মো. আব্দুস সবুর (লোটাস)
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:৪৪ পিএম
চলতি বছরের শুরু থেকেই নানা দাবি-দাওয়া নিয়ে মাঠে রয়েছেন শিক্ষকরা। রাজধানীর শাহবাগ মোড় থেকে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয় ঘেরাও; ৫০ দিনের বেশি তারা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন। আন্দোলনের মূল দাবির মধ্যে রয়েছে সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো। এসব কারণে শিক্ষকরা নিয়মিত ও বিরতি দিয়ে মানববন্ধন, অবস্থান, বিক্ষোভ মিছিল ও ‘মার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচি পালন করেছেন। এসব কর্মসূচির মধ্যে কয়েক বার তাদের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হামলাও চালিয়েছে। সব মিলিয়ে বছরের শুরু থেকেই শিক্ষাঙ্গনে এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে।
শিক্ষকদের এত আন্দোলন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে নানা মহলে। কেউ কেউ বলছেন, সরকারকে বিব্রত করতে এসব আন্দোলনের পেছনে ভিন্ন উদ্দেশ্য রয়েছে। তবে এসব আন্দোলনের কিছু যৌক্তিকতাও রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা। একই সঙ্গে শিক্ষকদের এত দাবি মেনে নেওয়া সম্ভব নয় বলেও স্পষ্ট জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা।
চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে সপ্তাহব্যাপী আন্দোলন করেন প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষকরা। তারপর মে মাসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিভিন্নভাবে কর্মবিরতি পালন করে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকরা। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে বিভিন্ন মেয়াদে আন্দোলন করে আসছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। জুলাই মাসে ১০ দিনের বেশি সময় ধরে আন্দোলন করেন তারা। এভাবে চলতি বছর ৫০ দিনের বেশি বিভিন্নভাবে দাবি আদায়ের কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষকরা। এর নেতিবাচক প্রভাব সরাসরি শিক্ষাঙ্গনে পড়ছে বলে জানান শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
আন্দোলন ও পুলিশের হামলা
গত ২৬ জানুয়ারি রাজধানীর শাহবাগে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি শিক্ষকদের ওপর হামলা করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে ১৬ ফেব্রুয়ারি সুপারিশপ্রাপ্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বাতিল হওয়া নিয়োগ ফিরে পাওয়ার দাবিতে ১১তম দিনে শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান নিক্ষেপ করে পুলিশ। গত ১২ মার্চ জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনরত বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর পুলিশ জলকামান ও লাঠিচার্জ করে। এদিন প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার দিকে শিক্ষকরা যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ মারমুখী হয়ে ওঠে। এছাড়া প্রেসক্লাবের সামনে বিভিন্ন দিন শিক্ষক ও পুলিশের মধ্যে বাকবিতণ্ডা দেখা গেছে।

আন্দোলন ও ভোগান্তি
গত ১৩ আগস্ট জাতীয়করণের দাবিতে কয়েক হাজার শিক্ষক জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। এদিন পুরান পল্টন মোড় থেকে কাকরাইল, মগবাজার, কারওয়ান বাজারসহ আশেপাশের এলাকায় যানজটের তীব্র ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ চলাচলকারীদের। এছাড়া প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি থেকে নিয়মিত কদম ফোয়ারা ও পুরান পল্টন মোড় পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করতে দেখা যায় শিক্ষকদের। এসময় রাস্তায় সকল যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে এর প্রভাব আশেপাশের এলাকায় ছড়িয়ে বড় যানজটের সৃষ্টি হয়।
সেগুনবাগিচা এলাকার একজন সরকারি কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, আসলে আমাদের দেশের নিয়মিত বিভিন্ন দাবির আন্দোলনে স্বাভাবিক জীবনযাপনে ভোগান্তি তীব্র হয়ে ওঠে। এমনিতেই রাজধানীতে সিগন্যাল ও মোড়ে মোড়ে যানজট লেগেই থাকে। তারমধ্যে এসব আন্দোলন আগুনে ঘি দেওয়ার মতো। এসব ব্যাপারে আন্দোলনকারী ও সরকারের দুই পক্ষের ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে হবে।
পল্টন মোড়ের ব্যবসায়ী আসিফ আকন্দ বলেন, প্রতিদিন সকালে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসার পর থেকে মনে হয় এই বুঝি মিছিল এলো। মিছিল হলে নানা ধরনের সমস্যা হয়। অনেক সময় দোকান বন্ধ রাখতে হয়। আবার গ্রাহকরা আসে না। রাস্তা বন্ধ হলে সবার ভোগান্তি বাড়ে। আন্দোলন, সংগ্রাম এভাবে চলতে থাকলে আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভিন্ন দিকে নেওয়া ছাড়া আর উপায় দেখছি না।
সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের আন্দোলন
গত ৩০ আগস্ট তিন দাবিতে শহীদ মিনারে মহাসমাবেশ করেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দাবি না মেনে নিলে পরদিন ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি করবেন সারাদেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
তিন দফা দাবি হলো- প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে এন্ট্রি পদ সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে বেতন-ভাতা দেওয়া, শতভাগ শিক্ষককে পদোন্নতি এবং ১০ ও ১৬ বছরপূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা নিরসন।
প্রাথমিক শিক্ষকদের ছয়টি পৃথক সংগঠনের মোর্চা ‘সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ’ এই মহাসমাবেশ আয়োজন করে। মহাসমাবেশে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, গণসংহতি আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়ে শিক্ষকদের দাবির প্রতি একাত্মতা জানান।
এ বিষয়ে ঐক্য পরিষদের অন্যতম নেতা ও বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সহকারী শিক্ষকদের দাবি মেনে না নিলে ২৬ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সহকারী শিক্ষক ঐক্য সংগঠন আমরণ অনশন শুরু করবে।

এদিকে ২০১৩ সালে সারাদেশের ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়। সমান যোগ্যতা থাকার পরও শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে দেশের চলমান যোগ্য চার হাজারের অধিক বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ থেকে বাদ পড়ে। এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত বিভিন্ন সময় ৩০ দিনের বেশি আন্দোলন করেছেন।
ইবতেদায়ি মাদরাসার আন্দোলন
দেশে ২৬ হাজারের বেশি নন-এমপিওভুক্ত মাদরাসা রয়েছে। সব স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা জাতীয়করণের দাবিতে অবস্থান ধর্মঘট করছেন শিক্ষকরা। সবশেষ গত ১৪ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কর্মসচি পালন করেন তারা। চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি সরকারের পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণ ঘোষণা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে এ অবস্থান ধর্মঘট করেন তারা।
আন্দোলনকারী বলছেন, প্রাথমিক স্কুলের মতো সব বিধি-বিধান মেনেও মাদরাসা শিক্ষকেরা চার দশক ধরে বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছেন। মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত সব স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো জাতীয়করণ ঘোষণা করতে হবে।
সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের হুঁশিয়ারি
দেশের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে এন্ট্রি পদ নবম গ্রেডভিত্তিক পদ সোপানের দাবি জানানো হয়েছে। আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে পরবর্তী ২১ কর্মদিবসের মধ্যে দাবিগুলোর ব্যাপারে শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে সফল বৈঠক না হলে ঢাকায় মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষকরা।
গত ১২ সেপ্টেম্বর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ‘সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এন্ট্রিপদ নবম গ্রেড ধরে চারস্তরীয় অ্যাকাডেমিক পদসোপান বাস্তবায়ন পরিষদ’ শীর্ষক ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
জাতীয়করণের দাবি
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জাতীয়করণের আন্দোলন বাংলাদেশের শিক্ষা আন্দোলনের অন্যতম আলোচিত বিষয়। ১৯৭২ সালের পর ২০১৩ সালে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়। কিন্তু মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, কলেজ ও মাদরাসার এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা বাইরে রয়ে যান। একই ধরনের শিক্ষায় অবদান রাখার পরও তারা সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তুলনায় কম সুযোগ-সুবিধা পান। ৪৫-৫০ হাজারের বেশি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেখানে কয়েক লাখ শিক্ষক কর্মরত। তারা আংশিক সরকারি ভাতা পেলেও চাকরির স্থায়িত্ব, পেনশন, উৎসব ভাতা, চিকিৎসা ভাতা, সরকারি স্কেল অনুযায়ী সমান বেতন ইত্যাদি থেকে বঞ্চিত।

