আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১৭ জুন ২০২৫, ১০:১৫ এএম
ইরানের ওপর গত ১৩ জুনের প্রথম প্রহর থেকে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। রাজধানী তেহরানসহ দেশটির শতাধিক লক্ষ্যবস্তুতে ওই রাতে হামলা চালায় ইসরায়েল।
মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি করা এ অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে অপারেশন রাইজিং লায়ন বা জেগে ওঠা সিংহ।
হামলার মূল কারণ ছিল- পশ্চিমাদের ভাষায় ইরানের বিতর্কিত পারমাণবিক কর্মসূচির সক্ষমতা পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়া।
এদিকে ইরানিদের অবিলম্বে তেহরান খালি করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, সবাইকে এখনই তেহরান ত্যাগ করতে হবে।
তবে এই হুঁশিয়ারির পেছনে নির্দিষ্ট কোনো কারণ উল্লেখ করেননি তিনি। ট্রাম্পের এই হুঁশিয়ারি আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
পোস্টে ট্রাম্প আরও লেখেন, ইরান আমার প্রস্তাবিত চুক্তি মেনে নিলে আজকের প্রাণহানি এড়ানো যেত। এটা দুঃখজনক ও অনর্থক প্রাণহানি। পরিষ্কার করে বলছি—ইরান পারমাণবিক অস্ত্র গ্রহণ করতে পারে না। আমি বারবার এটা বলেছি!
এদিকে, গত শুক্রবার (১৩ জুন) থেকে পালটাপালটি হামলা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ইসরায়েল ইরানে একের পর এক বিমান হামলা চালাচ্ছে। জবাবে ইরানও ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালাচ্ছে।
ইসরায়েলি হামলার পাল্টা প্রতিক্রিয়া মধ্যপ্রাচ্যকে একটি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে- এমন আশঙ্কাই করেন বিশ্লেষকরা। তার মধ্যেই ইসরায়েলি হামলার জবাবে ‘ট্রু প্রমিস-৩’ নামের অভিযান শুরু করে ইরান।
শুক্রবারের হামলায় ইরানের প্রধান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র নাতানজ, দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র কারখানা, শীর্ষ কমান্ডার ও পরমাণু বিজ্ঞানীরা হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল বলে দাবি করেছে ইসরাইল।
এ হামলায় অন্তত ২০০টি যুদ্ধবিমান অংশ নেয় বলে জানায় দেশটির সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরাইল। ওইদিন ভোররাত থেকে একের পর এক বিমান হামলা প্রথমে ইরানের সামরিক নেতৃত্ব ও গোয়েন্দা কাঠামোতে আঘাত হানে।
এরপর ধারাবাহিক হামলায় ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্র এবং শেষে দেশটির বৃহত্তম ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র নাতানজে হামলা চালানো হয়।
নাতানজের আংশিক ভূ-উপরিভাগে হওয়ায় সরাসরি আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে ইসরায়েল। এছাড়াও হামলায় ইরানের শীর্ষস্থানীয় সামরিক কর্মকর্তা ও পরমাণু বিজ্ঞানীদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়। এতে দেশটির প্রধান তিন সামরিক কর্মকর্তাসহ বেশ কয়েকজন সামরিক ব্যক্তিত্ব নিহত হয়েছেন।
-এমএমএস