images

আন্তর্জাতিক

যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ভেটো দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করলো তুরস্ক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:০৩ পিএম

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ভেটো দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র সমালোচনা করেছে তুরস্কের পার্লামেন্ট স্পিকার। স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো এ খবর দিয়েছে।

মার্কিন কর্তৃপক্ষ সমগ্র বিশ্বে বিশেষ করে এখন গাজায় যুদ্ধের আগুন জ্বালিয়ে রাখার স্বার্থে নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে। 

শনিবার গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রশ্নে জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলে যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দেওয়ার পর, ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস দেশটিকে যুদ্ধাপরাধের সহযোগী হিসেবে অভিযুক্ত করেন।

আরও পড়ুন: বেড়েছে ইসরায়েলি সেনাদের হতাহতের সংখ্যা: নিহত ৪২৫, আহত ১৫৯৩

নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্য দেশের মধ্যে ১৩টি দেশই গাজায় যুদ্ধবিরতির পক্ষে ভোট দেয়। যুক্তরাজ্য নিজেদের ভোট প্রদানে বিরত রাখে আর যুক্তরাষ্ট্র একমাত্র দেশ হিসেবে এর বিপক্ষে ভোট দেয়।

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রধান আব্বাস বলেন, “গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে ফিলিস্তিনি শিশু, নারী ও বয়স্কদের রক্ত ঝরার জন্য যুক্তরাষ্ট্র দায়ী।”

জাতিসংঘে চীনা স্থায়ী প্রতিনিধি জংজুনসহ বিশ্বের অপরাপর সদস্য দেশ আমেরিকার ওই পদক্ষেপকে ওয়াশিংটনের বৈপরীত্য এবং দ্বৈত আচরণ হিসেবে বিবেচনা করেছেন।

আরও পড়ুন: জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ব্যর্থতা নিয়ে গুতেরেসের হতাশা

বাস্তবতা হলো বিশ্ব সমাজ গাজায় ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করতে চায়। কিন্তু আমেরিকা যথারীতি নির্লজ্জভাবে শিশু-হত্যাকারী ও অপরাধী ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। আমেরিকার কাছ থেকে এই সমর্থন অপ্রত্যাশিত ছিল না বলেও বিশেষজ্ঞমহল অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

তুর্কি দৈনিক ইয়েনি কুনিয়ে আজ সেদেশের সংসদ স্পিকার নোমান কুরতুলমুশের উদ্ধৃতি দিয়ে একটি প্রতিবেদন করেছে। নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দেওয়ার প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেছিলেন, ওয়াশিংটন আবারও প্রমাণ করলো তারা জুলুমের পক্ষে। 

কুরতুলমুশ আরও বলেন, ফিলিস্তিনের নারী-শিশু ও বৃদ্ধের রক্তে আমেরিকার হাত রঞ্জিত। আমেরিকার জনগণের বেশিরভাগই গাজা যুদ্ধ বন্ধের পক্ষে থাকা সত্ত্বেও নিরাপত্তা পরিষদে ওয়াশিংটন ভেটো দিয়েছে। সুতরাং আমেরিকাও ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর ইসরায়েলি গণহত্যার শরিক বলে মন্তব্য করেন কুরতুলমুশ।

উল্লেখ্য, গাজা উপত্যকার নিরপরাধ ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুদের ওপর প্রায় দুই মাস ধরে ইসরায়েল পাশবিকতা চালিয়ে গেলেও কোনো পশ্চিমা দেশ বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখন পর্যন্ত তেল আবিবকে আগ্রাসন বন্ধ করার আহ্বান পর্যন্ত জানায়নি।

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৮ হাজার জন। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য দিয়েছে।

গাজার সরকারি স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে শতকরা ৭০ ভাগ নারী ও শিশু। 

গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাস ইসরায়েলের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করে নজিরবিহীন সামরিক অভিযান চালায়। ওই অভিযানে ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়। ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা দুই শতাধিক ইসরায়েলিকে বন্দী করে নিয়ে গাজা উপত্যকায় ফিরে যায়। সেদিন থেকেই ইসরায়েলের সেনাবাহিনী গাজায় ভয়াবহ রক্তাক্ত অভিযান শুরু করে যা এখন পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলছে।

ইসরায়েলে সামরিক অভিযানের বিষয়ে আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হামাসের মুখপাত্র খালেদ কাদোমি বলেন, ‘দশকের পর দশক ধরে ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো নৃশংসতার জবাবে এই সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে। আমরা চাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর এবং আমাদের পবিত্র স্থাপনা আল-আকসায় ইসরায়েলি নৃশংসতা বন্ধে উদ্যোগ নেবে। এগুলোই হামাসের এই অভিযানের কারণ।’

সূত্র : আল-জাজিরা, আনাদোলু এজেন্সি, বিবিসি

এমইউ