রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

ভোটের হাওয়া

ঢাকা-১৪: আওয়ামী লীগে পুরোনোতেই ভরসা নাকি নতুন মুখ

কাজী রফিক
প্রকাশিত: ২০ অক্টোবর ২০২৩, ০৭:৩৪ এএম

শেয়ার করুন:

ঢাকা-১৪: আওয়ামী লীগে পুরোনোতেই ভরসা নাকি নতুন মুখ
কোলাজ: ঢাকা মেইল

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র তিন মাসের মতো বাকি। সময় যতই ঘনিয়ে আসছে রাজনীতির ময়দানে ততই উত্তেজনা বাড়ছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে অংশ নিতে নারাজ বিএনপি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের অবস্থান বিএনপির বিপরীত। ক্ষমতাসীনরা চায় সংবিধান অনুযায়ীই নির্বাচন করতে। এ ব্যাপারে তারা কোনো ছাড় দিতে রাজি নয়। দেশের প্রধান দুই দলের অনড় অবস্থানের কারণে নির্বাচন সময়মতো হবে কি না, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।

দেড় দশকের বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি সরকার পতনের আন্দোলন নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও আওয়ামী লীগে চলছে নির্বাচনের প্রস্তুতি। দলটির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা চষে বেড়াচ্ছেন মাঠে। চালাচ্ছেন জোর প্রচারণা।


বিজ্ঞাপন


কোন আসনে কে হবেন নৌকার প্রার্থী তা নিয়ে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে নানা আলোচনা। নির্বাচন ঘিরে দেশের অন্য সংসদীয় আসনের মতো ঢাকা-১৪ আসনেও জমে উঠছে নির্বাচনী হাওয়া। এরই মধ্যে প্রার্থী হতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর একাধিক নেতা সক্রিয় হয়েছেন। দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে তুলে ধরছেন নিজের অবস্থান।

আরও পড়ুন: সরকারের নয়, ২৮ অক্টোবর বিএনপির পতনযাত্রা শুরু হবে: তথ্যমন্ত্রী

২০২৪ সালের প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হতে পারে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আর তফসিল ঘোষণা হবে চলতি বছরের নভেম্বরে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে চায়। ইতোমধ্যে দলটি তাদের নির্বাচনী প্রচারণাও শুরু করেছে। দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতাকর্মীদের নিজ নিজ এলাকায় উন্নয়ন প্রচারের তাগিদ দিয়েছেন। সে হিসেবে কাজও করেছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা।

দেশের ৩০০টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ২০টি ঢাকায়। এর মধ্যে ঢাকা-১৪ জাতীয় সংসদের ১৮৭নং আসন। রাজধানীর আসনটি ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার কাউন্দিয়া ইউনিয়ন এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৭, ৮, ৯, ১০, ১১ ও ১২ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত।


বিজ্ঞাপন


২০০৮ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত টানা ১০ বছর আসনটির সংসদ সদস্য ছিলেন আসলামুল হক। ২০২১ সালের ৪ এপ্রিল রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে মৃত্যু হয় ৬০ বছর বয়সী আসলামুলের। তিনি ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হয়ে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে ২০১৪ সাল ও ২০১৮ সালেও জয় পান।

আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ না, রিজভীরা মুচলেকা দিয়ে পালিয়ে যাবেন: নাছিম

তার মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হলে ২০২১ সালের ২৪ জুন উপ-নির্বাচনে নৌকার টিকিট পেয়ে জয়ী হন আগা খান মিন্টু। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনেও মনোনয়নপ্রত্যাশী তিনি। তবে আগা খান আবার দলের মনোনয়ন পাবেন, নাকি নতুন কেউ আসবেন তা নিয়ে দলে চলছে নানা আলোচনা গুঞ্জন।

দলটির অনেক নেতাকর্মীর ভাষ্যমতে, ৭১ বছর বয়সী আগা খান দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকার টিকিট নাও পেতে পারেন। এবার নৌকার প্রার্থী হিসেবে নতুন মুখ দেখা যেতে পারে।

ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ আসনটিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে আছেন সাবেক সংসদ সদস্য, বিভিন্ন সংগঠনের শীর্ষ নেতা, স্থানীয় আওয়ামী লীগের হেভিওয়েটরা।

আলোচনায় যারা
ঢাকা-১৪ আসন থেকে গত কয়েকবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে আসছেন সাবিনা আক্তার তুহিন। মাঝে একবার সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। সাবেক যুব মহিলা লীগের এই নেত্রী দেড় বছর ছিলেন বহিষ্কার। নারী সংগঠনটির মহানগর উত্তরের সভাপতি পদ হারিয়ে এবার পেয়েছেন মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের নারী বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব। নির্বাচনের আগে আগে তার এই পদে ফেরাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। দলীয় নেতা-কর্মীদের একটি অংশ তার সঙ্গে থাকায় নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন পাওয়ার প্রত্যাশার কথা জানান তিনি।

জানতে চাইলে সাবিনা আক্তার তুহিন ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘ঢাকা-১৪ আসনে অনেকেই আছেন। মনোনয়ন যে কেউ চাইতে পারেন। তবে জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ কার এটাই হয়তো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সিদ্ধান্ত নেবেন বঙ্গবন্ধুকন্যা, জননেত্রী শেখ হাসিনা।’

আরও পড়ুন: হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে বিএনপি নেতারা আবোল-তাবোল বকছে

আসনটিতে নৌকার প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে নাম আছে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান লিখিলেও। তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি। 

আরও আলোচনায় আছেন সাবেক কাউন্সিলর ও অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল। মতামত জানতে তাকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও ডিপজল ফোন ধরেননি। মিরপুরের আসনটিতে আলোচনায় আরও আছেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি। 

আবার এ আসনের অন্তর্গত নেতাকর্মীরা মনে করেন, এলাকার বাইরের কেউ নয়। বরং ঢাকা-১৪ আসনের বাসিন্দাদের থেকেই উঠে আসুক তাদের প্রতিনিধি।

দলীয় মনোনয়নের বিষয়ে জানতে চাইলে বর্তমান সংসদ সদস্য আগা খান মিন্টু বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগ করি। দল যাকে মনোননয়ন দেবে তার পক্ষে কাজ করব। এমপি হওয়ার জন্য দল করি না। দলের আদর্শে বিশ্বাসী।’

আগা খান বলেন, ‘এর আগে ৩০ জন মনোনয়ন চাইছে। নেত্রী আমাকে যোগ্য মনে করছে, দিছে। এখন যদি অন্য কাউকে যোগ্য মনে করে, তাকে দেবে। আমার কিছু বলার নাই।’

আওয়ামী লীগের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘এমপি সাহেব এখন যিনি আছেন, ভালো মানুষ। তবে তার বয়স হয়েছে। মিরপুর একটা বড় জায়গা। এখানে এমপি সাহেবরা সক্রিয় না থাকতে পারলে বিএনপি সুযোগ নেবে। তাই এমন কাউকে এমপি করা দরকার যিনি মাঠে নিয়মিত সক্রিয় থাকবেন।’

কারই/এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর