আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১২ মে ২০২৫, ১২:৫১ পিএম
গত ২২ এপ্রিল ভারত নিয়ন্ত্রীত কাশ্মীরের পহেলগামে একটি সন্ত্রাসী হামলায় ২৮ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন, যাদের অধিকাংশই ছিলেন পর্যটক। এই হামলার দায় স্বীকার করে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’, যা লস্কর-ই-তৈয়বার একটি শাখা হিসেবে পরিচিত। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে এবং গত ৭ মে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে একটি সামরিক অভিযান শুরু করে।
পাকিস্তান শাসিত কাশ্মীরের মুজাফ্ফরাবাদ ও কোটলি এবং পাকিস্তানের পাঞ্জাবের বাহাওয়ালপুরসহ মোট ছয়টি স্থানে হামলা করে ভারত। এই অভিযান চলাকালে নিয়ন্ত্রণ রেখা ও আন্তর্জাতিক সীমান্ত— উভয়দিকেই হামলা করা হয়।

সামরিক অভিযান
৭ মে ভারতীয় বিমান বাহিনী পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর এবং পাঞ্জাব প্রদেশে ১৪টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায়। এই হামলায় লক্ষ্যবস্তু ছিল জইশ-ই-মোহাম্মদ ও লস্কর-ই-তৈয়বার সন্ত্রাসী ঘাঁটিগুলো। ভারত দাবি করে, এই হামলাগুলো ‘নির্দিষ্ট, পরিমিত এবং উত্তেজনা বৃদ্ধি না করার উদ্দেশ্যে’ পরিচালিত হয়েছে।
এই হামলায় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখায় পাকিস্তান। এই হামলাকে ‘কাপুরুষোচিত’ বলে আখ্যায়িত করে এবং ১০ মে ‘অপারেশন বুনিয়ান আল-মারসুস’ নামে পাল্টা সামরিক অভিযান শুরু করে। এই অভিযানে পাকিস্তান ভারতের বিভিন্ন শহরে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যার মধ্যে দিল্লি, অমৃতসর ও রাজস্থানের কিছু অঞ্চল অন্তর্ভুক্ত ছিল।
ক্ষয়ক্ষতি ও মানবিক প্রভাব
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর খবর অনুযায়ী, ভারতীয় হামলায় পাকিস্তানের ৩১ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ৫ জন শিশু। এছাড়া মসজিদ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বেসামরিক স্থাপনায় ক্ষয়ক্ষতি হয়।
অন্যদিকে, পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে ১৫ জন ভারতীয় বেসামরিক নাগরিক নিহত হন বলে খবর এসেছে, যাদের মধ্যে ৪ জন শিশু। অধিকাংশ ক্ষয়ক্ষতি জম্মু ও কাশ্মীরের পুনছ জেলায় ঘটে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
পাকিস্তানের ওপর ভারতের এই হামলা যুদ্ধে রূপ নিলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এ নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস উভয়পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানান।
অন্যদিকে, চীন, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য ও কাতারসহ বিভিন্ন দেশ শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানায়।
অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব
এই সংঘাতের ফলে উভয় দেশের অর্থনীতি ও সমাজে ব্যাপক প্রভাব পড়ে। ভারতে ২৫টি বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়। পর্যটন ও বাণিজ্যের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
অন্যদিকে, পাকিস্তানে ৪৮ ঘণ্টার জন্য বিমান চলাচল বন্ধ থাকে। স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয় এবং বোর্ড পরীক্ষাসমূহ স্থগিত করা হয়।

সামরিক সক্ষমতা ও প্রযুক্তি
সামরিক সক্ষমতায় পাকিস্তানের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে ভারত। যদিও পারমানবিক ক্ষেত্রে আবার পাকিস্তান রয়েছে সুবিধাজনক অবস্থানে। এমন অবস্থায় দুই দেশের মধ্যে ঘটে যাওয়া সংঘাত একটি নতুন মাত্রা অর্জন করেছে, যেখানে উভয়পক্ষই আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সামরিক অভিযান পরিচালনা করেছে। এই সংঘর্ষের ফলে উভয় দেশের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
এই সংঘর্ষকে বিশ্বের প্রথম ‘ড্রোন যুদ্ধ’ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, যেখানে উভয়পক্ষই ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে। ভারত প্রথমবারের মতো এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করে পাকিস্তানের হামলা প্রতিহত করে।
আরও পড়ুন
পাকিস্তান দাবি করে, তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে, যার তিনটি ফ্রান্সের তৈরি রাফাল।
ভারত জানিয়েছিল, মঙ্গলবার দিবাগত রাতের হামলার মেয়াদ ছিল ২৫ মিনিট। স্থানীয় সময় ১টা ৫ মিনিটে হামলা শুরু হয়, শেষ হয় ১টা ৩০ মিনিটে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এত অল্প সময়ে একাধিক যুদ্ধবিমান হারানো ভারতের জন্য বিশাল ক্ষতি।
বুধবার (৭ মে) এক প্রতিবেদনে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন জানায়, একজন উচ্চপদস্থ ফরাসি গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভারতীয় বিমান বাহিনীর পরিচালিত একটি রাফাল যুদ্ধবিমান পাকিস্তান ভূপাতিত করেছে। এটি প্রথমবারের মতো একটি অত্যাধুনিক ফ্রান্স নির্মিত রাফাল যুদ্ধবিমান ভূপাতিতের ঘটনা।
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ভারত পাকিস্তান যুদ্ধের অবসান
১০ মে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের অবসান ঘটেছে। যুদ্ধ বিরতিকে পাকিস্তান ঐতিহাসিক বিজয় ধরে নিয়েছে। কৌশলগত পরিকল্পনা, আধুনিক সামরিক প্রযুক্তি এবং সেনাবাহিনীর দৃঢ় মনোবলের কারণে পাকিস্তান এ যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য অর্জন করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বিশ্ব রাজনীতি ও কূটনৈতিক মহলে পাকিস্তানের এই ‘সাফল্য’ নিয়ে আলোচনা চলছে।

জাতিসংঘের মহাসচিব এক বিবৃতিতে বলেন, ‘পাকিস্তান যে ধৈর্য, কৌশল ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে যুদ্ধ পরিচালনা করেছে, তা এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, তুরস্ক, এবং সৌদি আরবসহ অনেক দেশ পাকিস্তানের কৌশলের প্রশংসা করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও এই সংঘাত বন্ধের কারণে এসেছে অভিনন্দন বার্তা।
জনগণের উল্লাস
ভারতে সঙ্গে সংঘাত নিজেদের বিজয় হয়েছে দাবি করে দেশজুড়ে বিজয় উদযাপন করে পাকিস্তান। ইসলামাবাদ, করাচি, লাহোরসহ বিভিন্ন শহরে রাস্তায় রাস্তায় জনতা পতাকা হাতে নেমে আসে ও বিজয় মিছিল করে। দেশটির তরুণরা তাদের সেনাদের অভিনন্দন জানিয়ে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করে।
বিশ্লেষকদের মতামত
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এ যুদ্ধ কেবল সামরিক দিক থেকেই নয়, কূটনৈতিকভাবে পাকিস্তানের অবস্থানকে আরও মজবুত করেছে। যুদ্ধপরবর্তী শান্তি চুক্তির আলোচনায় পাকিস্তান এখন নেতৃত্বের আসনে।
এজেড/এমএইচটি