জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
১৮ মে ২০২৫, ০৭:২৯ পিএম
টানা ৯ মাস প্রতি মাসেই দুই বিলিয়নের ওপর রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। গত মার্চে তিন বিলিয়ন রেমিট্যান্স পাঠিয়ে রেকর্ড গড়েন প্রবাসীরা। বাড়ছে রফতানি আয়ও। তারপরও কমেছে রিজার্ভ। বর্তমানে বিপিএম-৬ ম্যানোয়াল হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছে ২০ বিলিয়ন ডলারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, শনিবার (১৭ মে) পর্যন্ত দেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৫ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী, দেশের রিজার্ভ রয়েছে ২০ বিলিয়ন ডলার।
আরও পড়ুন: ৪.৩২ শতাংশ সুদে পরিশোধ আকুর বিল, কমেছে রিজার্ভ
এর আগে গত ৮ মে মোট রিজার্ভ ছিল ২৫ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার। আর বিপিএম-৬ অনুযায়ী দেশের রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ২১ বিলিয়নে (বিপিএম-৬) নেমে যায় রিজার্ভ। এরপর ধারাবাহিক কমে ১৮ বিলিয়নে নামে।
এরপর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অর্থপাচার কমে আসায় রিজার্ভ বাড়তে শুরু করে। ধীরগতিতে বেড়ে ১৯ মাস পর ৩০ এপ্রিল ২৭ বিলিয়ন অতিক্রম করে রিজার্ভ। আইএমএফ হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী, দেশের রিজার্ভ দাঁড়ায় ২২ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার।
তবে চলতি মাসের শুরুর দিকে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) বিল বাবদ ১ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন বা ১৮৮ কোটি ডলার পরিশোধ করছে বাংলাদেশ। এতে কমে যায় রিজার্ভ।
এ দুই হিসাবের বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে, যা শুধু আইএমএফকে জানানো হয়। সে হিসাবে আইএমএফের এসডিআর খাতে থাকা ডলার, ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রা ক্লিয়ারিং হিসাবে থাকা বৈদেশিক মুদ্রা এবং আকুর বিল বাদ দিয়ে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের হিসাব করা হয়। সেই হিসাবে দেশের ব্যয়যোগ্য প্রকৃত রিজার্ভ এখন ১৬ বিলিয়নের ঘরে।
আরও পড়ুন: আইএমএফের ঋণে কতটা স্বস্তি মিলবে রিজার্ভে?
একটি দেশের ন্যূনতম তিন মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের বর্তমান রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসের বেশি সময়ের আমদানি দায় মেটানো সম্ভব। নিট রিজার্ভ গণনা করা হয় আইএমএফের ‘বিপিএম-৬’ পরিমাপ অনুসারে। মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদী দায় বিয়োগ করলে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভ বের হয়।
এদিকে প্রবাসী আয়ের ইতিবাচক প্রবাহ অব্যাহত রয়েছে চলতি মে মাসেও। এই মাসের ১৭ দিনে এসেছে ১৬১ কোটি ডলার প্রবাসী আয়। এই প্রবাহ অব্যাহত থাকলে এই মাসেও তিন বিলিয়নের বেশি রেমিট্যান্স আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, চলতি মে মাসের প্রথম ১৭ দিনে ১৬১ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ প্রায় ১৯ হাজার কোটি ৬৪২ কোটি টাকা। প্রতিদিন গড়ে এসেছে ৯ কোটি ৪৭ লাখ ডলার বা ১১৫৫ কোটি টাকা।
টিএই/এএইচ