images

জাতীয়

ঢাকা-১০: দল নয়, যোগ্য ও পরিচিত মুখে আস্থা রাখতে চান ভোটাররা

নিজস্ব প্রতিবেদক

২২ নভেম্বর ২০২৫, ১০:০১ এএম

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে বড় দুটি রাজনৈতিক দল বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী প্রার্থী তালিকা প্রায় চূড়ান্ত করেছে। বিএনপি ৩০০ আসনের মধ্যে ২৩৭টিতে প্রার্থী ঘোষণা করলেও কৌশলগত কারণে ঢাকা-১০ আসনটি এখনো শূন্য রেখেছে। অপরদিকে জামায়াত সব আসনেই প্রার্থী চূড়ান্ত করে প্রচারণায় নেমেছে। এমন পরিস্থিতিতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ আসন ঢাকা-১০-এর ভোটাররা বলছেন- এবার তারা দল নয়, বরং পরিচিত, যোগ্য এবং বিশ্বাসযোগ্য মুখকে অগ্রাধিকার দিতে চান।

বিএনপির কেন্দ্রীয় সূত্রের বরাতে জানা যায়, ঢাকা-১০ আসনে দলটির মনোনয়নের দৌড়ে আছেন ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম এবং বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল আলম। অন্যদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার আসনটি থেকে নির্বাচন করার গুঞ্জন রয়েছে।

6

যোগ্য মানুষকে চান ভোটাররা

ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ এই আসনটিতে প্রার্থী হিসেবে মো. জসীম উদ্দীন সরকারকে চূড়ান্ত করেছে জামায়াত। তার বিপরীতে বিএনপি কাকে মনোনয়ন দেবে এমন আলোচনা চলছে স্থানীয় চায়ের দোকানগুলোতেও। ভোটারদের অনেকে ধানের শীষ, আবার অনেকে দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিতে মনস্থির করেছেন বলে জানান।

গত বৃহস্পতিবার ধানমন্ডি, নিউমার্কেট, কলাবাগান ও হাজারীবাগ এলাকা ঘুরে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে তারা স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারেননি। এবার ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পেয়ে তারা যথেষ্ট আশাবাদী। অনেকে বলছেন-তারা ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে যোগ্যতা, সমাজে গ্রহণযোগ্যতা ও চেনা পরিচিতি-এই তিন মানদণ্ড দেখে সিদ্ধান্ত নিতে চান।

ব্যবসায়ী মো. আবদুল হামিদ প্রতিদিন সকালে ধানমন্ডি লেকে হাঁটতে যান। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় এবারের নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম সেরা হবে। কারণ, গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ১৫ বছরের এক স্বৈরশাসকের পতন ঘটেছে। নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথ নির্ধারণ হবে এই ভোটের মাধ্যমে।’
কেমন প্রার্থী চান, জানতে চাইলে আবদুল হামিদ ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘প্রথমে দেখব প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা। তারপর দেখব, জনগণের জন্য তিনি আগে কী করেছেন, বিশেষ করে ৫ আগস্টের পর তার ভূমিকা কেমন ছিল। এসব বিবেচনায় নিয়ে ভোট দেব।’

7

জিগাতলার নতুন রাস্তার মোড়ের মুদি দোকানদার কামরুল হাসান। ভোটে প্রার্থী হিসাবে কাকে পছন্দ জানতে চাইলে ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, ‘আমার কোনো পছন্দ নাই। তবে আমি চাইব পরিচিত কাউকে ভোট দিতে। যাতে বিপদে-আপদে আমার নির্বাচিত এমপির কাছে আমি সরাসরি যেতে পারি। কোনো দালালের মাধ্যমে যাতে যেতে না হয়।’

হাজারীবাগের বাসিন্দা মো.আশরাফুল আলম বলেন, ‘সৎ যোগ্য ও পরিশ্রমী প্রার্থীকে ভোট দেব। তিনি যে দলেরই হোক না কেন। তবে তিনি আমার কাছে পরিচিত হতে হবে।’

ঢাকা-১০ এ আসিফ মাহমুদের সম্ভাব্য প্রার্থিতা

আসনটিতে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় আছেন অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। সম্প্রতি তিনি নিজের মূল এলাকা কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) থেকে ধানমন্ডিতে ভোটার স্থানান্তর করেছেন। এরপর থেকেই জোরালো হয়েছে তার মাঠে নামার গুঞ্জন।

8

জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সামনের সারির নেতাদের একজন ছিলেন আসিফ মাহমুদ। ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি এবং ৫ আগস্টের অভ্যুত্থান দিনের ঘোষণার মাধ্যমে তিনি আলোচনায় আসেন। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে জায়গা পান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করা আসিফ ছাত্র অধিকার পরিষদে রাজনীতি শুরু করেন। পরে গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির অন্যতম উদ্যোক্তা হন। বর্তমানে তিনি স্থানীয় সরকার ও যুব–ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে পলিসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্স বিষয়ে স্নাতকোত্তর অধ্যয়ন করছেন।

এমএইচএইচ/এমআর