে আখ্যা দিয়েছেন। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, মানুষের প্রত্যেক জোড়ার প্রতি সদকা আছে—প্রতিদিন যার ওপর সূর্য উদিত হয়। দুজন লোকের মধ্যে সুবিচার করাও সদকা, কাউকে সাহায্য করে বাহনে আরোহণ করিয়ে দেওয়া বা তার ওপর তার মালপত্র তুলে দেওয়াও সদকা, ভালো কথাও সদকা, সালাত আদায়ের উদ্দেশ্যে পথ চলায় প্রতিটি কদমেও সদকা, রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু অপসারণ করাও সদকা।’ (বুখারি: ২৯৮৯)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ইসলামি সংস্কৃতি, শিষ্টাচার জানার ও মানার তাওফিক দান করুন। প্রত্যেক বিষয়ে নবীজির সুন্নত আকড়ে ধরার তাওফিক দান করুন। আমিন।