images

রাজনীতি

তারেক রহমানের সংবর্ধনায় ৩০০ ফিটে তৈরি হচ্ছে বিশাল মঞ্চ

নিজস্ব প্রতিবেদক

২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৩৭ পিএম

১৭ বছর প্রবাস জীবন কাটিয়ে আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ লক্ষ্যে ঢাকায় ২০-২৫ লাখ নেতাকর্মী সমাগমের প্রস্তুতি দলটির। তারই অংশ হিসেবে পূর্বাচলমুখী ৩০০ ফিটে তৈরি হচ্ছে বিশাল মঞ্চ, সেখানে বিএনপির এই নীতিনির্ধারককে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।

বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে রাজধানীর সড়কগুলোতে যেন অতিমাত্রায় জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না হয়, সেদিক বিবেচনায় ৩০০ ফিটকে বেছে নেওয়া হয়েছে। রোববার (২১ ডিসেম্বর) থেকে সেখানেই চলছে মঞ্চ তৈরির কাজ।

এদিন দুপুর থেকে বিশ্বরোড থেকে পূর্বাচলমুখী ৩০০ ফিট সড়কের একটি অংশ নিয়ে শুরু হয় মঞ্চ তৈরির কাজ। এই নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করার জন্য কমিটির সদস্যরা দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির নেতারা।

তারা আরও জানান, ২৫ ডিসেম্বর লন্ডন থেকে সিলেট হয়ে ঢাকায় পৌঁছাবেন তারেক রহমান। বাংলাদেশ বিমানের একটি নিয়মিত বাণিজ্যিক ফ্লাইটে তিনি বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটের দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন। এরপর বনানী-কাকলী হয়ে ৩০০ ফিট এলাকায় যাবেন। সেখানে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেবেন।

এদিকে তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের লিখিত অনুমতি পেয়েছে বিএনপি। 

আরও পড়ুন: ট্রাভেল পাস পেয়েছেন তারেক রহমান

দলটির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর সই করা অনুমতিপত্র বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর কাছে পাঠানো হয়েছে।

বিএনপি নেতারা আরও বলেন, তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে দেশবাসীর মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ ও উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে। এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বিএনপির রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

300
তারেক রহমানে সংবর্ধনায় রাজধানীর ৩০০ ফিট এলাকায় বিশাল মঞ্চ তৈরির কাজ চলছে।

জানা গেছে, দেশে ফিরে গুলশানের ১৯৬ নম্বরের বাড়িতে উঠবেন তারেক রহমান, যেটি ইতোমধ্যে পুরোপুরি প্রস্তুত। নিশ্চিত করা হয়েছে শতভাগ নিরাপত্তা। বাড়ির পুরো আঙ্গিনা ও সড়কেও বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা, দেয়াল জুড়ে তারকাঁটা ও নিরাপত্তা রক্ষীদের কঠোর পাহারা।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের প্রত্যাবর্তনের দিনে তার নিরাপত্তা কাজে নিয়োজিত থাকবেন বাংলাদেশ পুলিশের প্রায় ২ হাজার সদস্য। এছাড়া বিএনপির নিজস্ব ব্যবস্থায় দলের চেয়ারপারসন সিকিউরিটি ফোর্সের (সিএসএফ) মাধ্যমে সমন্বিত নিরাপত্তাও দেওয়া হবে।

বিএনপির একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এভারকেয়ার হাসপাতাল ও গুলশানের বাসা পর্যন্ত এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বাসা, অফিস এলাকা ও তারেক রহমানের চলাচলের পথ ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, বিশেষ ব্যক্তি হিসেবে তারেক রহমানের নিরাপত্তায় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। তবে সার্বিক নিরাপত্তার মূল দায়িত্বে থাকছে চেয়ারপারসন সিকিউরিটি ফোর্স (সিএসএফ)। তারা পুলিশ ও বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিরাপত্তার বিষয়ে কাজ করছেন।

২০০৮ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে কারাগারে ব্যাপক নির্যাতন চালানো হয় তারেক রহমানের ওপর। ওই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর তিনি সবগুলো মামলা থেকে জামিন পান। এরপর ১১ সেপ্টেম্বর রাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান। আর ফেরেননি। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে সপরিবারে বসবাস করছেন সেন্ট্রাল লন্ডনের এডমন্টনে।

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়টি ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’। সবার একটাই প্রশ্ন ছিল, কবে তিনি দেশে ফিরবেন। 

অবশেষে গত ১২ ডিসেম্বর রাতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদ সম্মেলনে জানান, আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন তারেক রহমান। বিএনপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজ এবং মিডিয়া সেল থেকেও খবরটি জানানো হয়।

এএইচ