প্রতি বছর তিন লাখ অনথিভুক্ত অভিবাসীকে নিয়মিত হওয়ার সুযোগ দেবে ইউরোপের দেশ স্পেন৷ আগামী তিন বছর এই সুযোগ অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন দেশটির অভিবাসনমন্ত্রী এলমা সাইজ।
প্রবীণ মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া এবং কর্মক্ষমদের সংখ্যা কমে যাওয়ায় শ্রমবাজারে ঘাটতি দেখা দিয়েছে দেশটিতে। আর তাই কর্মী সংকট দূর করতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্পেন। খবর ইনফো মাইগ্রেন্টসের।
ইটালি এবং জার্মানির মতো দেশগুলো যখন নিজেদের সীমান্ত সুরক্ষায় কঠোর অবস্থান নিয়েছে, তখন বামপন্থি জোট সরকারের নেত্বত্বাধীন স্পেন বিপুল সংখ্যক অভিবাসীকে গ্রহণ করছে।
স্পেনকে একটি কল্যাণ রাষ্ট্র হিসাবে টিকিয়ে রাখতে হলে দেশটির শ্রমবাজারে বছরে আড়াই থেকে তিন লাখ কর দিতে সক্ষম বিদেশি কর্মী প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন এলমা সাইজ।
তিনি বলেন, ‘স্পেন হয় একটি উন্মুক্ত ও সমৃদ্ধ দেশ হবে, তা না হলে একটি কট্টর ও দরিদ্র দেশ হবে৷ এই দুটি থেকে আমরা আগেরটা বেছে নিয়েছি।’
এই সিদ্ধান্তের আলোকে আইন সংস্কার করা হবে। এছাড়া, বসবাসের অনুমতির আইনি এবং প্রশাসনিক প্রক্রিয়াগুলোকে দ্রুত এবং সহজ করা হবে। এর ফলে অভিবাসীরা স্বনির্ভর বা বেতনভুক্ত কর্মী হিসাবে নিবন্ধনের অনুমতি পাবেন এবং তাদের শ্রম অধিকার নিশ্চিত করা হবে।
এক সংবাদ সম্মলেন অভিবাসনমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমরা বিদেশি কর্মীদের জন্য তাদের পেশাগত দক্ষতা অনুযায়ী চাকরি পাওয়া এবং আমাদের দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে তাদের চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ ব্যক্তিকে নিয়োগ দিতে পারে, সেই প্রক্রিয়াটি সহজ করতে চাই।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নে সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ এখন স্পেন। লাতিন অ্যামেরিকা থেকে আসা দক্ষ অভিবাসীদের সংখ্যা বেড়েছে দেশটিতে। তাদের বেশিরভাগই প্রযুক্তি এবং পর্যটন খাতে শ্রমঘাটতি পূরণ করেছেন। তৃতীয় প্রান্তিকে দেশটির জিডিপি বেড়েছে ৩.৪ শতাংশ।
ভিসা পাওয়া সহজ করতে অনিয়মিত অভিবাসীদের স্পেনে বসবাসের সময়কাল তিন বছর থেকে কমিয়ে দুই বছর করার কথা বলছে সরকার। ফিচ রেটিং বলছে, ২০২২ সালে দেশটির নিট অভিবাসন আগের দশককে ছাড়িয়ে গেছে। এর ফলে, স্পেনে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। ফলে, দেশটিতে প্রবীণ মানুষের সংখ্যা বেড়ে গেলেও তা মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে।
মঙ্গলবার ফিচ রেটিং আরো জানিয়েছে, ‘কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা ২০২৪ থেকে ২০২৮ সালের মধ্যে দেশটির মোট চাহিদার মাঝামাঝি অবস্থায় থাকবে।’
সরকারের এই সিদ্ধান্তের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি ভিসা ইস্যুর বিষয়টিও রয়েছে। চাকরিপ্রার্থীদের ভিসা তিন থেকে ১২ মাস পর্যন্ত বাড়ানোর সুযোগ দেয়া হবে। আর শিক্ষার্থী ভিসায় যারা আছেন, তাদের সপ্তাহে ৩০ ঘণ্টা কাজের অনুমতি দেয়া হবে। এমনকি তাদের পারিবারিক পুনর্মিলন প্রক্রিয়াকেও সহজ করা হবে।
তথ্যসূত্র: ইনফো মাইগ্রেন্টস
এজেড