images

আন্তর্জাতিক

দুপুরে বাবরি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:০৮ এএম

ভারতের উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ৩৩ বছর পর পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙায় আজ (শনিবার) একই নামে মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। 

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুর্শিদাবাদে যেন কোনোভাবেই সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা না ছড়ায়, সে জন্য যা যা করা দরকার তা করতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্ট। 

সরকারকে বলা হয়েছে, এই সম্ভাব্য উত্তেজনা থামাতে এবং শান্তি বজায় রাখতে যা যা করা দরকার, তার সবই করতে হবে। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানায় ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস্।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই প্রেক্ষাপটে প্রশাসন নিরাপত্তার ব্যাপারে সম্পূর্ণভাবে সতর্ক। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত আদালতকে জানিয়েছেন, যে কোনো অশান্তি রোধে পর্যাপ্ত পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল রাজদীপ মজুমদার বলেছেন, সিআইএসএফের ১৯টি কোম্পানি ইতোমধ্যে এই অঞ্চলে উপস্থিত রয়েছে। 

কর্মকর্তাদের মতে, শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে র‌্যাফের ইউনিটসহ ৩৫০০ জনের একটি দল রেজিনগর এবং আশেপাশের অঞ্চলে মোতায়েন রয়েছে। ১২ নম্বর জাতীয় সড়কের সুরক্ষার জন্য বিএসএফের দুটি কোম্পানি প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি পার্থ সারথি সেনের ডিভিশন বেঞ্চ এই বিষয়ে দায়ের করা একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বলেছেন, রাজ্য সরকারকে তাদের অবস্থান অনুযায়ী কাজ করতে হবে।

মুর্শিদাবাদে আইনশৃঙ্খলা কঠোরভাবে বজায় রাখতে হবে এবং নাগরিকদের জীবন ও সম্পত্তির সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।

এদিকে নিরাপত্তাজনিত অবস্থার কথা বিবেচনা করে ইতোমধ্যে মুর্শিদাবাদে কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের এ অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। হুমায়ুন কবীরের এই কর্মসূচিকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। 

শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে হুমায়ুন বলেন, মূল ইভেন্টটি দুপুর ১২টায় শুরু হবে। দুই ঘণ্টা কোরআন পাঠ করা হবে। 

অনুষ্ঠানে কোনো বক্তৃতা থাকবে না, কোনো রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব থাকবে না, কোনো দলীয় পতাকা থাকবে না। আমি ২ হাজার স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে উপস্থিত থাকব। 

এই মসজিদ তৈরি করতে তিন বছর সময় লাগবে। অর্থ জোগাবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। একই সঙ্গে তিনি এ অনুষ্ঠান শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে রাজ্য পুলিশের সহযোগিতা কামনা করেন।

তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ পুরো ঘটনাটিকে ষড়যন্ত্র বলে অভিহিত করেছেন। তার অভিযোগ, রাজ্যের আসন্ন নির্বাচনের আগে বিরোধী দলগুলো তৃণমূলকে বদনাম করার চেষ্টা করছে। হাইকোর্টের নির্দেশের পর রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলো সতর্ক রয়েছে।

এদিকে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বসু বাংলার জনগণকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন এবং উস্কানিমূলক বক্তব্য ও গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। 

এছাড়া তিনি রাজভবনে একটি ‘অ্যাক্সেস পয়েন্ট সেল’ স্থাপন করার নির্দেশ দিয়েছেন। এর নেতৃত্ব দেবেন অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার এসকে পট্টনায়েক। কোনো অশান্তি হলে তার ওপর নজর রাখবে এই সেল।

জানা গেছে, ১৯৯২ সালের আজকের দিনেই অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলা হয়েছিল। এই ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টে মামলাও হয়। 

হুমায়ুনের এই মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠান হওয়ার আট মাস আগে ওয়াক্‌ফ (সংশোধনী) আইনের প্রতিবাদে এই মুর্শিদাবাদেই ছড়িয়ে পড়েছিল সাম্প্রদায়িক সহিংসতা।

-এমএমএস