নিজস্ব প্রতিবেদক
১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:২৬ পিএম
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকে কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র সম্পাদক ফাতিমা তাসনিম জুমা। তিনি বলেন, এই ঘটনার পেছনে একটি সংগঠিত সিন্ডিকেট কাজ করেছে এবং এর সঙ্গে রাষ্ট্রীয় সংস্থার একটি অংশের প্রত্যক্ষ মদদ থাকার বিষয়টি স্পষ্ট।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদে শহীদ মিনারে আয়োজিত সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ফাতিমা তাসনিম জুমা বলেন, উসমান ভাই আমাদের পাশে ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন। তিনি হয়তো আর আগের মতো কর্মসূচিতে সামনে থেকে থাকবেন না, কিন্তু ইনকিলাব মঞ্চের মূল কথাগুলো আমাদের মাধ্যমেই সামনে আসবে। আমাদের সাহসের জায়গা সব সময় উসমান ভাই ছিলেন।
তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, উসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনা কি সত্যিই বিচ্ছিন্ন। অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে একজন নির্বাচন কমিশনের সদস্য কীভাবে এমন মন্তব্য করার সাহস পান এবং এখনও কীভাবে তিনি তাঁর পদে বহাল থাকেন। জনগণের সামনে তাঁর নৈতিক অবস্থান কীভাবে টিকে থাকে, সেই প্রশ্নের জবাব দিতে হবে।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং সম্মান দেখানোর অর্থ এই নয় যে সরকারের সব সিদ্ধান্ত নিঃশর্তভাবে মেনে নেওয়া হবে। ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নিয়ে কথা বলার কারণে আজ একজন মানুষ মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন—এ ঘটনাকে কোনোভাবেই বিচ্ছিন্ন বলে চালিয়ে দেওয়া যাবে না।
আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে ফাতিমা তাসনিম জুমা বলেন, কিছুদিন পর যে নির্বাচন আয়োজনের কথা বলা হচ্ছে, সেখানে রাজনৈতিক দলগুলোর জীবনের নিরাপত্তা কোথায়। রাষ্ট্র কী পরিমাণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে, তা আগে দৃশ্যমানভাবে দেখাতে হবে। নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে কোনো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, উসমান হাদিকে আমরা কখনো ভাবিনি এমন নিস্তেজ অবস্থায় বিদেশে পাঠাতে হবে। আমাদের বিশ্বাস ছিল, তিনি রাষ্ট্রীয় সফরে সম্মানের সঙ্গে বিদেশ যাবেন। আজ চোখের পানি নিয়ে তাঁকে বিদায় জানাতে হয়েছে।
হামলার তদন্ত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখানে কোনো একক শুটার জড়িত নয়। একটি পূর্ণাঙ্গ সিন্ডিকেট এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। শুধু একজন শুটার ও তাঁর স্বজনদের গ্রেপ্তার করে দায় সারা যাবে না। আমরা চাই পুরো সিন্ডিকেটকে জীবিত অবস্থায় গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হোক।
তিনি দাবি জানান, হাদি সুস্থ হয়ে ওঠার আগেই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সব পরিকল্পনাকারী, সহায়তাকারী ও মদদদাতাদের চিহ্নিত করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে বিপ্লবী সরকারে বসে কারা এই সিন্ডিকেটকে আশ্রয় ও সহযোগিতা করছে, সেটিও স্পষ্ট করতে হবে।
এএইচ/এআর