চাকরি ডেস্ক
২০ জুন ২০২৫, ১০:১৮ এএম
চাকরি পাওয়ার প্রথম ধাপই হচ্ছে ইন্টারভিউ। এই ধাপে নিজের যোগ্যতা, ব্যক্তিত্ব এবং প্রস্তুতিকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারলেই আপনি এগিয়ে যাবেন বাকিদের চেয়ে। অনেক সময় দেখা যায়, একই যোগ্যতার একাধিক প্রার্থী ইন্টারভিউতে অংশ নেন, কিন্তু চাকরি পান একজনই। কেননা, তিনি নিজেকে একটু বেশি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে, প্রফেশনালি এবং প্রভাবশালীভাবে উপস্থাপন করতে পেরেছেন। নিচে এমন ১০টি কার্যকর কৌশল তুলে ধরা হলো, যা আপনাকে ইন্টারভিউতে সেরা করে তুলতে সহায়তা করবে।
প্রথম ইমপ্রেশন তৈরি হয় আপনার পোশাকে। ফর্মাল ও পরিচ্ছন্ন পোশাক পরুন, যেন আপনি পেশাদার মনে হন। পুরুষদের জন্য সাধারণত হালকা রঙের শার্ট, গাঢ় রঙের প্যান্ট ও ফর্মাল জুতা মানানসই। নারীদের জন্য সজ্জিত ও মার্জিত পোশাক উপযোগী। অতিরিক্ত গয়না বা পারফিউম ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
ইন্টারভিউয়ের ১০ থেকে ১৫ মিনিট আগে পৌঁছান। দেরিতে পৌঁছানো আপনার সময়জ্ঞান ও আগ্রহের অভাব প্রকাশ করে। আগে পৌঁছালে আপনি মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে পারবেন এবং জায়গাটির পরিবেশ বুঝে নিতে সুবিধা হবে।

চোখে চোখ রেখে কথা বললে আত্মবিশ্বাস প্রকাশ পায়। এটি ইন্টারভিউয়ারকে বোঝায় যে আপনি সততার সঙ্গে কথা বলছেন এবং চাপ সামলাতে সক্ষম। চোখ এড়িয়ে কথা বললে আপনি অপ্রস্তুত বা নার্ভাস বলে মনে হতে পারেন।
আপনার অঙ্গভঙ্গি, হাত মেলানোর ধরন, বসার ভঙ্গি সবকিছুই আপনার আত্মবিশ্বাসের প্রতিফলন। সোজা হয়ে বসুন, মাথা উঁচু রাখুন, হাত-পা না নেড়ে স্থির থাকুন এবং অযথা মুখে বা পোশাকে হাত না দিন।
‘নিজের সম্পর্কে বলুন’, ‘আপনার দুর্বলতা কী?’, ‘৫ বছর পর নিজেকে কোথায় দেখেন?’—এ ধরনের প্রশ্ন প্রায় সব ইন্টারভিউতেই করা হয়। এসব প্রশ্নের উত্তর আগে থেকেই গুছিয়ে রাখলে আপনি চটজলদি ও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে উত্তর দিতে পারবেন।

যে প্রতিষ্ঠানে ইন্টারভিউ দিচ্ছেন, তাদের সম্পর্কে আগেই রিসার্চ করুন—তাদের পণ্য, সেবা, লক্ষ্য বা সাম্প্রতিক কোনো প্রকল্প। ইন্টারভিউতে এই জ্ঞান দেখাতে পারলে প্রমাণ হবে আপনি আগ্রহী এবং প্রস্তুত।
ইন্টারভিউতে এমনভাবে আপনার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা তুলে ধরুন যেন প্রতিষ্ঠান বুঝতে পারে, আপনি কেবল যোগ্যই নন, বরং ওই পদের জন্য আদর্শ ব্যক্তি। উদাহরণসহ নিজের সফলতা তুলে ধরুন।
শেষের দিকে সাধারণত আপনাকে জিজ্ঞেস করা হয়, ‘আপনার কোনো প্রশ্ন আছে কি?’—এই সময় আপনি বুদ্ধিমানের মতো প্রতিষ্ঠান বা কাজ সংক্রান্ত প্রশ্ন করতে পারেন। এতে আপনার আগ্রহ ও সচেতনতা প্রকাশ পায়।
আগের অফিস বা বস নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করা, বা চাকরি না পাওয়ার হতাশা প্রকাশ করলে আপনার পেশাদারিত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। সবসময় ইতিবাচক মনোভাব বজায় রাখুন।

ইন্টারভিউ শেষ হলে ভদ্রভাবে ধন্যবাদ জানান। চাইলে ইমেইলে সংক্ষেপে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে একটি ফলোআপ নোট পাঠাতে পারেন। এটি আপনার পেশাদারিত্ব ও আন্তরিকতার পরিচয় দেয়।
আরও পড়ুন: আপনি যতই দক্ষ হোন, এসব ভুলে চাকরি হারাতে পারেন
ইন্টারভিউ হচ্ছে নিজেকে তুলে ধরার একটি সূক্ষ্ম শিল্প। শুধু আপনি কী জানেন তা নয়, কীভাবে নিজেকে উপস্থাপন করেন সেটাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। উপরের কৌশলগুলো অনুসরণ করলে আপনি ইন্টারভিউ বোর্ডে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে নিজেকে সেরা হিসেবে উপস্থাপন করতে পারবেন—যার সম্ভাব্য ফল, কাঙ্ক্ষিত চাকরিটি আপনার হাতেই তুলে আসবে।
এজেড