লাইফস্টাইল ডেস্ক
০৪ অক্টোবর ২০২৩, ০৪:২২ পিএম
স্তন ক্যানসার প্রাণঘাতী হলেও রোগটি নিয়ে অসচেতন বেশিরভাগ মানুষ। এই রোগে নারীদের মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। সাধারণত ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে এই ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। তবে বর্তমানে ১৫ থেকে ৩৯ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে।
এই ক্যানসার প্রতিরোধ করা যায় না এ কথা ঠিক। তবে এর কারণে মৃত্যু রোধ করা যায়। স্তন ক্যানসারের কারণে মৃত্যু রোধ করার উপায় হলো প্রাথমিক পর্যায়ে এটি শনাক্ত করা এবং সঠিক চিকিৎসা নেওয়া।
স্তন ক্যানসারের লক্ষণ
প্রাথমিক পর্যায়ে স্তন ক্যানসারের যে সাধারণ লক্ষণগুলো দেখা যায়, সেগুলো হলো-
এই লক্ষণগুলোর উপস্থিতি কেবল আপনার ক্যানসার আছে বলেই নয় অন্যান্য কারণেও হতে পারে। তাই উপরের একটি বা একাধিক লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
কীভাবে বুঝবেন স্তন ক্যানসার হয়েছে কি না?
অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, কেবল লাম্প থাকলেই কি তা ভয়ের কারণ? না কি এর পেছনে লুকিয়ে থাকে আরও অনেক উপসর্গ? অনেকের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার লক্ষণ ছাড়াই শরীরে বাসা বাঁধতে পারে এই মারণরোগ। চিকিৎসার ভাষায় যাকে মেটাস্ট্যাটিক ব্রেস্ট ক্যানসার বলে। এই ধরনের ক্যানসার সাধারণত উৎপত্তিস্থল থেকে ধীরে ধীরে শরীরের বাকি অংশে ছড়াতে শুরু করে। ক্যানসারের একেবারে শেষ পর্যায় রোগ ধরা পড়ে।
এক্স-রে ম্যামোগ্রাফি, স্তনের আল্ট্রাসাউন্ড, এমআরআই, সিটি এবং পিইটি স্ক্যানের মাধ্যমে স্তন ক্যানসার নির্ণয় করা সম্ভব। ২ থেকে ৫ বছর ধরে শনাক্ত না-ও হতে পারে। এ কারণে উপসর্গহীন ক্যানসারের ক্ষেত্রে স্ক্রিনিংয়ের গুরুত্ব অনেক।
লাম্প বা চাকাভাব
অনেক সময়ে স্তন ক্যানসারের লক্ষণ বাহুমূল বা কলার বোনের তলাতেও দেখা যায়। এই রোগটি হলে স্তনবৃন্তের আশাপাশে এক ধরনের লাম্পের উপস্থিতি দেখা যায়। যেগুলো টিপলে শক্ত লাগে এবং অবস্থান অপরিবর্তিত থাকে। এমন কিছু দেখলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
আরও পড়ুন- স্তন ক্যানসার কেন হয়?
চুলকানি
স্তনে কোনোরকম র্যাশ নেই, কিন্তু চুলকানির মতো অনুভূতি হচ্ছে, এমনটাও কিন্তু ক্যানসারের লক্ষণ। স্তনে টিউমার থাকলে তা আশপাশের টিস্যুগুলির উপর চাপ সৃষ্টি করে। এতে স্তনে ফোলাভাব দেখা যায়। সঙ্গে দেখা দিতে পারে লালচে ভাবও।
ব্যথা লাগা
স্তনে হাত দিলে বা চাপ দিলে ব্যথা লাগা, কাঁধ ও ঘাড়ে ব্যথা হওয়াও ব্রেস্ট ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। কারণ, স্তন থেকে দ্রুত গতিতে এই ক্যানসার শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
আকারে বিকৃতি
স্তনের আকার বিকৃত হলে কখনোই অবহেলা করবেন না। অন্তর্বাস পরে থাকাকালীন যদি কোনো ঘর্ষণ অনুভূত হয়, বিছানায় পাশ ফিরে শুয়ে থাকলে যদি স্তনে ব্যথা লাগে তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
আরও পড়ুন- স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি কমায় যেসব খাবার
তরল পদার্থ নিঃসরণ
স্তন্যপান করাচ্ছেন না তবুও স্তনবৃন্ত থেকে অল্প অল্প দুধের মতো তরল পদার্থ নিঃসরণ হচ্ছে, এমনটা দেখলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে যান। স্তন ক্যানসারের অন্যতম বড় লক্ষণ এটি।
স্তনবৃন্ত স্পর্শে অনুভূতি না লাগা
দেহের অন্যতম সংবেদনশীল অংশ স্তনবৃন্ত। যদি এই অংশটি স্পর্শ করলেও তেমন কোনো অনুভূতি না হয় কিংবা একেবারের অনুভূতিহীন লাগে তবে স্তন ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা অত্যধিক।
খসখসে লাগা
স্তনের উপরের ত্বক খসখসে হয়ে যাওয়া ক্যানসারের প্রথম পর্যায়ের লক্ষণ। এমনটা হলেও সাবধান হোন।
স্তন ক্যানসারের লক্ষণগুলো জানুন। এ ব্যাপারে সচেতন হোন। সঠিক সময়ে চিকিৎসা করালে স্তন ক্যানসার নিরাময় সম্ভব।
তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া, সেন্টারস ফর ডিজিস কনট্রল অ্যান্ড প্রিভেনশন, মায়ো ক্লিনিক
এনএম