আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৩ নভেম্বর ২০২৩, ১২:২৫ পিএম
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচারে হামলায় প্রতি দুই ঘণ্টায় দুই জন মা এবং ৭ জন নারীর মৃত্যু হচ্ছে। জাতিসংঘের নারী বিষয়ক নির্বাহী পরিচালক বুধবার একথা জানিয়েছেন।
সিমা সামি বাহাউস জাতিসংঘে বলেন, ৭ অক্টোবরের আগে গত ১৫ বছরে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলায় নিহতদের ৬৭ শতাংশই ছিল পুরুষ। আর ১৪ শতাংশেরও কম ছিল নারী ও মেয়ে। তবে নতুন এই হামলায় আগের সব হিসেব উল্টে গেছে।
বুধবার মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে এসব কথা বলেন সিমা সামি বাহাউস।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় যত লোক নিহত হয়েছে, গত দেড় মাসে নিহত হয়েছে তার দ্বিগুণ। সেখানে ১৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ৬৭ শতাংশই নারী ও শিশু।
আরও পড়ুন: গাজা শিশুদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক জায়গা: ইউনিসেফ
ইউএন উইমেনের প্রধান নির্বাহী বলেন, বর্তমান হামলার আগে গাজায় সাড়ে ছয় লাখ নারী ও মেয়ের মানবিক সহায়তার তীব্র প্রয়োজন ছিল। তবে সেটি এখন অন্তত ১১ লাখে পৌঁছেছে। এর মধ্যে প্রায় ৮ লাখ নারী অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত।
সিমা সামি বাহাউস বলেন, গাজার নারীরা আমাদের বলেছে যে, তারা শান্তির জন্য প্রার্থনা করে। যদি শান্তি না আসে তবে তারা তাদের ঘুমের মধ্যে বাচ্চাদের কোলে নিয়ে মৃত্যুর প্রার্থনা করে।
জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা বলেন, বিধ্বস্ত গাজায় প্রতিদিন প্রায় ১৮০ জন নারী ভয়াবহ পরিস্থিতে সন্তান প্রসব করছেন।
জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) নির্বাহী পরিচালক নাতালিয়া কানেম বলেন, 'সংঘাতে আটকে পড়া সমস্ত নারী ও মেয়েদের নিরাপত্তা ও মঙ্গলের জন্য আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তারা যে পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে তা বিপর্যয়কর।'
কানেম বলেন, গাজায় বর্তমানে সাড়ে ৫ হাজার গর্ভবতী নারী আগামী মাসে সন্তান প্রসব করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। প্রতিদিন অন্তত ১৮০ নারী সন্তান প্রসব করছেন। তাদের নবজাতকের ভবিষ্যত অনিশ্চিত।
ইউএনএফপিএ অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান অব্যাহত রেখেছে। তিনি বলেন, গাজায় চার দিনের মানবিক বিরতির ঘোষণা ভালো দিক। তবে এটি স্থায়ীভাবে হতে হবে।
আরও পড়ুন: গাজায় বোমা ফেলেই চলেছে ইসরায়েল, আজ হচ্ছে না যুদ্ধবিরতি
ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের গত ৭ অক্টোবরের আকস্মিক হামলায় ১৪০০ জন নিহত হয়েছে বলে জানায় ইসরায়েল। তবে সম্প্রতি সেই সংখ্যা কমিয়ে ১২০০ করা হয়েছে। এছাড়া হামাস ইসরায়েল থেকে ২৪০ জনকে জিম্মি করে নিয়ে গেছে বলে জানায় নেতানিয়াহু প্রশাসন।
এরপর থেকে গাজায় ও পশ্চিম তীরে নির্বিচারে হামলা করছে ইসরায়েল। গাজার আবাসিক এলাকা, স্কুল, হাসপাতাল, জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থার গুদাম, খাবারের দোকানসহ কোনো কিছুই হামলা থেকে বাদ যায়নি। এখন ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ও গাজায় ইসরায়েলি হামলায় সাড়ে ১৪ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৫ হাজার ৬০০টিরও বেশি শিশু। নিহত বাকিদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী।
একে