নিজস্ব প্রতিবেদক
৩০ অক্টোবর ২০২২, ০১:৩৭ পিএম
দেশের সকল স্কুলকে এক শিফটে আনার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আমিনুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, ক্লাসরুম, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের সংখ্যা বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যেই প্রায় ৯০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে এটা কার্যকর করা হবে।
রোববার (৩০ অক্টোবর) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সচিব বলেন, আমাদের টিচিং লার্নিং আওয়ার বাড়াতে চাই। শিফট হওয়ার কারণে আমাদের কম্প্রোমাইজ করতে হচ্ছে। সেজন্য আমরা এক শিফটে নিয়ে আসতে চাই। এতে টিচিং লার্নিং আওয়ার সাড়ে ৪ ঘণ্টা থেকে ৫ ঘণ্টা করা যাবে।
তিনি বলেন, আমাদের প্রায় ৬৫ হাজার ৬৭০টি স্কুল রয়েছে। সেখানে এক শিফটের স্কুলের সংখ্যা ১৪ হাজার ৮৮৪টি রয়েছে। সেখানে ৭টা বা তার অধিক ক্লাসরুম আছে। এরমধ্যে এখনো ১০ হাজার ৯১৫টি স্কুলে ডাবল শিফট চালু হচ্ছে। তার মানে ৪ হাজারের মতো স্কুল আছে এক শিফটে চালু হচ্ছে। আমার এই ১০ হাজার ৯১৫টি স্কুলের মধ্যে ৩ হাজার ৩৩৭টি স্কুলে শিক্ষকের সংখ্যা ৭ জনের বেশি এগুলো আমরা সিঙ্গেল শিফটে করে নিচ্ছি।
আমিনুল ইসলাম খান বলেন, ডাবল শিফটে পরিচালিত হয় কিন্তু শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১’শ জন বা তার কম এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৩ হাজার ৮০৯টি। যার মধ্যে ১ হাজার ৩৪৮টি বিদ্যালয়ে ক্লাসরুমের সংখ্যা ৭ বা তার বেশি। ৯ হাজার ৯৯৫টি বিদ্যালয়ে ক্লাসরুমের সংখ্যা ৩ থেকে ৬টি এবং ৬৩৩টি বিদ্যালয়ের ক্লাসরুমের সংখ্যা ২ বা তার কম। আমরা শিক্ষার্থীর সংখ্যা, ক্লাস রুমের সংখ্যা ও শিক্ষকের সংখ্যা-এই তিনটি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আমরা এক শিফটে যাওয়ার চেষ্টা করছি।
আরও পড়ুন: শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে সচেষ্ট সরকার
তিনি আরও বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম কিন্তু শ্রেণি কক্ষ বেশি সেসব প্রতিষ্ঠানে আশপাশের স্কুল থেকে শিক্ষার্থী নিয়ে আসতে হবে। আবার ভালো শিক্ষক যেসব প্রতিষ্ঠানে আছে সেখানে শিক্ষার্থী বেশি ভর্তি হচ্ছে। আমরা যখন শিক্ষক অদল-বদল করে দিব একটি স্কুলে সব ভালো শিক্ষক আবার সব খারাপ শিক্ষক এই চিত্র থাকবে না।
সরকারি স্কুলে শিক্ষার্থী ভর্তির প্রবণতা কম কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখানে মাইন্ডসেট ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির ব্যাপার আছে। এই জায়গা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। আমি নিজে বেসরকারি বিদ্যালয়ের বিরোধী নয়। কিন্তু আমি মনে করি, সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যদি মান ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে পারলে শিক্ষার্থী আসবেই। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের ভর্তি করবে।
আরও পড়ুন: পড়াশোনা শুধু ডিগ্রি আর সার্টিফিকেটের জন্য নয়: শিক্ষামন্ত্রী
প্রাইভেট স্কুলের শিক্ষকদের স্কুলের যে জবাবদিহিতা করতে তা কি সরকারি স্কুলে আছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা শিক্ষকদের জবাবদিহিতার মধ্যে আনার জন্য মিশ্র পদ্ধতিতে এখন মনিটরিং করছি। ২০১৭ সালের মনিটরিং পরিপত্র পরিবর্তন করা হচ্ছে। মিশ্র পদ্ধতির মনিটরিংয়ের ফলে স্কুল চলাকালে যেকোনো সময় যেকোনো স্কুলে পরির্তন করা যাচ্ছে। এই ফলাফল অব্যাহত থাকলে পরির্তন আসবেই।
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ফল ও শিক্ষক বদলি প্রসঙ্গে সচিব বলেন, আমাদের অনলাইন বদলির কাজ চলছে। আমাগী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে অনলাইন বদলি ও শিক্ষক নিয়োগের কাজ শেষ হবে। শিক্ষকরা এখন ৩ বছর পর পর বদলি হবে। বদলতি সর্বোচ্চ সচ্ছতার চেষ্টা করা হচ্ছে। এছাড়াও আমাদের বিভিন্ন পদশূন্য রয়েছে সেখানে মামলা ও রিট রয়েছে সেগুলোর নিস্পত্তির চেষ্টা চলছে।
এসএএস/এইউ