আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৫ নভেম্বর ২০২৩, ০১:৪৮ পিএম
চীন জনসংখ্যার পরিবর্তনের উপর একটি সমীক্ষায় এই মাসের প্রথম দিন তেকে শুরু হয়েছে। দেশটি ছয় দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে প্রথম জনসংখ্যা হ্রাসের মধ্যে জনগণকে আরও বেশি সন্তান নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করতে লড়াই করছে।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, জরিপটি চীনের শহর ও গ্রামীণ এলাকায় চালানো হবে। জরিপটি ৫ লাখ পরিবারের নমুনার ভিত্তিতে করা হবে। চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো জানিয়েছে, ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলবে এই কার্যক্রম।
সংস্থাটি জানিয়েছে, এই জরিপ চীনের জনসংখ্যার উন্নয়নমূলক পরিবর্তনগুলো পর্যবেক্ষণ এবং সরকার ও কমিউনিস্ট পার্টিকে জাতীয় অর্থনৈতিক, সামাজিক উন্নয়ন এবং জনসংখ্যা সংক্রান্ত নীতি প্রণয়নের জন্য একটি ভিত্তি প্রদান করতে সহায়তা করবে।
আরও পড়ুন: জন্মহার বাড়িতে নারীদের ভূমিকা রাখার আহ্বান শি জিনপিংয়ের
চীন সর্বশেষ ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে তার এক দশকের আদমশুমারি পরিচালনা করেছিল। সেখানে দেখা গিয়েছিল যে, ১৯৫০ এর দশকে প্রথম আধুনিক জনসংখ্যা জরিপের পর দেশটির লোকসংখ্যা সবচেয়ে ধীর গতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে।
ক্রমহ্রাসমান জন্মহার এবং শিশুদের লালন-পালনের অসুবিধা নিয়ে নাগরিকদের ব্যাপক উদ্বেগের মধ্যে জনসংখ্যার বিকাশকে প্রায়শই রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে দেশের শক্তি এবং পুনরুজ্জীবন এর সাথে যুক্ত করা হয়েছে।
এ নিয়ে সম্প্রতি কথা বলেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। নারীদের পরিবার গঠনের প্রবণতা ধরে রাখতে হবে কারণ পরিবার গঠনে নারীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। সম্প্রতি দেশটির জন্মহার রেকর্ড পরিমাণে হ্রাস পাচ্ছে। তাই নারীদের বিয়ে ও সন্তান জন্ম দেওয়ার ওপর জোর দিতে পরামর্শ দিয়েছেন শি জিনপিং।
চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, নারীদের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে এবং তাদের অবশ্যই একটি পরিবারের নতুন প্রবণতা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
সম্প্রতি চীনের কমিউনিস্ট পার্টির অধীনে পরিচালিত অল চায়না উইমেনস ফেডারেশনের নতুন নেতৃত্ব দলের সাথে আলোচনার অংশ ছিল নারীদের ভূমিকা।
তিনি বলেন, নারীর কাজে ভালো কাজ করা শুধু নারীর নিজের উন্নয়নের সঙ্গেই জড়িত নয়, পারিবারিক সম্প্রীতি, সামাজিক সম্প্রীতি, জাতীয় উন্নয়ন ও জাতীয় অগ্রগতির সঙ্গেও জড়িত।
আরও পড়ুন: সবটাই ফিলিস্তিন, চীনের অনলাইন ম্যাপে নেই ইসরায়েল
তিনি বলেন, বিবাহ ও সন্তান জন্মদানের একটি নতুন সংস্কৃতি সক্রিয়ভাবে গড়ে তোলা এবং বিবাহ, সন্তান জন্মদান এবং পরিবার সম্পর্কে তরুণদের দৃষ্টিভঙ্গির দিকনির্দেশনা জোরদার করা প্রয়োজন।
চীন সরকার জন্মহার বাড়ানোর জন্য গত দুই বছরে দেশজুড়ে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রথাগত বিয়ের খরচ কমানো হয়েছে। কর্মীদের বিয়ের জন্য ছুটি দেওয়া হচ্ছে। দম্পতিদের সন্তান ধারণের জন্য প্রণোদনা দিচ্ছে। মাতৃত্বকালীন ছুটি বাড়ানো হয়েছে। সন্তানের বয়স তিন বছর না হওয়া পর্যন্ত অভিভাবকদের ভর্তুকি দিচ্ছে।
জনসংখ্যার বৃদ্ধি কমাতে ১৯৭৯ সালে এক সন্তান নীতিমালা চালু করেছিল চীন। এ নীতির কঠোর প্রয়োগের ফলে জন্মহার অস্বাভাবিকভাবে কমে আসে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে চীন সরকার বিতর্কিত এক সন্তান নীতিমালার বিপরীতে দম্পতিদের দুই সন্তান নেওয়ার অনুমতি দেয়। ২০২১ সালে অস্বাভাবিক নিম্নমুখী জন্মহার থেকে মুক্তির পথ হিসেবে ‘তিন সন্তান নীতি’ কার্যকর করে চীন। এরপরও পরিস্থিতির খুব একটা পরিবর্তন হয়নি।
একে