আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৬:০১ পিএম
রাশিয়া সফরে গেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি। সেখানে যেয়ে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে এক বৈঠক করেন। ওই আলোচনা বৈঠকে গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধে জোর দিয়েছেন রায়িসি।
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার বিরুদ্ধে চলমান ইসরায়েলি ‘গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ’ অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘গাজা এখন এমন একটি ভূখণ্ডে পরিণত হয়েছে যেখানে প্রতি ১০ মিনিটে একটি শিশু নিহত হচ্ছে। কাজেই অবিলম্বে এই নির্বিচার বোমাবর্ষণ বন্ধ করে এর একটি কার্যকর সমাধান বের করা দরকার। তিনি আরও বলেন, ফিলিস্তিনে আজ যা ঘটছে তা গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ ছাড়া আর কিছু নয়।
আরও পড়ুন: গাজায় ৭৯ ইসরায়েলি যান ধ্বংস, উদ্বিগ্ন পুতিন ও সৌদি যুবরাজ
গতকাল (বৃহস্পতিবার) মস্কোয় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে এক বৈঠকে এ আহ্বান জানিয়েছেন রায়িসি। এ সময় দুই প্রেসিডেন্ট ইরান ও রাশিয়ার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পাশাপাশি অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসন নিয়ে আলোচনা করেন।
রায়িসি বলেন, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি অপরাধযজ্ঞের প্রতি আমেরিকা ও ইউরোপীয় দেশগুলো অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে। যেসব আন্তর্জাতিক সংস্থাকে গঠন করা হয়েছিল মানবাধিকার রক্ষার জন্য সেসব সংস্থা এখন তাদের কার্যকারিতা চরমভাবে হারিয়েছে।
তিনি বলেন, আজ বিশ্ব মানবতাকে সবচেয়ে বেশি পীড়া দিচ্ছে মার্কিন নেতৃত্বাধীন একক আধিপত্যবাদ ও বৈশ্বিক অন্যায় ব্যবস্থা যার নগ্ন ফলাফল গাজা উপত্যকায় প্রকাশিত হয়েছে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মধ্যপ্রাচ্য সফরে এসে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে যাওয়ার পর দিনই তার সঙ্গে মস্কোয় সাক্ষাৎ করলেন প্রেসিডেন্ট রায়িসি। মধ্যপ্রাচ্য সফরে গাজা ও ইউক্রেন পরিস্থিতির পাশাপাশি পুতিন ওপেকের পক্ষ থেকে তেলের দাম বৃদ্ধির প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা করেন।
মস্কোতে সাক্ষাতের সময় পুতিনকে রায়িসি বলেন, “আমরা তো আপনাকে বহনকারী ফ্লাইট তেহরানে অবতরণ করবে বলে অপেক্ষার প্রহর গুণছিলাম।” জবাবে পুতিন বলেন, “আমার ফ্লাইট যখন ইরানের আকাশ দিয়ে যাচ্ছিল তখন আমি সরাসরি তেহরানে অবরতণ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে বলা হলো যে ইরানের প্রেসিডেন্ট মস্কো যাচ্ছেন!”
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনিদের হামলায় নিহত ইসরায়েলি সেনাদের সংখ্যা বেড়ে ৯৩
রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমি মস্কোয় আপনাকে স্বাগত জানাতে পেরে অত্যন্ত খুশি হয়েছি। আমরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইস্যু বিশেষ করে ফিলিস্তিন ইস্যুতে অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করছি।”
দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধির উপায় নিয়েও কথা বলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, ইরানের সঙ্গে ইউরেশিয়ান ইকোনমিক ইউনিয়নের শুল্কমুক্ত বাণিজ্য বিনিময়ের উপায় নিয়ে রাশিয়া কাজ করছে। ইরান ও রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্ক দিন দিন শক্তিশালী হচ্ছে বলে সন্তোষ প্রকাশ করেন ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি প্রেসিডেন্ট রায়িসিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির কাছে তার শুভেচ্ছা পৌঁছে দিতে অনুরোধ করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি মস্কোর ভানুকোভা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। ওই সময় তাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান রাশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার নোভাক এবং উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রে রুডেনকো। রায়িসি মূলত রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের আমন্ত্রণে রাশিয়া সফর করেছেন।
সূত্র : প্রেস টিভি
এমইউ