তাদের মূল দাবি হলো- পূর্ণ জাতীয়করণ– এমপিওভুক্ত সব স্কুল-কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের সরকারি বেতন কাঠামোর আওতায় আনা। সমান সুযোগ-সুবিধা– সরকারি শিক্ষকদের মতো উৎসব ভাতা, চিকিৎসা ভাতা, বাড়ি ভাড়া ভাতা ইত্যাদি প্রদান।
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ‘জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট’ এর সদস্য সচিব দেলাওয়ার হোসাইন আজিজি বলেন, আমরা ২০ শতাংশ বাসা ভাড়াসহ আরও কিছু বিষয় দাবি করেছি। আগামী ১২ অক্টোবরের মধ্যে সব কিছু মেনে না হলে আমরা লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির দিকে যাবো।
দেশে মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থা প্রাথমিক (ইবতেদায়ি) থেকে কামিল (স্নাতকোত্তর সমমান) পর্যন্ত বিস্তৃত। এই ধারার শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে নানা অবিচার, বৈষম্য ও বঞ্চনার শিকার হয়ে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। শিক্ষকদের মূল দাবির মধ্যে রয়েছে পূর্ণ জাতীয়করণের আওতায় নিয়ে আসা। এছাড়া বেতন-ভাতা থেকে বঞ্চিতদের জন্য দ্রুত এমপিও কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসা। এছাড়া শিক্ষার মানোন্নয়ন ও অবকাঠামো সহায়তা করা।
শিক্ষায় বিশেষজ্ঞ ও সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা যা বলছেন
শিক্ষকদের আন্দোলনের বেশ কিছু ব্যাপারে যৌক্তিকতা থাকলেও আরও কিছু ফ্যাক্টর কাজ করছে বলে মনে করেন শিক্ষা বিশেষজ্ঞ এবং সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা। তাদের মতে, শিক্ষকদের রাস্তায় নেমে এমন আন্দোলন রাষ্ট্রের জন্যও লজ্জাজনক। কারণ এর একটা নেতিবাচক প্রভাব সরাসরি শিক্ষাঙ্গনে পড়ছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সদ্য সাবেক সচিব ড. খ. ম. কবিরুল ইসলাম ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘শিক্ষকদের আন্দোলনের কিছু যৌক্তিকতা রয়েছে। তারা যে ধরনের আর্থিক সুবিধা পান তার চেয়ে বেশিই পাওয়া উচিত। তবে গ্রাজুয়ালি তাদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হচ্ছে। এসব একবারে বৃদ্ধি করা বর্তমান সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। কারণ তাতে বাজেটের ওপর চাপ পড়বে।’
সাবেক এই সচিব বলেন, ‘শিক্ষকদের বেতন ভাতা যেমন বেশি হওয়া উচিত তেমনি তাদের পারফরমেন্সও বাড়াতে হবে। বর্তমানে অনেক শিক্ষক আছেন যারা নিয়মিত ক্লাসে যান না, কিন্তু কোচিং সেন্টারে ঠিকমতো ক্লাস নেন। শিক্ষকদের অধিকার এবং দায়িত্বশীলতা সমান্তরালে এগিয়ে নিতে হবে। আর ক্লাস রুমে পড়াশোনা না থাকায় আমরা অনেক প্রতিভা হারিয়ে ফেলছি। রাজধানীতে এসে নিয়মিত আন্দোলন করার নেতিবাচক প্রভাব শিক্ষাঙ্গনে পড়ছে। এছাড়া শিক্ষকরা দিনের পর দিন আন্দোলনে থাকায় শিখন থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনে তিনটা গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথমত সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরাও এক ধরনের ভূমিকা পালন করছেন। দ্বিতীয়ত যাদের রাজনৈতিক মিশন-ভিশন রয়েছে তারা বিভিন্নভাবে এসব আন্দোলনকে ভিন্ন খাতের নেওয়ার চেষ্টা করছেন। তৃতীয়ত কিছু শিক্ষক রয়েছেন যারা নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থে আন্দোলনের সম্মুখ সারিতে কাজ করছেন। তারা মূলত শিক্ষকদের মধ্যে নেতা হয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষা বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘দেশের শিক্ষাখাত খুবই অবহেলিত। শিক্ষদের যে স্কেলে বেতন দেওয়া হয় সেটি খুবই কম। পৃথিবীর অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় আমাদের দেশের শিক্ষকরা কম বেতন পান। তবে তাদের সুযোগ-সুবিধার জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে আন্দোলন করার দরকার নেই। এসব কাগজে-কলমেও করা যায়। কিন্তু রাস্তায় না নামলে কোনো দাবিকে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। ফলে এসব আন্দোলন নিয়মিত ভোগান্তি বাড়াচ্ছে।’
গত ১৩ আগস্ট সচিবালয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার জানান, এতসংখ্যক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার এমপিওভুক্ত এতসংখ্যক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করতে পারবে না। এটা অত্যন্ত জটিল ও চ্যালেঞ্জিং ইস্যু। এটা করা ইন্টেরিম গভর্মেন্টের (অন্তর্বর্তী সরকার) পক্ষেও সম্ভব নয়। নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার এটা করতে পারে। তবে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে সরকার আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছে বলেও জানান তিনি।
এএসএল/জেবি