ধর্ম ডেস্ক
২৭ আগস্ট ২০২৩, ০১:১৩ পিএম
পৃথিবীতে এমন এক শহর রয়েছে, যেখানে কোনোরকম পাপ করে রক্ষা পাওয়ার উপায় নেই। রাসুলুল্লাহ (স.) জানিয়েছেন, ওই শহরের অধিবাসীদের কোনো রকম কষ্ট দেওয়া যাবে না। কারো ক্ষতি করা যাবে না। এ বিষয়ে হাদিস শরিফে নবীজি (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি এই নগরীর অধিবাসীদের কোনো ক্ষতি সাধন করতে চায়, আল্লাহ তাকে মিশিয়ে দেবেন (নিশ্চিহ্ন করে দেবেন) যেভাবে লবণ পানির মধ্যে মিশে যায়।’ (সহিহ মুসলিম: ৩৪২৪)
সেই শহরের নাম কী? শহরটির নাম হলো- মদিনা মুনাওয়ারা। অসংখ্য আয়াত ও হাদিস দ্বারা মদিনা নগরীর সম্মান ও মর্যাদা প্রমাণিত। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘মদিনা এখান থেকে ওখান পর্যন্ত হারাম (রূপে গণ্য)। সুতরাং তার গাছ কাটা যাবে না এবং এখানে কোনো ধরনের অঘটন ঘটানো যাবে না। যদি এখানে কোনো অঘটন ঘটায় তাহলে তার প্রতি আল্লাহ, ফেরেশতা ও সব মানুষের অভিশাপ।’ (সহিহ বুখারি: ১৮৬৭)

মদিনায় গিয়ে কেউ পাপে লিপ্ত হওয়া তো দূরের কথা, কোনো পাপাচারীকে আশ্রয় দিলেও তার ওপর আল্লার অভিশাপ বর্ষিত হবে। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মদিনায় কোনো পাপ করে অথবা পাপাচারী আশ্রয় দান করে, তার ওপর আল্লাহ, ফেরেশতারা ও সব মানুষের অভিশাপ পড়বে। কেয়ামতের দিন তার কাছ থেকে আল্লাহ কোনো ইবাদত ও দান গ্রহণ করবেন না।’ (সহিহ বুখারি: ১৮৭০)

এই শহরে পাপীরা চাইলেও ঠাঁই নিতে পারে না। তারা সেখানে স্থায়ী হতে পারবে না বলে ঘোষণা করেছেন নবীজি। ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি এমন এক জনপদে হিজরত করার জন্য আদিষ্ট হয়েছি, যে জনপদ অন্য সব জনপদের ওপর জয়ী হবে। লোকেরা তাকে ইয়াসরিব বলে থাকে। এটা হলো মদিনা। তা অবাঞ্ছিত লোকদের এমনভাবে বহিষ্কার করে দেয়, যেমনভাবে কামারের অগ্নিচুলা লোহার মরিচা দূর করে দেয়।’ (সহিহ বুখারি: ১৮৭১)

রিয়াজুল জান্নাহ: পৃথিবীতে এক টুকরো জান্নাত
কেউ ষড়যন্ত্র করলে নিজেই ধ্বংস হবে। মদিনাবাসীর বিরুদ্ধে কেউ ষড়যন্ত্র করলে ব্যক্তি নিজেই ধ্বংস হবে। সাদ (রা.) বলেন, আমি নবী (স.)-কে বলতে শুনেছি যে কেউ মদিনাবাসীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবে বা প্রতারণা করবে, সে লবণ যেভাবে পানিতে গলে যায়, সেভাবে গলে যাবে।’ (সহিহ বুখারি: ১৮৭৭)

পবিত্র মসজিদে নববি এই শহরে অবস্থিত। এখানে সবুজ গম্বুজের ছায়াতলে শুয়ে আছেন বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (স.)। এই শহরের আরেক নাম মদিনাতুন্নবী বা নবীর শহর। এর মর্যাদা রক্ষা করা প্রতিটি মুমিনের কর্তব্য। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে সেই তাওফিক দান করুন। আমিন।