images

জাতীয়

র-এর কিলিং গ্রুপের সঙ্গে বিডিআর বিদ্রোহের পরিকল্পনা, ছিলেন সোহেল তাজও

নিজস্ব প্রতিবেদক

০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:২৮ পিএম

তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ এবং শেখ সেলিমের উপস্থিতিতে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর ২৪ জনের একটি কিলার গ্রুপের সঙ্গে বৈঠক হয়। বৈঠকের পরে পুরো পরিকল্পনা সাজানো হয় এবং সমন্বয় করার জন্য তাপসের বাসায় বৈঠক হয়। ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের দায়িত্ব ছিল হত্যাকারীদেরসহ বিডিআর সৈনিকদের নিরাপদে পালানোর সুযোগ করে দেওয়ার। 

এসব তথ্য উঠে এসেছে বিডিআর বিদ্রোহের তদন্ত প্রতিবেদনে। গতকাল রোববার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।  

 

 

তদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বৈঠকে উপস্থিত ছিল জাহাঙ্গীর কবির নানক, মির্জা আজম, ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, শেখ সেলিম, লেদার লিটন এবং তোরাব আলী। সেখানে যখন জানানো হয় যে, অফিসারদের হত্যা করা হবে, তখন তোরাব আলী সেখানে আপত্তি করে। তিনি বলেন যে, অফিসারদের হত্যা করা যাবে না। তখন শেখ সেলিম তাকে মুরুব্বি সম্বোধন করে বলেন, ‘আপনার তো বয়স হয়েছে। আপনার আর এর মধ্যে থাকার দরকার নাই। আপনার ছেলে আমাদের সঙ্গে থাকলেই হবে।’ 

৪৪ রাইফেল ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক (সিও) কর্নেল শামস এই বিষয়গুলো জানতেন এবং তিনিও শেখ সেলিম এবং তাপসের সঙ্গে দেখা করার ব্যাপারে সৈনিকদের সহায়তা করেছেন। 

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বিজিবির (আগের নাম বিডিআর) সদর দফতরে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দলগতভাবে আওয়ামী লীগের সম্পৃক্ততা পেয়েছে জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন। তৎকালীন সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নূর তাপস এ ঘটনার মূল সমন্বয়কারী ছিলেন বলে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। পুরো ঘটনাটি সংঘটিত করার ক্ষেত্রে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গ্রিন সিগন্যাল ছিল বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ১১ মাস ধরে তদন্ত করে প্রতিবেদন তৈরি করে কমিশন। 

প্রতিবেদন দেওয়ার পর সন্ধ্যায় সায়েন্স ল্যাবরেটরির বিআরআইসিএম নতুন ভবনে সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান প্রতিবেদনের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে বলেন, ‘সেনাবাহিনীকে দুর্বল করতে ও ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে শেখ হাসিনাসহ ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা এবং পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। এ ছাড়া বিডিআর সদস্যদের মধ্যেও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ক্ষোভ ছিল বলেও কমিশনপ্রধান জানান।

পিলখানায় সেই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিডিআরের তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। সব মিলিয়ে তখন পিলখানায় নিহত হন ৭৪ জন। সেদিন পিলখানায় থাকা সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যরাও নৃশংসতার শিকার হন।

এম/ক.ম