আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:৩৪ পিএম
চন্দ্রযান ৩-এর রোভার প্রজ্ঞানের চাকায় খোদাই করা ছিল ইসরোর ও ভারতের জাতীয় প্রতীক। মনে করা হয়েছিল যে চাঁদের মাটিতে যখন প্রজ্ঞান এগিয়ে যাবে, তখন তার চাকার থেকে এই প্রতীকের ছাপ পড়বে চাঁদের মাটিতে। তবে চাঁদের মাটিতে নাকি সেই ছাপ সুস্পষ্ট ছিল না। আর এটাই এখন 'ভালো খবর'।
মহাকাশ বিজ্ঞানীরা বলছেন, চাঁদের মাটিতে অশোক স্তম্ভ এবং ইসরোর লোগো স্পষ্ট না হওয়া একটি ইতিবাচক ইঙ্গিত। এর ফলে চাঁদের দক্ষিণ মেরুর মাটি সম্পর্কে আরও স্পষ্ট ধারণা হলো। এই দক্ষিণ মেরুই ভবিষ্যতেই বহু চন্দ্র মিশনের সাক্ষী হতে চলেছে। কারণ এখানে পানির অস্তিত্ব পাওয়ার সম্ভাবনা আরও প্রবল হয়েছে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, চাঁদের দক্ষিণ মেরুর এই মাটিই বলে দেবে আগামী দিনে চাঁদে বসতি গড়ার সম্ভাবনা কতটা। ফলে প্রজ্ঞানের পদচিহ্ন স্পষ্ট না হওয়াও বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
আরও পড়ুন: শিখ নেতা হত্যার তদন্ত নিয়ে ভারতকে যা বলল যুক্তরাষ্ট্র
দ্যা টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে ইসরো প্রধান এস সোমনাথ এই বিষয়টির বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, 'অশোক স্তম্ভ এবং ইসরোর লোগোর অস্পষ্ট ছাপ একটি নতুন দিশা দেখিয়েছে আমাদের। আমরা আগে থেকেই জানতাম এই মাটি অনেকটাই আলাদা। কিন্তু, আমাদের দেখার ছিল যে কোন বিষয়টির জন্য এই মাটি এতটা আলাদা। চাঁদের মাটিতে একদম ধুলো নেই। এই মাটি অনেকটা ডেলা পাকানো। অর্থাৎ, কোনো জিনিস মাটিতে আটকে রয়েছে। এটাই আমাদের পরীক্ষা করতে হবে, কোন জিনিসের কারণে মাটি এতটা ডেলা পাকানো।'
জানা গেছে, ইসরোর স্যাটেলাইট ইন্টিগ্রেশন অ্যান্ড টেস্ট এস্টাবলিশমেন্টের পক্ষ থেকে চাঁদের মাটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। সেই রিপোর্ট মোতাবেক, প্রজ্ঞান রোভার চাঁদের মাটিতে স্পষ্টভাবে অশোক চক্র এবং ইসরোর লোগো আঁকতে পারেনি। লুনার সয়েল স্টিমুলেটে আমেরিকার অ্যাপোলো প্রোগ্রামের থেকে পাওয়া চাঁদের মাটির সঙ্গে ইসরোর নমুনা মিলিয়ে দেখা হয়েছে। এই নমুনার মাটি আমেরিকার অ্যাপোলো চাঁদের ভূমধ্যরেখা অঞ্চলের থেকে সংগ্রহ করেছিল। ইসরোর চন্দ্রযান-৩ দক্ষিণ মেরুর মাটি সংগ্রহ করেছে। দুই নমুনার মধ্যে কোনো মিল নেই। অর্থাৎ, চাঁদের আলাদা আলাদা অঞ্চলের মাটির মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতের শিখরা কেন আলাদা রাষ্ট্র চেয়েছিলেন?
এ প্রসঙ্গে ফিজিক্যাল রিসার্চ ল্যাবরেটরির নির্দেশক অনীল ভরদ্বাজ বলেন, 'আমরা স্পষ্টভাবে দেখেছি, রোভার প্রজ্ঞানের হেঁটে চলার কারণে চাঁদের মাটি ডেবে যাচ্ছে। শিবশক্তি পয়েন্ট এবং যে যে অংশে রোভার প্রজ্ঞান হেঁটে বেরিয়েছে, সেখানকার ছবি আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে। ওই অংশের মাটি এক সেন্টিমিটার পর্যন্ত বসে গিয়েছে। ল্যান্ডার বিক্রমের পাও চাঁদের মাটিতে ল্যান্ড করার পর বেশ কিছুটা ঢুকে গেছে। এর থেকে ইঙ্গিত মিলছে যে চাঁদের মাটি অনেক হালকা। যত গভীরে প্রবেশ করবে মাটি ততই নিবিড় হবে।'
এমইউ