মোস্তফা ইমরুল কায়েস
০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১০:৪০ পিএম
আর দুই দিন পরেই জাতীয় নির্বাচন। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ আসন ঢাকা-১৪। এই আসনে প্রার্থী হয়েছেন মোট ১৩ জন। তবে নৌকা-ট্রাক ছাড়া কারও দেখা মিলছে না রাজপথে। কিছু কিছু এলাকায় দেখা মিলছে ঈগল, লাঙ্গল, দালান, কেতলি ও বাঁশি প্রতীকের। তাও সীমাবদ্ধ পোস্টারে। খোঁজ নেই বাকি প্রার্থীদের। নেই পোস্টার, মিছিল-মিটিং কিংবা লিফলেট বিতরণেও।
বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গাবতলী, কল্যাণপুর, মিরপুর-১,২, মাজার রোড, বাঙলা কলেজ ও টেকনিক্যাল মোড় এলাকা ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শেষ দিন তুঙ্গে ছিল সরকার দলীয় নৌকার প্রার্থী মইনুল ইসলাম নিখিলের প্রচারণা। কোথাও কোথাও চোখে পড়েছে ট্রাকের। রাজপথে মিছিল-মিটিং কিংবা জনসভায় না থাকলেও পোস্টারে দেখা মিলেছে লাঙ্গলের। তাও অনেকটা নিষ্ক্রিয়। এর বাইরেও প্রার্থী আছেন দশজন। তবে অনেক খোঁজাখুঁজির পর গুটি কয়েক পোস্টারের দেখা মিলেছে, দালান, কেতলি, ট্রাক ও বাঁশি প্রতীকে প্রার্থী হওয়াদের। এছাড়া মাজার রোডে কয়েকটি পোস্টার চোখে পড়েছে, টেলিভিশন, রকেট ও কলম মার্কার। যদিও সংখ্যায় অতি নগণ্য।
সাহাবুদ্দিন একজন রিকশাচালক। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে রিকশাচালান তিনি। বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) মাজার রোডে দেখা হয় তার সঙ্গে। গল্প করতে করতে তিনি বলেন, লাঙ্গলের পোস্টার চোখে পড়েনি তার। আজ একবার মাইকিং শুনেছেন।
লাঙ্গলের নির্বাচনী প্রচারণা দেখেননি হোটেল কর্মী জামাল হোসেনও। গাবতলী এলাকায় এক যুগ ধরে কাজ করা এই হোটেলকর্মী বলেন, লাঙ্গলের পোস্টার চোখে পড়েনি তার। নেই মাঠের প্রচারণায়ও।
মাজার রোডের দিকে একটু এগোতেই চোখে পড়েছে নৌকা, ট্রাক, কেতলী, দালান আর বাঁশির পোস্টার। ফুটপাত লাগোয়া বিদ্যুতের খাম্বায় ঝুলছিল সেগুলো।
ফল বিক্রেতা মজিদুল বলেন, এই রোডে শুধু নৌকার পোস্টার। লাঙ্গল তো দেখিনি। তারা কি হাল ছেড়ে দিলো নাকি! তিনি আরও বলেন, মাজার রোডের মুখে তৈরী তোরণের নিচে কয়েকটা লাঙ্গলের পোস্টার কিছুদিন আগে লাগানো হয়েছিল। তবে সেগুলোও কেউ ছিঁড়ে ফেলেছে আবার কোনোটা বাতাসে পড়ে গেছে। তার চোখে লাঙ্গলের কোনো সমর্থক ও মিছিল চোখে পড়েনি।
নির্বাচনী প্রচারণার শেষ দিনে মাঠে নৌকার প্রার্থীর সমর্থকদের খুঁজে পাওয়া গেলেও খোঁজ নেই বাকিদের। গাবতলী, মাজার রোড ও বাঙলা কলেজ এলাকা থেকে শুরু করে পুরো মিরপুর-১ ও ২ এলাকায় নৌকার পোস্টার, সমর্থনে মিছিল, ভোট চাওয়ার দৃশ্য আর প্রচারণা দেখা গেছে। অন্যান্য আসনে ঈগলের জাঁকজমক অবস্থা দেখা গেলেও এখানে শোভা পাচ্ছে পোস্টারে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নৌকার মাইনুল হোসেন নিখিলকে চেনেন অনেকেই। কিছুটা জানাশোনা আছে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবিনা আকতার তুহিনও। তবে চেনেন না ঈগল প্রার্থী রাসেলকে। একতারা প্রতীকে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির প্রার্থী দাঁড়িয়েছেন সেটাও জানানেই কারও। তৃণমূল বিএনপির নাম শুনেছেন, কিন্তু সেই দলের প্রার্থী নাজমুল ইসলামকে (সোনালী আঁশ) দোখেননি কখনোই। এছাড়া সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট নামের একটি দল থেকে প্রার্থী হয়েছেন আসিফ হোসেন। ছড়ি মার্কার কথা শুনে অনেকে বলেছেন- তিনি কি নির্বাচিত হয়ে এই আসনে ছড়ি ঘোরাবেন!
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকার সংসদীয় আসনগুলোর মধ্যে ঢাকা-১৪ আসনেই প্রার্থীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। অন্য প্রার্থীরা হলেন, জাতীয় পার্টির আলমাস উদ্দিন (লাঙ্গল), জাসদের আবু হানিফ (মশাল),
বিএনএফের কামরুল ইসলাম (টেলিভিশন), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মাহবুব মোড়ল (আম),
বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমেদ (একতারা), লুৎফর রহমান (কেটলি), জেড আই রাসেল (ঈগল), এমরুল কায়েস খান (রকেট), মোহাম্মদ মহিবুল্লাহ (দালান), কাজী ফরিদুল হক (বাঁশি)।
এই আসনে এবার ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ১৮ হাজার ২১৭টি। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬৯টি, নারী ভোটার ২ লাখ ৪ হাজার ৭৪৪টি এবং এই আসনে চারজন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন।
এমআইকে/এইউ