নিজস্ব প্রতিবেদক
১৩ জানুয়ারি ২০২৪, ০২:০৪ পিএম
বিপদ-আপদ ও ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সমবায় সমিতিতে টাকা রাখতেন মোল্লাবাড়ি বস্তিবাসী। তবে গতরাতের ভয়াবহ আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে বস্তিবাসীর জমানো টাকা। ১০৭ জন সদস্যের সকলের টাকা ও জমা বই পুড়ে ছাই হয়েছে বস্তির সাথে। এত মানুষের লাখ লাখ টাকার কি জবাব দেবেন সেই ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন সমিতির ম্যানেজার মো. সোলিম মিয়া।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পাশে আগুনে পুড়ে যাওয়া মোল্লাবাড়ি বস্তিতে সরেজমিনে এমন চিত্র দেখা যায়।
সোলিম মিয়া বলেন, আমার সব শেষ। ঘর-জিনিসপত্র, ১০৭ জনের সমিতির টাকা। আমার মাথায় কিছু ধরতাছে না। এক মাসের কালেকশনের ৫ লাখ টাকা আলাদা ছিল। আর বাকিটা হিসাব ছাড়া। সব মিলিয়ে কত হবে আমি জানি না। একেকজনের ৪০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকাও আছে। আমি এত মানুষের টাকা কোথা থেকে দেবো? মরণ হলেও ভালো ছিলো।
সোলিম মিয়াকে ঘিরে জটলা পাকিয়ে থাকা মানুষের চোখে শঙ্কা। আগুনে ঘর-বাড়ি হারানোর পাশাপাশি হারিয়েছেন জমানো টাকাও। তবে টাকার জন্য চাপ নয়, বরং সোলিম মিয়াকে সান্তনা দিতে দেখা গেছে তাদের। তবে সব সদস্যরা এটি করবেন কিনা তা নিয়েও শঙ্কা রয়েছে তাদের।
তাদেরই একজন সোলিম মিয়ার প্রতিবেশী ও বন্ধু মূসা মিয়া। ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, ভাই আমাদের সমিতির ম্যানেজার। আমাদের সবার টাকা ভাইয়ের কাছে থাকে। আমরা প্রতি সপ্তাহে বা দিনে ভাইয়ের কাছে টাকা জমা দেই। নাম অনুযায়ী সপ্তাহে বা দিনে টাকা জমা দেই। কেউ দুইশো, কেউ পাঁচশো করে টাকা জমা দেই। সমিতির ম্যানেজার ছিলো। আমরা সবাই প্রায় দশ বছর যাবত ভাইয়ের সাথে সিমিতি করি। প্রতি বছরের প্রথমদিন আমরা সমিতি ভাঙি। এই বছরের প্রথমদিন আমরা সমিতি ভাঙছি। এরপর আবার নতুন করে টাকা জমা দিচ্ছি।
তিনি বলেন, বই টাকা সব পুড়ে গেছে। এই টাকাগুলো সে সবাইকে কেমনে দেবে আমরা সেটাই ভাবছি। পুরো মোল্লাবাড়ির সবার ব্যবসা ও কামের টাকা।
অপর এক ব্যক্তি বলেন, এখন ভাইয়েরও তো কিছু নাই। আমাদের মতো ভাইও কিছু নিয়ে বের হতে পারেনি। আমাদের তো শুধু নিজের টাকা পুড়ছে। ভাইয়ের পরের টাকাও পুড়ে গেছে।
কেউ দাবি করছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন তো কেউ দাবি করছে না। এ অবস্থায় কেমনে কি বলবে। আজকে হয়তো কেউ দাবি করছে না, কয়েকদিন পর তো করবে। মাছ বাজারের কিছু সদস্য আছে। আমরা না করলেও, তারা তো দাবি করবে। আমরা তো নিজের চোখে দেখছি। আমরা আর কেমনে দাবি করব। কিন্তু মাছ বাজারের সদস্যরা তো আর নিজের চোখে দেখেনি।
এমএইচ/এমএইচএম