images

আন্তর্জাতিক

রাশিয়া ও সৌদি আরবের কারণেই কী জ্বালানি তেলের দাম বাড়ছে?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:০৫ পিএম

নতুন করে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে জ্বালানি তেলের দাম। বৃহস্পতিবার তেলের দাম চলতি বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। বিশ্লেষকদের শঙ্কা এ জ্বালানি পণ্যের দাম আরও বাড়বে। কারণ, রাশিয়া ও সৌদি আরব স্বেচ্ছায় জ্বালানি তেলের উৎপাদন কমিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এরপর এই পণ্যের মূল্য সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাল।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রেন্ট জ্বালানির দাম প্রতি ব্যারেলে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৪ দশমিক ৩৫ ডলার। ২০২২ সালের নভেম্বরের পর ব্রেন্ট জ্বালানির মূল্য এই নতুন রেকর্ড করল। ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুডের দাম বেড়ে প্রতি ব্যারেলে দাঁড়িয়েছে ৯০ দশমিক ৮০ ডলার। ১০ মাস আগে এর মূল্য ছিল প্রতি ব্যারেল ৮৯ দশমিক ০৯ ডলার। 

যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক অব আমেরিকার বিশ্লেষকেরা বলছেন, রাশিয়া ও সৌদি আরব তাদের অবস্থান না বদলালে চলতি বছরের শেষ নাগাদ ব্রেন্টের জ্বালানি তেলের দাম প্রতি ব্যারেলে ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। 

চলতি মাসের শুরুর দিকে সৌদি আরব ও রাশিয়া তাদের জ্বালানি তেল উৎপাদন কম রাখার সিদ্ধান্তের মেয়াদ বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। তারা আগের তুলনায় প্রতিদিন অন্তত ১৩ লাখ ব্যারেল কম জ্বালানি তেল উৎপাদন করছে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এর আগে চলতি বছরের এপ্রিলে জ্বালানি তেল উৎপাদক দেশগুলোর জোট ওপেক প্লাসও উৎপাদন হ্রাস করার সিদ্ধান্ত নেয়। 

আরও পড়ুন: ‘তেল সরবরাহ কমানোর বিষয়ে সৌদি যুবরাজের সঙ্গে পুতিনের কথা হয়েছে’

এর আগে ক্রেমলিন বলেছে, ‘জ্বালানি তেল সরবরাহ কমানোর বিষয়ে সাম্প্রতিক চুক্তিগুলো বিশ্বব্যাপী জ্বালানি বাজারে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করেছে।’

রুশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ‘রাশিয়া ও সৌদি আরবের এ দুই প্রভাবশালী নেতা ‘ওপেক প্লাস’ কাঠামোর আওতায় তাদের মধ্যেকার যৌথ সহযোগিতায় অত্যন্ত সন্তুষ্ট।’ ওপেক প্লাস হচ্ছে নেতৃস্থানীয় জ্বালানি তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর সংগঠন।

এক বিবৃতিতে ক্রেমলিন বলেছে, তেলের উৎপাদন কমানোর বিষয়ে করা চুক্তিগুলো পণ্যের সরবরাহ সীমিত করার জন্য স্বেচ্ছাসেবী প্রতিশ্রুতির সঙ্গে মিল রেখে করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি বাজারের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

এছাড়া সৌদি আরব ও রাশিয়া বছরের শেষ পর্যন্ত স্বেচ্ছায় জ্বালানি তেল সরবরাহ কমানোর মেয়াদ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে।

রাশিয়া প্রতিদিন তিন লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেল রফতানি কমানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অন্যদিকে সৌদি আরব স্বেচ্ছায় তার দেশের তেল রফতানি ১০ লাখ ব্যারেল কমিয়ে দেবে বলে জানিয়েছে।

আরও পড়ুন: সৌদিতে জমজমের পানি নিয়ে নতুন নির্দেশনা জারি

এদিকে জ্বালানি তেল উৎপাদক দেশগুলোর সংগঠন ওপেক এর আগে পূর্বাভাস দিয়েছিল যে ২০২৩ ও ২০২৪ সালে জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়বে। তাদের অনুমান ছিল, ২০২৪ সালে প্রতিদিন তেলের চাহিদা বাড়বে ২২ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল। ২০২৩ সালে আগের বছরের তুলনায় এই প্রবৃদ্ধি ছিল প্রতিদিন ২৪ লাখ ৪০ ব্যারেল। 

এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থা (আইইএ) জানিয়েছে, ২০২৩ সালের শেষ পর্যন্ত ওপেক প্লাস যদি জ্বালানি তেলের উৎপাদন কম রাখে, তবে তা চলতি বছরের শেষ প্রান্তিকে চাহিদার বিপরীতে ঘাটতি তৈরি করবে। সংস্থাটি বলছে, আগামী বছরও জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়বে।

এমইউ