লাইফস্টাইল ডেস্ক
১৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:০৭ পিএম
‘হলুদ গাঁদার ফুল, রাঙা পলাশ ফুল এনে দে এনে দে নইলে রাঁধব না, বাঁধব না চুল’—অভিমানী কথামালার এই নজরুলগীতি হয়তো শুনেছেন অনেকে। শীতকালে এই ফুল ফোটে বেশি। অতিপরিচিত একটি ফুল গাঁদা। অনেকে একে গন্ধা/গেন্ধা নামেও চেনেন।
কেবল বাগানের শোভা বাড়াতেই নয়, হলুদের কণে সাজাতে বহু যুগ থেকেই এই ফুলের ব্যবহার দেখা যায়। স্টেজ সাজাতে কিংবা অতিথিকে বরণ করতে গাঁদা ফুলের পাপড়ি ছড়ানোর অলিখিত নিয়মও বেশ পুরনো।

গাঁদা ফুলের বিভিন্ন জাত ও রঙ থাকলেও আমাদের দেশে উজ্জ্বল হলুদ আর গাঢ় কমলা রঙ বেশি লক্ষ্য করা যায়। বিভিন্ন উৎসব-অনুষ্ঠান, পূজা-পার্বণ ও গৃহসজ্জায় এর ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। জানলে অবাক হবেন, কেবল সাজসজ্জা নয়, এই ফুলটির বেশ কিছু উপকারিতা এবং ঔষধি গুণও রয়েছে।
আরও পড়ুন- অবহেলিত এই পাতার এত উপকারিতা!
বাংলাদেশে প্রধানত দুই ধরনের গাঁদা পাওয়া যায়। আফ্রিকান গাঁদা আর ফরাসি গাঁদা।

আফ্রিকান গাঁদা : এই শ্রেণীর গাঁদা হলুদ রঙের হয়। গাছের আকৃতি বেশ বড়। এই গাঁদার উল্লেখযোগ্য জাতসমূহ- ইনকা, গিনি গোল্ড, ইয়েলা সুপ্রিম, গোল্ডস্মিথ, ম্যান ইন দি মুন, ইত্যাদি।
আরও পড়ুন- হুরহুরে ফুলে ফুরফুরে মন
ফরাসি গাঁদা : এই শ্রেণীর গাঁদা কমলা হলুদ হয়ে থাকে। এদের রক্তগাঁদাও বলা হয়। গাছ ক্ষুদ্রাকৃতির। পাপড়ির গোড়ায় কালো ছোপ থাকে। এর উল্লেখযোগ্য জাতসমূহ- মেরিয়েটা, হারমনি, লিজন অব অনার, ইত্যাদি।

এছাড়াও সাদা গাঁদা, জাম্বো গাঁদা, হাইব্রিড এবং রক্ত বা চাইনিজ গাঁদার চাষ হয়ে থাকে। এবার চলুন গাঁদার কিছু উপকারিতা জানা যাক-
সুগন্ধি তৈরি
গাঁদা ফুলের অপরুপ সুগন্ধ রয়েছে। তাই এই ফুলের নির্যাস থেকে বিভিন্ন ধরনের সুগন্ধি তৈরি হয়।

ক্যানসার প্রতিরোধ
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ গাঁদা ফুলে আছে ফ্যাভনয়েড নামক উপাদান। এই উপাদান মানবদেহের ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি প্রতিহত করতে সক্ষম।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
গাঁদা ফুলের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। এটি শরীরকে টিউমার থেকে রক্ষা করে।

রক্তক্ষরণ বন্ধ
শরীরের কোথাও কেটে গেলে গাঁদার পাতা পিষে বা থেঁতলে লাগালে রক্ত পড়া বন্ধ হয়। দ্রুত ক্ষত সারাতে সাহায্য করে এটি।
আরও পড়ুন- সাদা ফুল রাতে ফোটে কেন?
ত্বকের জন্য উপকারি
নিয়মিত গাঁদা ফুলের চা পান করলে মুখের ব্রণ দূর হয়। এটি ত্বক মসৃণ করতে সাহায্য করে।

শারীরিক সমস্যা সমাধান
গাঁদা ফুল হজম শক্তি বাড়ায়। এটি হাড়ের ক্ষয় রোধ করে, আর্থাইটিসের সমস্যা কমায়। গাঁদা ফুলের চা খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হয়।
আরও পড়ুন- ফুলের নাম ‘নাগচাঁপা’
খুশকি দূর
গাঁদা ফুল বেটে নারিকেল তেলের সাথে মিশিয়ে মাথায় ১০/১৫ দিন লাগালে খুশকি দূর হয়। এটি চুল কালো করতে সাহায্য করে।

মুখের দুর্গন্ধ দূর
গাঁদা ফুল শুকিয়ে পুড়ে ছাই বানিয়ে, সেই ছাই দিয়ে নিয়মিত দাঁত মাজলে দাঁতের গোড়া শক্ত হয়। এটি মুখের দুর্গন্ধ দূর করে। মুখের ঘা সারায়।
এনএম