images

রাজনীতি

নির্বাচনে অংশ নেবেন তারেক রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক

০৬ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৩৬ এএম

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। নির্বাচনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ারও ভূমিকা থাকবে বলে জানান তিনি।

বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তারেক রহমান। দুই পর্বের সাক্ষাৎকারটির প্রথম পর্ব সোমবার (৬ অক্টোবর) বিবিসি বাংলার ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হয়।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি অংশ নেবেন। আর ভোটের সময় তিনি দেশেই থাকবেন বলে আশা করছেন।

তারেক রহমানের কাছে বিবিসি বাংলার প্রশ্ন ছিল, এবারের নির্বাচনে তিনি কি প্রধানমন্ত্রী পদ প্রত্যাশী? উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় আপনি প্রথমদিকে বোধহয় একটা প্রশ্ন করেছেন, আমি ওখানে বলেছিলাম স্বাভাবিক আমি একজন রাজনৈতিক দলের সদস্য। একজন রাজনৈতিক কর্মী আমি। নির্বাচনের সাথে তো রাজনৈতিক দল এবং রাজনৈতিক কর্মীর ওতপ্রোত সম্পর্ক।’

‘কাজেই নির্বাচন যেখানে একটি মানে জনগণের সম্পৃক্ত এরকম একটি নির্বাচন হবে, সেখানে তো অবশ্যই আমি নিজেকে দূরে থাকতে পারব না। আমাকে আসতেই হবে। স্বাভাবিকভাবেই মাঠেই ইনশাআল্লাহ থাকব আমি।’

তারেক রহমানের কাছে প্রশ্ন ছিল- নির্বাচনে অংশ নেবেন কি না সেই সিদ্ধান্ত তো আপনাকে নিতে হবে। জবাবে তিনি বলেন, না না সেটি তো নেব, কেন নেব না? অবশ্যই নেব।

আপনি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন তাহলে? এমন প্রশ্নে তারেক রহমান বলেন জ্বি…ইনশাআল্লাহ।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেন? এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘এটি আমি এখনো বলতে পারছি না। আমি মাত্রই বললাম যে উনার শারীরিক বা ফিজিক্যাল এবিলিটির ওপরে বিষয়টি কিছুটা হলেও নির্ভর করছে।’

ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে কতটা আস্থা আছে এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান বলেন, ‘বিএনপি প্রথম থেকেই বলে আসছিল যে যত দ্রুত নির্বাচনটি হবে, তত দ্রুত দেশের মধ্যে একটি স্থিতিশীলতা আসবে। দেখুন বাংলাদেশের মানুষ গত ১৭ বছর যাবৎ তাদের রাজনৈতিক অধিকার যেমন তাদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছিল, তাদেরকে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছিল।

যার ফলশ্রুতিতে আমরা সমাজে অনেকগুলো পর্যায়ক্রমিকভাবে স্পিলওভার ইফেক্ট বলতে যা বুঝায় অনেকগুলো খারাপ লক্ষণ দেখেছি। বেকার সমস্যা বেড়েছে, দরিদ্রতা বেড়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থা ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। চিকিৎসা ব্যবস্থা ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। কৃষি ব্যবস্থা ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়েছে।

‘আমরা সেজন্যই বলেছিলাম যে, যত দ্রুত নির্বাচন হবে যত দ্রুত দেশের মালিক যারা অর্থাৎ জনগণ তাদের কাছে যখন সেই অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হবে, তারা যখন সিদ্ধান্ত নেবে, অর্থাৎ দেশের মালিক যখন সিদ্ধান্ত নিবে দেশ কারা কীভাবে পরিচালিত করবে, তত দ্রুত দেশে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে। কারণ প্রকৃতভাবে নির্বাচিত একটি সরকার অবশ্যই জনগণের যে চাওয়া অর্থাৎ জনগণ যেভাবে চায় সেই বিষয়গুলোকে তারা এড্রেস করবে। ইয়েস, একটি নির্বাচন হলেই যে সব রাতারাতি সব ঠিক হয়ে যাবে তা না। সমস্যাগুলোকে যখন আপনি এড্রেস করবেন খুব স্বাভাবিকভাবেই ধীরে ধীরে সমস্যা কমতে শুরু করবে।

