লাইফস্টাইল ডেস্ক
০১ জুন ২০২৫, ১২:৫০ পিএম
সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ। কোনো একটা কাজ করছেন। হঠাৎ করেই শুরু হলো হাত কাঁপা। কম্পনের পরিমাণ এমন যে কোনো কাজ করাই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ছে। বাধ্য হয়ে তাই চুপচাপ বসে থাকার বিকল্প নেই। হাত কাঁপার এমন সমস্যায় ভোগেন অনেকেই। কিন্তু কেন এমন হয়? এর থেকে প্রতিকারের উপায়ই বা কী?
অকারণে হাত কাঁপার সমস্যাকে চিকিৎসার পরিভাষায় বলে ট্রেমর। এটি একটি অস্বস্তিকর ও বিরক্তিকর সমস্যা। হঠাৎ করে হাত কাঁপলে লিখতে, জামার বোতাম লাগাতে কিংবা তরকারি নাড়তে সমস্যা হয়। হাতের মাংসপেশির অনিয়ন্ত্রিত কম্পনের ফলেই হাত কাঁপে।

হাত কাঁপার অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে, যেমন- মানসিক চাপ, উদ্বেগ, কিছু রোগের লক্ষণ, ভিটামিনের অভাব ইত্যাদি। চলুন এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাক-
১. মানসিক চাপ ও উদ্বেগ: মানসিক চাপ, উদ্বেগ, বা দুশ্চিন্তার কারণে অনেকসময় হাত কাঁপতে পারে।

২. পারকিনসন রোগ: এই রোগে হাত কাঁপা একটি সাধারণ লক্ষণ। এটি একটি স্নায়বিক রোগ, যা ধীরে ধীরে মস্তিষ্কের কোষগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং নড়াচড়ার ওপর প্রভাব ফেলে। এই রোগের প্রধান লক্ষণগুলো হলো- কাঁপুনি, গতি কমে যাওয়া, শরীরের কঠোরতা এবং ভারসাম্য রক্ষার সমস্যা। সাধারণত বৃদ্ধদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়।
৩. শারীরিক রোগ: কিছু কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে হাত কাঁপে। থাইরয়েড সমস্যা, ডায়াবেটিস, লিভার বা কিডনির সমস্যা, ভিটামিনের অভাব ইত্যাদি হাত কাঁপার কারণ হতে পারে।

৪. ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: কিছু ওষুধ, যেমন- স্টেরয়েড, অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট বা থাইরয়েড হরমোন, হাত কাঁপার কারণ হতে পারে।
৫. ধূমপান ও মদ্যপান: ধূমপান ও মদ্যপানের অভ্যাস থাকলে হাত কাঁপার সমস্যা থাকতে পারে।

৬. ঘুমের অভাব: অনেকক্ষেত্রে হাত কাঁপা সমস্যার সঙ্গে ঘুমের সম্পর্ক পাওয়া যায়। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৭. ভিটামিনের অভাব: ভিটামিনের ঘাটতির কারণে হাত কাঁপতে পারে। বিশেষত শরীরে ম্যাগনেসিয়াম বা থায়ামিনের অভাব হলে হাত কাঁপার সমস্যা হতে পারে।

১. মানসিক চাপ কমানো: যোগ ব্যায়াম, ধ্যান বা অন্য কোনো মানসিক চাপ কমানোর কৌশল ব্যবহার করতে পারেন। মানসিক চাপ কম থাকলে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
আরও পড়ুন-
২. নিয়মিত বিশ্রাম: পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া জরুরি। কারণ কাজের চাপ ও ঘুমের অভাবও হাত কাঁপার কারণ হতে পারে।

৩. ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ: ধূমপান ও মদ্যপানের অভ্যাস হাত কাঁপার সমস্যা বাড়তে পারে। তাই এসব অভ্যাস ত্যাগ করা উচিত।
৪. শারীরিক কার্যকলাপ: নিয়মিত ব্যায়াম ও শারীরিক কার্যকলাপের মাধ্যমে শরীরকে সতেজ রাখার চেষ্টা করুন। এতে হাত কাঁপার সমস্যা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

৫. বিশেষজ্ঞের পরামর্শ: হাত কাঁপার সমস্যা গুরুতর হলে মোটেও অবহেলা করবেন না। দ্রুত একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। তিনি সমস্যাটির কারণ নির্ণয় করে সঠিক চিকিৎসা দিতে পারবেন।
৬. অন্যান্য উপায়: কিছু ক্ষেত্রে, হাত কাঁপার সমস্যা কমাতে ভর ব্যবহার, কবজিতে স্ট্র্যাপ পরা বা চাপমুক্ত বলের ব্যায়ামও করতে পারেন। তবে তার আগে একজন ফিজিও থেরাপিস্টের পরামর্শ নিয়ে নিন।
এনএম