আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১১ অক্টোবর ২০২৩, ০৬:৩৩ পিএম
জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজার একমাত্র বিদ্যুৎকেন্দ্র। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের মাধ্যমে গাজার জরুরি ও সামান্য বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হচ্ছিল। এখন গাজা পুরোপুরি বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। এর ফলে সেখানে মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে ইয়াহু নিউজ।
এর আগে আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছিল যে, গাজার বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে- জ্বালানির অভাবে কিছুক্ষণের মধ্যেই বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাবে। এর কিছুক্ষণ পরই বিদ্যুৎকেন্দ্র পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবর এলো।
হামাসের সঙ্গে সংঘাত শুরু হওয়ার পর গাজায় সর্বাত্মক অবরোধের ঘোষণা দেয় ইসরায়েল। এর ফলে অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে কোনো প্রকার জরুরি পণ্য সরবরাহ সম্ভব হচ্ছে না।
আরও পড়ুন: নিরাপদ জায়গা বলে কিছু নেই: গাজাবাসীর আহাজারি
প্যালেস্টাইন এনার্জি অথরিটির চেয়ারম্যান থাফার মেলহেম বুধবার ভয়েস অফ প্যালেস্টাইন রেডিওকে বলেছেন যে, গাজায় বিকেলে কারখানাটি বন্ধ হয়ে যাবে। বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলগুলোর একটি গাজা। এখানে প্রায় ২৩ লাখ মানুষ বাস করে।
বুধবার গাজা কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতি বলে, বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হওয়ায় পুরোপুরি অন্ধকার হয়ে যাবে গাজাজুড়ে। এর ফলে মৌলিক পরিষেবা প্রদান চালিয়ে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়বে। জেনারেটর দিয়ে খুব বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হবে না।
গাজা কর্তৃপক্ষ বলেছে যে, 'এই বিপর্যয়কর পরিস্থিতি গাজা উপত্যকার সমস্ত বাসিন্দাদের জন্য একটি মানবিক সংকট তৈরি করেছে।'
⭕️ LIVE: Gaza’s power plant has shut down and run out of fuel after Israel imposed a ‘total’ blockade and continued bombardment ⤵️ https://t.co/aAWW4PatAh
— Al Jazeera English (@AJEnglish) October 11, 2023
এদিকে গাজার স্বাস্থ্যমন্ত্রী মাই আল-কাইলা বলেছেন যে, 'গাজার হাসপাতালগুলোতে জেনারেটর চালানোর জন্য পর্যাপ্ত জ্বালানি নেই। যা আছে সেটি বৃহস্পতিবারের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। এর ফলে হাসপাতালের বিপর্যয়কর পরিস্থিতি আরও বাড়বে।'
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের অতর্কিতে হামলার জবাবে সোমবার (৯ অক্টোবর) গাজা উপত্যকাকে সম্পূর্ণভাবে অবরুদ্ধ ঘোষণা করেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইওয়াভ গ্যালান্ট। এর ফলে গত ৩দিন ধরে বিদ্যুৎ, খাবার ও জ্বালানিসহ বেঁচে থাকার সকলপ্রকার উপকরণের সরবরাহ বন্ধ আছে গাজায়। সেই সাথে প্রতিনিয়ত বোমা বর্ষণের কারণে গাজার সড়কে সড়কে এখন মৃত্যু আর আর্তনাদ।
আরও পড়ুন: ‘গাজায় ইসরায়েলি অবরোধ যুদ্ধাপরাধের শামিল’
ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী গাজা উপত্যকার আয়তন ৩৬৩ বর্গকিলোমিটার। সীমান্তের বড় অংশ রয়েছে ইসরায়েলের সঙ্গে, বাকিটা মিসরের সঙ্গে। প্রায় ২৩ লাখ মানুষের বসবাস রয়েছে এখানে।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, গাজার বাসিন্দাদের প্রায় ৮০ শতাংশ আন্তর্জাতিক ত্রাণ সহায়তার ওপর নির্ভর করেন। তাদের মধ্যে প্রায় ১০ লাখ মানুষ প্রতিদিনকার খাদ্যসহায়তার ওপর নির্ভর করে বেঁচে থাকেন। ফলে এই উপত্যকাকে সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ করে ফেলায় দেখা দিয়েছে চরম মানবিক সংকট।
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ৯৫০ জনের বেশি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৫ হাজার। অপরদিকে হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছে ১২০০ এর বেশি মানুষ। আহতের সংখ্যা কয়েক হাজার।
একে