আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:২২ পিএম
যুদ্ধের মাধ্যমেই গাজায় ফিলিস্তিনি শাসনের অবসান হবে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এ মন্তব্য করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি মূলত গাজা দখলের ইঙ্গিত দিয়েছেন।
মঙ্গলবার ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইচ্ছার বিপরীতে যেয়ে হলেও নেতানিয়াহু যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে গাজা উপত্যকার প্রশাসন থেকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে বাদ দেবেন।’
কান টিভি জানিয়েছে, ‘সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে নেতানিয়াহু বলেছেন যে যুদ্ধের পরে গাজায় কোনো ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ থাকবে না। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যেই জানিয়েছেন যে গাজায় হামাসের কোনো সরকারকে তিনি মানবেন না।’ এমনকি অন্য কোনো ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর শাসনও তিনি মেনে নিবেন না। এর মাধ্যমে তিনি মূলত গাজা দখলের ইঙ্গিত দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি ধ্বংসযজ্ঞের সমালোচনা করলেন এরদোয়ান
ইসরায়েলি গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, ‘নেতানিয়াহু তার লিকুদ পার্টির একটি সভায় ঘোষণা করেছেন যে তিনি যুদ্ধের পরে গাজা উপত্যকায় যেকোনো ফিলিস্তিনি নিয়ন্ত্রণের বিরোধিতা করবেন। এ বিষয়টি তিনি মার্কিন সরকারকেও জানিয়েছেন।’
কান টিভি নেতানিয়াহুকে উদ্ধৃত করে সংবাদ প্রকাশ করেছে যে গাজায় কোনো ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ থাকবে না।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ফিলিস্তিনি সরকার নেতানিয়াহুর এ বক্তব্যের বিষয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেনি।
আরও পড়ুন: গত ২৪ ঘণ্টায় ফিলিস্তিনিদের হামলায় ৫ ইসরায়েলি সেনা নিহত
নেতানিয়াহুর এ বিবৃতি যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত অবস্থানের বিরোধিতা করছে। কারণ, মার্কিন সরকার বলেছে যে গাজায় অবশ্যই একটি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বা সরকার থাকতে হবে।
উল্লেখ্য, গাজা উপত্যকার নিরপরাধ ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুদের ওপর প্রায় দুই মাস ধরে ইসরায়েল পাশবিকতা চালিয়ে গেলেও কোনো পশ্চিমা দেশ বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখন পর্যন্ত তেল আবিবকে আগ্রাসন বন্ধ করার আহ্বান পর্যন্ত জানায়নি। গাজায় এ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় ১৫,৮৯৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন যাদের শতকরা ৭০ ভাগ নারী ও শিশু। তাদের হামলায় ৪২ হাজার জনের বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।
গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাস ইসরায়েলের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করে নজিরবিহীন সামরিক অভিযান চালায়। ওই অভিযানে ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়। ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা দুই শতাধিক ইসরায়েলিকে বন্দী করে নিয়ে গাজা উপত্যকায় ফিরে যায়। সেদিন থেকেই ইসরায়েলের সেনাবাহিনী গাজায় ভয়াবহ রক্তাক্ত অভিযান শুরু করে যা এখন পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলছে।
ইসরায়েলে সামরিক অভিযানের বিষয়ে আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হামাসের মুখপাত্র খালেদ কাদোমি বলেন, ‘দশকের পর দশক ধরে ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো নৃশংসতার জবাবে এই সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে। আমরা চাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর এবং আমাদের পবিত্র স্থাপনা আল-আকসায় ইসরায়েলি নৃশংসতা বন্ধে উদ্যোগ নেবে। এগুলোই হামাসের এই অভিযানের কারণ।’
সূত্র : আল-জাজিরা, আনাদোলু এজেন্সি, মিডল ইস্ট আই
এমইউ