আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১৪ নভেম্বর ২০২৩, ০২:০২ পিএম
ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের ছায়া পড়েছে ভারতের কলকাতায়। যুদ্ধ হচ্ছে সুদূর মধ্যপ্রাচ্যে, কিন্তু তার কম্পন সামলাচ্ছে কলকাতার ইহুদি মন্দিরগুলো।
এ শহরের সিনাগগগুলো (ইহুদি মন্দির) এখন সাধারণের জন্য খোলা হয় না। ইহুদিদের ধর্মস্থানগুলো এখন শ্মশানের মতোই স্তব্ধ। যেমন: কলকাতার ব্যস্ত বড়বাজারের ‘নেভেহ্ শালোম’ সিনাগগের দরজা বন্ধ। সেখানে আছেন শুধু একজন দারোয়ান। সিনাগগের বাকি সব স্থানে সিসি ক্যামেরা লাগানো।
এ ইহুদি মন্দিরটি অন্তত ২০ দিন ধরে বন্ধ। সাধারণ জনগণের জন্যও এখানকার দরজা খোলা হচ্ছে না। এটা এভাবেই বন্ধ থাকবে অনির্দিষ্ট কালের জন্য। এক সংবাদকর্মী সিনাগগের ভিতরে ঢুকতে চাইতেই ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের কথা বললেন দারোয়ান। তার গলায় খানিকটা উৎকণ্ঠা।
তিনি বলেন, সিনাগগ যুদ্ধের জন্য বন্ধ নয়, প্রশাসনের ভয়ে এটা বন্ধ রাখা হয়েছে। অচেনা কারও সঙ্গে কথা বলায় নিষেধাজ্ঞা আছে। এমনকি গণমাধ্যমের সঙ্গেও কথা বলা বারণ।
আরও পড়ুন: গাজায় ফিলিস্তিনিদের হাতে আরও ইসরায়েলি সেনা নিহত
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ওই দারোয়ান বলেন, এখানে রোজ পুলিশ আসে। শুনেছি কলকাতার লালবাজার থেকে নির্দেশ এসেছে যে এ সিনাগগটি এখন খোলা যাবে না। একমাত্র প্রশাসনের নির্দেশ এলে এ ইহুদি মন্দিরের দরজা খোলা হবে।
কলকাতার বিবাদী বাগের ব্যস্ত অফিসপাড়া পেরিয়ে যে সিনাগগটি আছে তাও এখন বন্ধ আছে। কলকাতার ইহুদিদের প্রাচীন ধর্মস্থান ‘মেগন ডেভিড’ সিনাগগের প্রবেশদ্বার এখন লোহার মোটা শিকলে আটকানো।
লাল-হলুদ রঙের প্রকাণ্ড এ স্থাপত্যের দারোয়ান একজন নারী। তিনিও জানিয়েছেন যে এ সিনাগগটি বন্ধ। এটা কবে খুলবে - তাও তিনি জানেন না।
‘নেভেহ্ শালোম’ সিনাগগের দারোয়ান বলেন, ‘একমাত্র বিদেশ থেকে কোনো ইহুদি পর্যটক এলে - তাকে তালা খুলে দেখানোর নিয়ম। তা না হলে এটা বন্ধ রাখতে হবে।’
এ বিষয়ে ওই ব্যক্তি আরও বলেন, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের কারণে কলকাতার অনেক মানুষ ক্ষিপ্ত। এ কারণে প্রশাসন নির্দেশ দিয়েছে যে সিনাগগগুলো বন্ধ থাকবে।
আরও পড়ুন: আবারও লেবানন থেকে ইসরায়েলে হামলা, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার
এছাড়া ‘বেথ এল’ সিনাগগের দারোয়ান বলেন, এখানকার অন্য ধর্মের লোকদের ধর্মস্থানগুলো খোলা, শুধু আমাদের সিনাগগগুলো বন্ধ। এটা কবে খুলবে - তা জানি না।
কলকাতা শহরে ইহুদিদের বসবাসের ইতিহাস অনেক প্রাচীন। প্রায় কয়েক শতকের। এটা সেই ব্রিটিশ আমলেরও আগের কথা। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র গঠনের পর এখানকার অধিকাংশ ইহুদি সেখানে চলে গেছেন। তবে কিছু ইহুদি এখনও কলকাতায় আছে।
সূত্র : এবিপি
এমইউ