আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১১ নভেম্বর ২০২৩, ০৯:৪৪ পিএম
গাজা যুদ্ধ হলো হক ও বাতিলের মধ্যকার যুদ্ধ। ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি এ মন্তব্য করেছেন। অপরদিকে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর যুদ্ধ অব্যাহত রাখার নিন্দা জানান।
‘ইসলামিক ও আরব সম্মেলন’ নামক এ জরুরি বৈঠকে অংশ নিয়ে রায়িসি বলেছেন, আজ আল-আকসা মসজিদ প্রতিরক্ষার একটি ঐতিহাসিক দিন।
তিনি বলেন, গাজা যুদ্ধ হলো হক ও বাতিলের মধ্যকার যুদ্ধ। প্রত্যেককে আজ সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে কে কোন পক্ষে দাঁড়াবে। ইরানি প্রেসিডেন্ট গাজা যুদ্ধ বন্ধে প্রস্তাব দিতে গিয়ে আরও বলেন, আমেরিকা সরাসরি এ যুদ্ধে প্রবেশ করেছে এবং ইসরায়েলের পেছনে দাঁড়িয়েছে। ইসরায়েলকে আত্মরক্ষার অজুহাতে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে অপরাধ চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করছে যুক্তরাষ্ট্র।
আরও পড়ুন: ‘মুসলিম নেতারা ফিলিস্তিন ইস্যুতে যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি বিভক্ত’
রিয়াদে গাজা বিষয়ক ওআইসি'-এর জরুরি এক বৈঠকে মুসলিম দেশগুলোর নেতৃবৃন্দ গাজায় ইসরায়েলের হামলা অবিলম্বে বন্ধের ওপর জোর দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট রায়িসি ইসরায়েলের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য মুসলিম দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
বার্তা সংস্থা ইরান-প্রেস জানিয়েছে, আজ (শনিবার) সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে গাজা ও ফিলিস্তিনের বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে মুসলিম দেশগুলোর প্রধানদের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। গত মার্চে দু'দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনস্থাপনের পর প্রেসিডেন্ট রায়িসি প্রথমবারের মতো সৌদি সফরে গেলেন। সৌদি কর্মকর্তারা ফিলিস্তিনি ঐতিহ্যবাহী সাদা রুমাল (কেফিয়া) পরিহিত ইব্রাহিম রায়িসি'কে অভ্যর্থনা জানান।
বৈঠকের শুরুতে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর যুদ্ধ অব্যাহত রাখার নিন্দা জানান। সেইসঙ্গে তিনি অবিলম্বে সামরিক অভিযান বন্ধ করা-সহ গাজায় মানবিক করিডোর তৈরির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সৌদি যুবরাজ গাজার প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্বৈত আচরণেরও সমালোচনা করেন। মোহাম্মদ বিন সালমান গাজা যুদ্ধ অব্যাহত রাখার ঘটনাকে নিরাপত্তা পরিষদের ব্যর্থতা বলেও মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিন ইস্যুতে বিতর্কিত মন্তব্য করলেন পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট
অপরদিকে আল-জাজিরার প্রতিনিধি হাসেম আহেলবারা জানিয়েছেন, মুসলিম নেতারা ফিলিস্তিন ইস্যুতে যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি বিভক্ত। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে ফিলিস্তিন ইস্যুতে আজকের জরুরি শীর্ষ সম্মেলনটি বিভক্ত মুসলিম ও আরব বিশ্বের চিত্র তুলে ধরেছে।
নিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে যুদ্ধের পর গাজায় কী ঘটবে? বা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট বিষয়ে যে মতানৈক্য ছিল - তাতে আলোচনা ও পরিকল্পনার উল্লেখযোগ্য অভাব ছিল।
অপরদিকে যুদ্ধের আগে ইসরায়েল এবং সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্কের স্বাভাবিককরণের বিষয়টি এখনও আলোচনার টেবিলে রয়েছে।
আল-জাজিরার প্রতিনিধি হাসেম আহেলবারা বলেন, আমরা মুসলিম বিশ্ব এবং আরব বিশ্বের নেতাদের কোনো সুনির্দিষ্ট বিষয়ে একমত হতে দেখিনি। এসব শীর্ষ নেতারা এখনও এ বিষয়ে একমত হতে পারেননি যে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কেমন কঠোর অবস্থান নিতে হবে।
গাজার ফিলিস্তিনিদের জন্য যুদ্ধবিরতি এবং সাহায্যের জন্য এ শীর্ষ সম্মেলনের আহ্বানের ক্ষেত্রে বলা যায় যে রিয়াদে উপস্থিত নেতাদের পক্ষে এটা বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত কঠিন হবে।
এ কারণে তাদের অপেক্ষা করতে হবে এবং আশা করতে হবে যে কখন আমেরিকানরা ইসরায়েলিদের ওপর মানবিক যুদ্ধবিরতি শুরু করার জন্য চাপ দিবে। এছাড়া মার্কিন কর্তৃপক্ষ যখন আরও মানবিক সহায়তা গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেবে, তখন গাজার লোকেরা এসব ত্রাণ সহায়তা পাবে।
সূত্র : আল-জাজিরা, প্রেস টিভি
এমইউ