অর্থপাচারের ঘটনায় মামলার পাশাপাশি ‘সমঝোতার’ ইঙ্গিত গভর্নরের

বিদেশে অর্থপাচারে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার পাশাপাশি তাদের সঙ্গে ‘সমঝোতার’ ইঙ্গিত দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) প্রকাশিত একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা জানান।

আহসান এইচ মনসুর বলেন, বিদেশে অর্থপাচারের যেসব মামলা রয়েছে সেগুলোর মধ্যে অপেক্ষাকৃত কম গুরুতর মামলাগুলোর ক্ষেত্রে আর্থিক সমঝোতা ‘অন্যতম বিকল্প’ হতে পারে।

যুক্তরাজ্য সফরের আগে ঢাকায় দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কথিত কার্যকলাপের প্রকৃতির ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপ নির্ভর করবে। যদি আইন লঙ্ঘনের প্রকৃতি তুলনামূলকভাবে হালকা ধরনের হয়, তবে আমরা দেওয়ানি মামলা করব। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আর্থিক সমঝোতার কথা বিবেচনা করা হবে।

আরও পড়ুন: বৈধ পথে রেমিট্যান্স বাড়াতে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নরের বৈঠক

তিনি জানান, তার দল আন্তর্জাতিক মামলা পরিচালনায় অর্থ জোগানো প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। বাংলাদেশে এসে সম্পদ পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় সহায়তার জন্য তাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। বিনিময়ে মামলায় সফল হলে সমঝোতার ভিত্তিতে বা পুরস্কার হিসেবে কিংবা আগেই নির্ধারণ করা অর্থ গ্রহণ করে থাকে তারা।

গভর্নর আরও বলেন, ‘আমরা লিটিগেশন ফান্ডিংয়ের দিকে নজর দিচ্ছি। এ নিয়ে খুবই ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি। আমরা চাই, যতটা সম্ভব অর্থ এ উৎস থেকে জোগাড় করা।’

বর্তমানে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী হিসেবে লন্ডনে রয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

আরও পড়ুন: ২৫ বিলিয়ন ডলার দেশে ফেরাতে চান বাংলাদেশ ব‍্যাংক গভর্নর

এদিকে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে যৌথ প্রচেষ্টা জোরদার করেছে বাংলাদেশ। পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধার একটি দীর্ঘমেয়াদি ও জটিল প্রক্রিয়া। তাই এ কাজে গতি আনতেই অন্তবর্তী সরকার প্রচেষ্টা আরও জোরদার করেছে।

প্রেস সচিব জানান, পাচার হওয়া সম্পদ ফেরত আনার বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইমস এজেন্সির (এনসিএ) সঙ্গে বৈঠক করেছেন। পাচারের অর্থ শনাক্ত, কীভাবে পাচার হয়েছে তা খুঁজে বের করা ও জব্দ করার বিষয়ে ‘এনসিএ’র ভালো অভিজ্ঞতা রয়েছে। এ বিষয়ে সংস্থাটি ইতোমধ্যে দুটি পদক্ষেপও নিয়েছে।

শফিকুল আলম আরও বলেন, পাচারকৃত অর্থ কীভাবে ফেরত আনা যায় তা জানতে অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতাও যাচাই করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যেই একাধিক বৈঠক হচ্ছে।

টিএই/এএইচ