আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১৭ নভেম্বর ২০২৩, ০৩:৫৭ পিএম
ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি এ যুদ্ধে সাধারণ মানুষের মৃত্যুর নিন্দা করেছেন এবং সংঘর্ষের কারণে পশ্চিম এশিয়ায় ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জের মুখে গ্লোবাল সাউথের মধ্যে ঐক্য ও সহযোগিতার জরুরি প্রয়োজন তুলে ধরেছেন। শুক্রবার তিনি এসব কথা বলেন।
২য় ভয়েস অফ গ্লোবাল সাউথ সামিটের ই-উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তৃতা দেওয়ার সময়ে, মোদি ইসরায়েলে ৭ অক্টোবরের অভিযান-সহ উগ্রবাদের বিরুদ্ধে ভারতের অটল অবস্থানের ওপর জোর দিয়েছিলেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী সংঘাত নিরসনের ভিত্তিপ্রস্তর হিসেবে আলোচনাকে প্রাধান্য দেওয়া এবং সংযম প্রদর্শনের গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
আরও পড়ুন: শ্লীলতাহানির অভিযোগে যুবকের বিশেষ অঙ্গ কর্তন
তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই দেখছি যে পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলের ঘটনা থেকে নতুন চ্যালেঞ্জের উদ্ভব হচ্ছে। ভারত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের অভিযান চালানোর বিষয়ে নিন্দা করেছে’। তিনি আরও বলেন, ‘আমরাও সংযম ব্যবহার করেছি। আমরা আলোচনা ও কূটনীতির ওপর জোর দিয়েছি। আমরা ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সংঘর্ষে সাধারণ মানুষের মৃত্যুর তীব্র নিন্দাও করেছি’।
তিনি আরও বলেন, ‘ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে কথা বলার পর, আমরা ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য মানবিক সাহায্যও পাঠিয়েছি। এই সময় গ্লোবাল সাউথের দেশগুলোর বৃহত্তর বৈশ্বিক ভালোর জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত’।
গ্লোবাল সাউথ হচ্ছে বিভিন্ন দেশের একটি জোট - যা প্রাথমিকভাবে এশিয়া, আফ্রিকা এবং দক্ষিণ আমেরিকার দক্ষিণ গোলার্ধে অবস্থিত, এ দেশগুলোর অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিভিন্ন স্তর রয়েছে। যদিও এসব দেশের বৈশিষ্ট্য একই না, তবে তারা দারিদ্র্য, অসাম্য এবং সীমিত সম্পদের কারণে বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাস ইসরায়েলের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করে নজিরবিহীন সামরিক অভিযান চালায়। সেদিন থেকেই ইসরায়েলের বিমানবাহিনী গাজায় ভয়াবহ রক্তাক্ত অভিযান শুরু করে যা এখন পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলছে।
ইসরায়েলে সামরিক অভিযানের বিষয়ে আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হামাসের মুখপাত্র খালেদ কাদোমি বলেন, ‘দশকের পর দশক ধরে ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো নৃশংসতার জবাবে এই সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে। আমরা চাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর এবং আমাদের পবিত্র স্থাপনা আল-আকসায় ইসরায়েলি নৃশংসতা বন্ধে উদ্যোগ নেবে। এগুলোই হামাসের এই অভিযানের কারণ।’
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে তীব্র সংঘাত, ইসরায়েলি সেনা নিহত
বিগত এক মাসে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা ১২ হাজার ছাড়িয়েছে। নিহতদের অর্ধেকেরও বেশি শিশু ও নারী। অন্যদিকে ইসরায়েলে নিহত হয়েছে এক হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ। হামলার প্রথম দিনই ইসরায়েল থেকে অন্তত ২৪০ জনকে যুদ্ধবন্দী হিসেবে গাজায় ধরে নিয়ে যায় হামাস। গাজা উপত্যকার ২৩ লাখ মানুষের মধ্যে অন্তত ১৫ লাখ বেসামরিক লোক হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
অপরদিকে গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে হামাস যোদ্ধাদের তীব্র লড়াই চলছে। গত কয়েক দিন ধরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর স্থল হামলা জোরদার হওয়ার পর থেকে গাজার উত্তরাঞ্চলে সংঘাতের তীব্রতা বেড়েছে।
উত্তর গাজার শহর গাজা সিটির হাসপাতালগুলোর আশেপাশে সংঘাতের তীব্রতা সবচেয়ে বেশি।
হাসপাতালগুলোর আশেপাশের এলাকায় বেশ কয়েক দিন ধরে তীব্র সংঘাত চলার কারণে কয়েকটি হাসপাতাল কার্যত অচল হয়ে পড়েছে।
সূত্র : আল-জাজিরা, জি নিউজ
এমইউ