‘আমরা আনন্দিত যে দেরিতে হলেও সরকার জিনিসটি উপলব্ধি করতে পেরেছেন। আমরা ডিসেম্বরের ভিতরে চেয়েছিলাম। উনারা ফেব্রুয়ারির ভেতরে এখন নির্বাচনটি করতে চাইছেন। আমরা আস্থা রাখতে চাই যে সরকার সে ব্যাপারে সব রকম উদ্যোগ পর্যায়ক্রমিকভাবে গ্রহণ করবেন।’

বিএনপি এককভাবে নির্বাচন করবে না কি জোটবদ্ধভাবে আসন ভাগাভাগির মাধ্যমে নির্বাচন করবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘খুব ট্রিকি কোশ্চেন একটু। দেখুন আমরা প্রায় ৬৪টি রাজনৈতিক দল বিগত স্বৈরাচারের সময় যার যার অবস্থান থেকে রাজপথে আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করেছে। আমরা চেষ্টা করেছিলাম কমবেশি একসঙ্গে কাজ করার জন্য। এমনকি আমরা যে ৩১ দফা দিয়েছি রাষ্ট্র পুনর্গঠনের, এটি প্রথমে ২০১৬ সালে আমরা দিয়েছিলাম শুধু বিএনপির পক্ষ থেকে। পরবর্তীতে ভিশন টুয়েন্টি ছিল। যেটা পরবর্তীতে কিছুটা আরেকটু ডেভেলপ করে আমরা ২৭ দফা দিয়েছিলাম।

পরবর্তীতে আমরা আমাদের সঙ্গে যে রাজনৈতিক দলগুলো আছে তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে সবার মতামত নিয়ে আমরা ৩১ দফা দিয়েছি। কারণটি হচ্ছে যে দলগুলোকে আমরা পেয়েছি আমাদের সঙ্গে রাজপথের আন্দোলনে, আমরা চাই সকলকে সঙ্গে নিয়ে রাষ্ট্র পুনর্গঠন করতে। সকলের মতামতকে নিয়ে আমরা রাষ্ট্র পুনর্গঠন করতে চাই।

বিএনপির মনোনয়নে এবার ভিন্ন কী হবে

জামায়াতে ইসলামী কিছু দলকে নিয়ে বিএনপি বিরোধী একটি জোট করার ইঙ্গিত দিচ্ছে। সেটিকে আপনারা কি উদ্বেগ হিসেবে দেখেন কিনা এমন প্রশ্নে তারেক রহমান, দেখুন, কোনও দল বা সমষ্টিগতভাবে কোনও দল যদি বাংলাদেশের যে আইন আছে, বৈধ আইন আছে। বাংলাদেশের যে সংবিধান এখনো যেটি আছে এই সবকিছুর ভেতরে থেকে অর্থাৎ মানুষের সমর্থন-গ্রহণযোগ্যতা সবকিছুর ভেতরে থেকে যারা রাজনীতি করবে তারা করতেই পারে। এটাতে তো কোনও সমস্যা বা উদ্বেগের কোনও কারণ আমি দেখি না।

‘ইলেকশন হলে তো ইলেকশনে প্রতিযোগিতা থাকতেই পারে। প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকতেই পারে। এতে উদ্বেগের কি আছে? বিএনপি তো আগেও নির্বাচন করেছে। বিভিন্ন সময় বিএনপি নির্বাচন করেছে। কম্পিটিশন করেই বিএনপি নির্বাচন করেছে। প্রতিযোগিতা করেছে। উদ্বেগের কিছু নেই।

এমআর