আন্তর্জাতিক ডেস্ক
৩০ নভেম্বর ২০২৩, ০৬:৪০ পিএম
ফিলিস্তিনিদের হামলায় এবার তিন ইসরায়েলি নিহত হয়েছে। এ হামলার দায় স্বীকার করেছে হামাস।
ফিলিস্তিনের এ প্রতিরোধ সংগঠনটি জানিয়েছে, ‘পশ্চিম জেরুসালেমে ইসরায়েলিদের ওপর হামলা পরিচালনাকারীরা ছিল হামাসের সদস্য।’
পশ্চিম জেরুসালেমের একটি বাস স্টপে ইসরায়েলিদের ওপর প্রাণঘাতী হামলা করে দুই ফিলিস্তিনি বন্দুকধারী। এরপরই ওই হামলার দায় স্বীকার করে হামাস।
এ বিষয়ে এক বিবৃতিতে হামাস বলেছে, গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান এবং ইসরায়েলি কারাগারে ফিলিস্তিনি বন্দীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করায় এ হামলা করেছে তাদের ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা। এটা হচ্ছে ইসরায়েলিদের প্রাণঘাতী হামলার পাল্টা জবাব।
ফিলিস্তিনের এ প্রতিরোধ সংগঠনটি জানিয়েছে, হামাসের এ অভিযানটি দখলদারদের দ্বারা পরিচালিত নজিরবিহীন অপরাধের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া।
আরও পড়ুন: গাজায় যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আবারও বাড়ছে
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, হামাসের দুই যোদ্ধা অস্ত্র ও একটি পিস্তল দিয়ে গুলি চালালে তিনজন ইসরায়েলি নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়।
অপরদিকে গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি চলার সময় জর্দান নদীর পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সেনাদের তাণ্ডব অব্যাহত রয়েছে এবং জেনিন শহরে বুধবার তাদের গুলিতে দুই ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়েছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিহত দুই শিশুর পরিচয় প্রকাশ করেছে। তাদের একজন আট বছর বয়সী আদম সামের এবং দ্বিতীয় জন হচ্ছেন ১৫ বছর বয়সী বাসিল সুলেইমান আবু আল-ওয়াফা।
ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস এক বিবৃতিতে এ হত্যাকাণ্ডকে ‘জঘন্য অপরাধ’ উল্লেখ করে বলেছে, দখলদার সেনারা ঠাণ্ডা মাথায় দুই শিশুকে হত্যা করেছে। এ হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে হামাস বলেছে, এজন্য ইসরায়েলকে জবাবদিহি করতে হবে।
এদিকে পশ্চিম তীরের জেনিন শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি সেনাদের তাণ্ডব অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিন স্বশাসন কর্তৃপক্ষের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বুধবার সেখানে ব্যাপক ধরপাকড় অভিযান শুরু করলে স্থানীয় লোকজন ইসরায়েলি সেনাদের প্রতিহত করেন এবং এর ফলে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘাত বেধে যায়।
ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, এ সময় দখলদার সেনারা বেশ কয়েকটি বাড়ি ভেঙে ফেলে এবং বুলডোজার দিয়ে রাস্তা ধ্বংস করে দেয়। তারা একটি বাড়িতে ড্রোনের সাহায্যে বোমাবর্ষণ করে। ইসরায়েলি সেনারা বুলডোজার চালিয়ে জেনিন শহরের পানি, বিদ্যুৎ ও পয়োঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষতি করে।
আরও পড়ুন: ইরানের অভ্যন্তরে ইসরায়েলি গুপ্তচর নেটওয়ার্কের তথ্য ফাঁস!
এদিকে, ফিলিস্তিনের ইসলামি জিহাদ আন্দোলনের সামরিক বাহিনী আল-কুদস ব্রিগেড জানিয়েছে, তারা ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে হামলা চালিয়ে জেনিন শরণার্থী শিবিরে তাদের প্রবেশ বেশ কয়েক ঘণ্টা ঠেকিয়ে রাখে। এ সময় দখলদার সেনাদের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়। আল-কুদস ব্রিগেডের যোদ্ধারা স্থানীয়ভাবে তৈরি বোমা দিয়ে ইসরায়েলিদের সাঁজোয়া যানে আঘাত হানেন এবং এতে দখলদার সেনাদের ক্ষয়-ক্ষতি হয়। ইসরায়েলি সেনারা দাবি করেছে, তারা জেনিন শিবিরে দু’জন ফিলিস্তিনি কমান্ডারকে হত্যা করেছে।
গত ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলের অভ্যন্তরে বড় ধরনের অভিযান চালানোর পর থেকে জর্দান নদীর পশ্চিম তীরে এ পর্যন্ত দখলদার সেনাদের হামলায় ২৪২ ফিলিস্তিনি নিহত ও ২,৮৫০ জন আহত হয়েছেন। আর ইসরায়েলি সেনারা শত শত ফিলিস্তিনিকে ধরে নিয়ে গেছে। ৭ অক্টোবরের আগেও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সেনাদের আগ্রাসনে শত শত ফিলিস্তিনি হতাহত হয়েছেন। গত দুই দশকের মধ্যে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি হামলায় এত বেশি সংখ্যক ফিলিস্তিনি হতাহত হননি।
সূত্র : আল-জাজিরা, প্রেস টিভি, মিডল ইস্ট আই
এমইউ