শিখ নেতা হত্যার তদন্তে ভারতকে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, আমেরিকা "আন্তর্জাতিক স্তরে দমন-পীড়নের" ঘটনাগুলো "অত্যন্ত বেশি গুরুত্ব দিয়ে" দেখে। তিনি এ বিষয়টিতে "জবাবদিহিতা" নিশ্চিত করতে চান বলেও উল্লেখ করেন।
এক শিখ কানাডিয়ান নাগরিককে হত্যার তদন্তে কানাডাকে সহযোগিতা করতে শুক্রবার ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: ‘ভারত বা কানাডার মধ্যে ভারতকেই বেছে নেবে যুক্তরাষ্ট্র’
মার্কিন বিবৃতিটি এমন সময় দেওয়া হয়েছে, যখন ভারত-কানাডা সম্পর্কে শীতলতা তৈরি হয়েছে। নয়াদিল্লি কানাডিয়ানদের জন্য ভিসা পরিষেবা স্থগিত করেছে। অন্যদিকে, কানাডা একজন ভারতীয় কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে।
কানাডার অভিযোগ, ভারতীয় সরকারের এজেন্টরা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল। নয়াদিল্লি অবশ্য এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন শুক্রবার জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দেন। নিউইয়র্কের অধিবেশনে তিনি এ তদন্তে ভারতকে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন। তার কথায়, ‘‘আমরা জবাবদিহিতার বিষয়টি দেখতে চাই। তদন্তের গতিপথ যেন ঠিকমতো চলে আর ফলপ্রসূ হয়। আমরা আশা করব যে আমাদের ভারতীয় বন্ধুরাও সেই তদন্তে সহযোগিতা করবে।’’
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: রেকর্ড পরিমাণ রাশিয়ান সার কিনছে যুক্তরাষ্ট্র: পরিসংখ্যান
অভিযোগের বিশদ বিবরণ না দিয়ে ব্লিংকেন বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দমনপীড়নের ঘটনাগুলো অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন তারা।’’
ব্লিংকেন বলেছেন যে কানাডা সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ আলোচনা চলছে।
কানাডাও ভারতকে তদন্তে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছে। শুক্রবার ট্রুডো বলেছেন, অভিযোগগুলো প্রকাশ্যে আসার আগে নয়াদিল্লিকে তারা উদ্বেগের বিষয়গুলো জানিয়েছে।
ট্রুডো সাংবাদিকদের বলেন, "সোমবার ভারতের বিরুদ্ধে যে বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগের কথা বলেছিলাম, কানাডা তা জানিয়েছে। আমরা অনেক সপ্তাহ আগে ভারতের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেছি।"
ভারতের জড়িত থাকার অভিযোগ
কানাডিয়ান নাগরিক হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যার বিষয়টি এখন আন্তর্জাতিক রাজনীতির আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে। সোমবার কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো অভিযোগ করেন, নিজ্জর হত্যায় ভারত সরকারের ভূমিকা রয়েছে।
হরদীপ সিং নিজ্জর ভারতে খালিস্তান প্রতিষ্ঠার পক্ষে ছিলেন বলে অভিযোগ করেছে নয়াদিল্লি। ২০২০ সালে তাকে ভারতবিরোধী কার্যকলাপে যুক্ত থাকার অভিযোগে ‘সন্ত্রাসবাদী' আখ্যা দেয় ভারত। নরেন্দ্র মোদি সরকার তাকে নিজেদের অধীনে চেয়েছিল। নিজ্জর বিচ্ছিন্নতাবাদী খালিস্তান আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলে।৷ এই আন্দোলনের মূল দাবি, শিখদের জন্য স্বাধীন আবাসভূমি তৈরি করতে হবে।
সোমবার কানাডার সকল অভিযোগ খারিজ করে পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে কানাডার এক কূটনীতিককে দেশে ফেরত পাঠানোর ঘোষণা দেয় ভারত। গত কয়েক বছর ধরে ভারত-কানাডা কূটনৈতিক সম্পর্ক কিছুটা টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। বর্তমান ঘটনাবলী সেই পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
সূত্র : ডয়চে ভেলে
এমইউ