আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:২১ পিএম
গাজার উত্তর অংশে ব্যর্থ হয়ে ইসরায়েল সেনা প্রত্যাহার করে নিচ্ছে বলে দাবি করেছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সামরিক শাখা কাসাম বিগ্রেড।
ইসরায়েলের অভিযানকে 'ব্যর্থ' উল্লেখ করে কাসাম ব্রিগ্রেড জানিয়েছে, উত্তর গাজায় ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর ৭০ ভাগই এখন চলে গেছে। খবর আল জাজিরার
ইসরায়েল হামাসের এমন দাবির কথা স্বীকার করেনি। তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা উত্তর গাজায় স্থল অভিযান বাড়িয়েছে। সেখানকার বড় শহর খান ইউনিসে ভয়াবহ হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।
তিন দিনের ভারী বোমাবর্ষণ শেষে এবার গাজার দক্ষিণাঞ্চলে স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি সেনারা। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর রেডিওতে প্রচারিত প্রাথমিক খবরে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, বর্তমানে তারা খান ইউনিসের উত্তরে অভিযান চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন: হামাসের যুদ্ধ কৌশল, অবাক বিশ্ব
এছাড়া খান ইউনিস শহরের কাছাকাছি জায়গায় ইসরায়েলি একটি ট্যাঙ্কের ছবিও যাচাই করেছে বিবিসি। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফের প্রধান সেনাদের জানিয়েছেন যে, তারা দক্ষিণ গাজায় জোরালোভাবে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান বলেন, গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে আমরা দৃঢ়তার সাথে জোরালোভাবে যুদ্ধ করেছি। এখন আমরা গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলেও একইভাবে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছি।
কাতারের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধে যে এক সপ্তাহের বিরতি ঘোষণা করা হয়েছিল, সেটি গত শুক্রবার শেষ হয়। এরপর গাজায় আবারও ব্যাপকভাবে বোমা হামলা শুরু করে ইসরায়েল, যেটিকে এখন পর্যন্ত হওয়া সবচেয়ে বড় হামলা হিসাবে বর্ণনা করেছেন খান ইউনিসের বাসিন্দারা।
সাত দিনের যুদ্ধবিরতিতে হামাস ইসরায়েলি কারাগার থেকে ২৪০ জন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে। আর তার বিনিময়ে হামাস ১১০ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে। রোববার সকালে খান ইউনিসের বেশ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দাদের দ্রুত সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
গাজার উত্তরাঞ্চলে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর হাজার হাজার উদ্বাস্তু দক্ষিণাঞ্চলে এসে আশ্রয় নেয়। এসব উদ্বাস্তুদের মধ্যেই হামাসের সদস্যরা লুকিয়ে রয়েছে বলে দাবি ইসরায়েলের।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলকে বিপুল গোলাবারুদ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এখন গাজার দক্ষিণাঞ্চলকে তাদের আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছে।
গাজায় হামাসের ব্যবহৃত ৮০০টির মত টানেল পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ। এর মধ্যে ৫০০টি ধ্বংস করা হয়েছে বলেও দাবি তাদের।
ইসরায়েলি বাহিনী জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গাজায় প্রায় দশ হাজারের মত বিমান হামলা চালানো হয়েছে।
গত কয়েকদিনে দক্ষিণাঞ্চলে যেভাবে হামলা চালানো হয়েছে এবং এর ফলে সেখানকার হাসপাতাল গুলোতে যে চিত্র দেখা গেছে, সেটি রীতিমত আতঙ্কের বলে বর্ণনা করেছেন জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা।
গাজার কোন হাসপাতালে আগে কখনও এমন অবস্থা দেখেননি বলে জানিয়েছেন তিনি। খান ইউনিসের নাসের মেডিকেল হাসপাতালকে যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে বর্ণনা করেছেন ইউনিসেফের কর্তকর্তা জেমস এল্ডার।
আরও পড়ুন: ইরানের অভ্যন্তরে ইসরায়েলি গুপ্তচর নেটওয়ার্কের তথ্য ফাঁস!
গত ৭ অক্টোবর গাজার সীমান্ত সংলগ্ন ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের নজিরবিহীন হামলায় ১২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছে বলে দেশটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এ সময় হামাস ইসরায়েল থেকে প্রায় ২৪০ জনকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে যায়।
হামাসের হামলার পর ওইদিন থেকেই ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজায় ব্যাপক ও ভয়াবহ হামলা শুরু করে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। রোববার হামাসের স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে, গাজায় লড়াই শুরুর পর থেকে ১৫ হাজার ৫২৩ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন ৪১ হাজার ৩১৬ জন। এর মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
একে