আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০১ নভেম্বর ২০২৩, ০১:০০ পিএম
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় নির্বিচারে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। হাজার হাজার মানুষকে পাখির মতো মারছে তারা। এরপরও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে সর্বাত্মক সাহায্যের ঘোষণা দিয়েছে। এমন অবস্থায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, হামাসকে সরিয়ে গাজার শাসনে অন্য কাউকে দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন শুক্রবার আবারো ইসরায়েল সফর করবেন। তিনি ইসরায়েলি সরকারের প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করবেন এবং ওই অঞ্চলে আরো কয়েক জায়গায় যাবেন। এই সফরে ব্লিঙ্কেন কোন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তার সাথে সাক্ষাৎ করবেন কিনা তা এখনো স্পষ্ট নয়। গত তিনি সপ্তাহের মধ্যে এটা হবে ব্লিঙ্কেনের তৃতীয় মধ্যপ্রাচ্য সফর।
মঙ্গলবার ব্লিংকেন বলেন, যদি গাজা ভূখণ্ডে হামাসের নিয়ন্ত্রণ খর্ব করা যায়, তাহলে ভবিষ্যতে ‘বিভিন্ন সম্ভাব্য সমন্বয়ে’র মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশগুলো ওই অঞ্চলের দায়িত্ব নিতে পারে।
আরও পড়ুন: গাজা ইস্যু, বাইডেনকে ‘ভোট না দেওয়ার’ হুমকি মুসলিম আমেরিকানদের
মঙ্গলবার মার্কিন সিনেটের আপ্রোপ্রিয়েশন্স কমিটির শুনানিতে ব্লিনকেন বলেন, ফিলিস্তিনি ঘনবসতিপূর্ণ ছিটমহলটির দায়িত্বে হামাসের থাকা আর চলবে না, কিন্তু ইসরায়েলও গাজা পরিচালনার দায়িত্ব নিতে চায় না।
এই দুই অবস্থানের মধ্যবর্তী ‘বিভিন্ন সম্ভাব্য বিন্যাসগুলো’ তারা এখন খুব নিবিড়ভাবে খুঁজে দেখছেন বলে ব্লিনকেন জানিয়েছেন।
ব্লিংকেন দাবি করেন, কার্যকর এবং পুনরুজ্জীবিত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের হাতেই গাজার দায়িত্বভার থাকার কথা। কিন্তু সেটি সম্ভবপর হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে তার।
এরপরই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে অন্যান্য অস্থায়ী বন্দোবস্ত করতে হবে। সেক্ষেত্রে ওই অঞ্চলে বিভিন্ন দেশকে যুক্ত করা দরকার পড়বে। আন্তর্জাতিক এজেন্সিগুলোর সাহায্যে ওখানকার নিরাপত্তা ও প্রশাসন সামলানো যেতে পারে।'
৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাস যোদ্ধাদের নজিরবিহীন হামলার প্রতিশোধ নিতে ওই দিন থেকেই গাজায় অবিরাম হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। তারা হামাসকে নির্মূল করার প্রত্যয় ঘোষণা করেছে। কিন্তু যে যুদ্ধ শুরু হয়েছে তা কীভাবে শেষ হবে তা নিয়ে পরিষ্কার কোনো ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: জনস্বাস্থ্য বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে গাজা: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ৩ হাজার ৫৪২ জন শিশু। নিহত নারীর সংখ্যা প্রায় আড়াই হাজার। এখনো বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছে। এছাড়া এ বর্বর হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে ২১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নাগরিক আহত হয়েছেন।
এর আগে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজা উপত্যকায় বোমাবর্ষণ করে ইসরায়েল ৫৩টি গণহত্যা চালিয়েছে।
ইসরায়েলের হামলায় বিপর্যস্ত গাজা। সেখানে তীব্র মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। ইসরায়েলের সর্বাত্মক অবরোধের কারণে খাবার, পানিসহ জরুরি পণ্যের মারাত্মক সংকট তৈরি হয়েছে। এমন অবস্থায় গর্ভবর্তী নারী, শিশুসহ হাজার হাজার মানুষ লবণাক্ত ও দূষিত পানি পান করতে বাধ্য হচ্ছেন।
একে