images

শিক্ষা

পাল্টে গেছে ঢাবির কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির চিত্র!

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

২২ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৩ পিএম

  • বাড়ছে একাডেমিক পড়াশোনা
  • কমেছে বিসিএসকেন্দ্রিক পড়ার প্রবণতা
  • দখলমুক্ত হওয়ায় হলে ফিরেছে পড়াশোনার পরিবেশ
  • বহিরাগতদের আনাগোনাও কম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম আইকনিক ভবন কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি। প্রায় প্রতিদিনই মুখর থাকত এই স্থানটি। এমনকি গত জুলাইয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার পরও দাবি উঠে লাইব্রেরি খোলা রাখার। কিন্তু বর্তমানে হুমড়ি খেয়ে পড়ার মতো ব্যস্ততা নেই কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে। আগে যেখানে সকাল সকাল বিশাল লাইন ধরে ঠেলাঠেলি করে সিট দখল হতো সেখানে এখন লাইব্রেরি খোলার ৪-৫ ঘণ্টা পরে গেলেও পাওয়া যাচ্ছে সুন্দর মানানসই পড়ার পরিবেশ।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পাল্টে গেছে দেশের রাজনৈতিক চিত্র। এর ছোঁয়া লেগেছে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও। উপাচার্যসহ নতুন প্রশাসন এসেছে। দৌরাত্ম্য নেই একক কোনো ছাত্র সংগঠনেরও। ফলে অনেক কিছু সিস্টেমের মধ্যে চলে এসেছে।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে এখনো বেশ কিছু সিট ফাঁকা। অথচ ৫ আগস্টের আগে একটি সিট ফাঁকা থাকাও যেন শিক্ষার্থীদের জন্য সোনার হরিণ পাওয়ার মতো ছিল।

আরও পড়ুন

আরেকটি ‘অক্টোবর ট্রাজেডি'র অপেক্ষায় ঢাবি!

এছাড়া বিসিএসকেন্দ্রিক বিভিন্ন বইপত্রের পাশাপাশি একাডেমিক, সাহিত্য এবং গবেষণাকর্মের বিভিন্ন বই পড়তে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশকে।

DU2

কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে দীর্ঘদিন ধরে পড়তে আসেন অনুকূল রায়। তিনি সয়েল ওয়াটার এনভায়রনমেন্ট বিভাগের একজন শিক্ষার্থী। তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, মূলত এখন সবারই আবাসিক হলের বৈধ সিট আছে। হলে সিটকেন্দ্রিক ছাত্রলীগের দখলদারিত্ব এখন আর নেই। যার কারণে রুমেই পড়াশোনা করতে পারছে একটা বিরাট অংশ। এছাড়া হলে যারা মেয়াদোত্তীর্ণ এবং অবৈধভাবে থাকত তারাও এখন আর হলগুলোতে নেই। যার কারণে লাইব্রেরির এই সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

আরও পড়ুন

‘ভালো খাবার’ খুঁজতে হয়রান ঢাবির দুই হলের শিক্ষার্থীরা!

ইনফরমেশন সাইন্স অ্যান্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী আবু রায়হান বলেন, আসলে এখন শিক্ষার্থীরা আউট অফ বক্স চিন্তা করতে পারছে। বিসিএস ছাড়াও অন্যান্য দিকে তারা মনোনিবেশ করতে পারছে। কারণ তাদের এখন আর গেস্ট রুম গণরুমের নির্যাতনের মধ্যে পড়তে হচ্ছে না। যার কারণে একাডেমিক ডিপ নলেজের সন্ধানে অনেকেই আসছেন। এছাড়া ৫ আগস্টের পর তেমন বিশেষ কোনো চাকরির সার্কুলার জারি হয়নি। যার কারণে কেউ পড়াশোনার তেমন একটা তাগাদা পাচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের একটা বিরাট অংশ রাজনৈতিকভাবে সচেতন হয়ে উঠেছে। তাই 'কেবল পড়াশোনাই করতে হবে' এই ধ্যান-ধারণা থেকে বেরিয়ে আসছে একটা বিরাট অংশ।

প্রসঙ্গত, গত জুলাই বিপ্লবে ঢাবির কেন্দ্রীয় এই লাইব্রেরি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মিটিং পয়েন্টের মতো ছিল। ৩৬ দিনের আন্দোলনের প্রথম ১৪ দিন এখান থেকেই বিরাট মিছিলগুলো বের হয়ে রাজু ভাস্কর্য ও শাহবাগ দখল করত৷ চলতো অবস্থান কর্মসূচি।

আরএ/জেবি