images

জাতীয়

মাথায় হাতুড়ির আঘাতে অচল গাড়িচালক রফিকের জীবন

কাজী রফিক

৩০ আগস্ট ২০২৪, ০৭:৪৭ পিএম

গাড়িচালক রফিকুল ইসলাম। বাড়ি টাঙ্গাইলের সখিপুরে৷ ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দুই দিন আগে হামলার শিকার হন তিনি। সেই থেকে হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন রফিকুল।

রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রফিকুল ইসলাম। মাথার বাঁ পাশে হাতুড়ির আঘাত৷ তীব্র যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালটির ৪২১নং ওয়ার্ডের ৫৫নং বেডে শুয়ে আছেন তিনি।

রফিকুলের দেখাশোনা করছেন তার ছোট ভাই মো. শরিফ৷ ঢাকা মেইলের সঙ্গে আলাপকালে ঘটনার বর্ণনা দেন শরিফ৷ বলেন, '৩ (আগস্ট) তারিখের ঘটনা। ভাই (রফিকুল ইসলাম) গাড়ি নিয়ে আসতেছিল৷ তখন রাস্তায় ঝামেলা চলতেছিল। ভাইর গাড়িতে হামলা করে৷ তার মাথায় হাতুড় দিয়ে বাড়ি দেয়৷'

শরিফ বলেন, 'অবস্থা খুব খারাপ ছিল। এখন মোটামুটি ভালো আছে৷ প্রচণ্ড ব্যথা হয়৷ নড়তে পারে না৷ কথা বলতেও সমস্যা হয়৷'

পাশেই বিছানায় শুয়ে থাকা রফিকুল ইসলাম বলে ওঠেন, 'আমাকে আওয়ামী লীগের লোকজন মারছে।'

রফিকুলের ভাই শরিফ জানান, পরিবারের এক মাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি রফিকুল ইসলাম৷ প্রাইভেটকারের চালক হিসেবে ১৫ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করতেন তিনি। সেই টাকায় চলতো সংসার৷ শরিফের পড়াশোনাও চালাতেন তিনি।

আরও পড়ুন

মাথায় গুলি, ক্ষণে ক্ষণে স্মৃতি হারিয়ে ফেলেন জাকির

সাড়ে তিনশ গুলি গায়ে নিয়ে কাতরাচ্ছেন মুফতি ফিরোজ

হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকা রফিকুল ইসলাম চলতি মাসে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় জুটবে না বেতন।

এদিকে বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) দুপুর পর্যন্ত শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪৫ জন রোগী ভর্তি আছেন, যারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আহত হয়েছেন।

Rafiq2

হাসপাতালটির ৪২১নং ওয়ার্ডের ওয়ার্ড বয় মো. রওশনের দেওয়া তথ্য মতে, তার ওয়ার্ডের ১৬ থেকে ৫৫নং বেডে (৪০ জন) সবাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত রোগী। একই ওয়ার্ডের অতিরিক্ত ১২নং বেডেও আন্দোলনে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন একজন। হাসপাতালের পোস্ট অপারেটিভ বিভাগে দুই দিন আগেও আন্দোলনে আহত রোগী ছিলেন চারজন। বর্তমানে সেখানে রয়েছেন একজন। এছাড়া ৫২৬নং ওয়ার্ডের ১১নং বেডে একজন এবং ১৩/এ কেবিনে একজন রোগী ভর্তি আছেন।

আরও পড়ুন

হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন গুলিবিদ্ধ সাগর, দুশ্চিন্তা পরিবার নিয়ে

অল্পের জন্য প্রাণ রক্ষা, হাসপাতালের বিছানায় দিন কাটছে মামুনের

হাসপাতালটির আন্তঃবিভাগ ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি ওয়ার্ডেই স্বাভাবিকসংখ্যক রোগী আছেন। চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম। তবে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত রোগীদের বেশির ভাগই হাসপাতালের চতুর্থ তলার ৪২১নং ওয়ার্ডে।

রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আন্দোলন চলাকালে এবং সরকার পতনের পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীদের ঠিকভাবে সেবা দেননি। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর হাসপাতালটি আসেন শিক্ষার্থীরা৷ এরপর থেকে শুরু হয় রোগীর যত্ন নেওয়া। অনেকেই আবার উন্নত চিকিৎসার জন্য যাচ্ছেন অন্যান্য হাসপাতালে৷

কারই/জেবি