আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:২৪ পিএম
গত কয়েকদিনের মতো আজ বুধবারও ভারতের বেশ কয়েকটি জায়গায় বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়েছে দেশটির ক্ষমতাসীন দল বিজেপিসহ কয়েকটি উগ্র-হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। বিক্ষোভ হয়েছে ভারত বাংলাদেশের সীমান্ত চেকপোস্ট পেট্রাপোলে।
পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আগেই ঘোষণা করেছিলেন, বুধবার তারা সীমান্তে প্রতীকী প্রতিবাদ দেখাবেন। সেই অনুযায়ী পেট্রাপোলে হাজির হয়েছিলেন বিজেপি সমর্থকরা।
বাংলাদেশের ময়মনসিংহে এক হিন্দু যুবককে আগুনে জ্বালিয়ে হত্যার বিরুদ্ধে তারা স্লোগান যেমন দিয়েছেন, তেমনই বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুসের কুশপুত্তলিকাও পোড়ানো হয়।
বিজেপির স্থানীয় নেতাকর্মীরাই পেট্রাপোলের ওই বিক্ষোভে হাজির হয়েছিলেন। তবে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ অবশ্য সীমান্তের কিছুটা দূরেই আটকিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীদের।
আবার কলকাতা লাগোয়া হাওড়াতেও বিক্ষোভ করেছেন বিজেপির কর্মীরা। কলকাতার প্রতীক যে বিখ্যাত হাওড়া ব্রিজ তার আগেই পুলিশ ব্যারিকেড করে রেখেছিল বিজেপি কর্মীদের আটকাতে। সেই ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করা হয়। পরে বিজেপিকর্মীরা হাওড়া ব্রিজ অবরোধ করেন। তারাও বাংলাদেশে, তাদের কথায় হিন্দুদের ওপরে অত্যাচারের অভিযোগতুলে এর বিরুদ্ধে স্লোগান দেন।

অন্যদিকে ত্রিপুরা থেকে খবর পাওয়া গেছে যে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী নিয়ে আগরতলায় বিক্ষোভ করছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ।
এরআগে গতকাল মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) কলকাতায় বাংলাদেশের উপদূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, এভিবিপি, হিন্দু জাগরণ মঞ্চ-সহ সঙ্ঘ পরিবারের একাধিক সংগঠন। এসময় বিক্ষোভকরীরা ব্যারিকেড ভেঙে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হয়।
অন্যদিকে নয়াদিল্লির চানক্যপুরীতে অবস্থিত বাংলাদেশের হাইকমিশন অভিমুখে বিক্ষোভ করেছে কয়েকটি হিন্দুত্ববাদী দল। এসময় বিক্ষুব্ধরা ব্যারিকেড ভেঙে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় এবং ‘বাংলাদেশ মুর্দাবাদ’ স্লোগান দিতে দিতে কুশপুত্তলিকা পোড়ায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) ও বাজরং দলসহ হিন্দু সংগঠনগুলো। তবে বিক্ষোভকারীদের হাইকমিশন ভবন থেকে ৫০০ মিটার দূরে আটকে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ জানায় ঘটনাস্থলে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী কয়েক স্তরের ব্যারিকেড, পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
এরআগে গত শনি ও রোববার (২০ ও ২১ ডিসেম্বর) দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের পরপর দুদিনই হামলা চালানো হয়। এর মধ্যে রোববার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে প্রায় দুই শতাধিক দুষ্কৃতিকারী হাইকমিশনের প্রধান ফটকের সামনে জড়ো হয়ে বাংলাদেশবিরোধী নানা স্লোগান দিতে থাকে। একপর্যায়ে তারা সংঘবদ্ধভাবে হাইকমিশনে হামলা চালায়।
দুই দফা হামলার জেরে ভারতের দিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে দেওয়া সব ধরনের সেবা ও ভিসা কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ ধরনের সহিংস ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে হাইকমিশনে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তাহীনতা ও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
এমএইচআর