images

অর্থনীতি

পণ্যমূল্যে কারসাজি করলে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

২২ জানুয়ারি ২০২৪, ০৮:০৪ পিএম

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে নিজের কড়া অবস্থানের কথা আবারও জানান দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, কেউ দুরভিসন্ধিমূলকভাবে পণ্য মজুদ করে দাম বাড়িয়ে দিলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাজারে যেন কেউ কারসাজি না করতে পারে সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করেছেন সরকারপ্রধান।

সোমবার (২২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে সভাপতিত্বকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

ভরা মৌসুমে চালের দাম কমার কথা, তা বাড়ল কেন? সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর পেছনে কারা, তাদের খুঁজে বের করতে হবে। অস্বাভাবিকভাবে দুরভিসন্ধিমূলক মজুদ করলে তাদের খুঁজে বের করে সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জেলে দিতে হবে।

আরও পড়ুন

পণ্যের ঘাটতি নেই, কারসাজি করলে ব্যবস্থা: অর্থমন্ত্রী

সরকারপ্রধান বলেন, দেশে আর কখনো অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে দেওয়া হবে না। বাজার নিয়ে কেউ যেন কোনো খেলা খেলতে না পারে, সেজন্য দেশবাসীকে সজাগ থাকতে হবে। মজুতদারি করে কেউ যাতে মানুষের খাবার নিয়ে খবরদারি করতে না পারে সেদিকে সাধারণ মানুষকেও খেয়াল রাখতে হবে। কোথাও কোনো অস্বাভাবিক কিছু দেখলে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে জানাতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, ভোটের পর হঠাৎ দেখলাম বাজারে চালের দাম বেড়ে গেল। ভরা মৌসুমে কেন চালের দাম বেড়ে গেল, এই চক্রকে খুঁজে বের করা হবে।

টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠনের পর ইশতেহারের ঘোষণা অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন বাজারব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের ওপর। বিশেষ করে নিত্যপণ্যের দাম যেন জনসাধারণের হাতের নাগালে আসে সেই বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আগেও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। যেকোনো মূল্যে মূল্যস্ফীতি কমানোর তাগিদ দিয়েছেন সরকারপ্রধান। আর প্রধানমন্ত্রীর সেই নির্দেশনা পেয়ে তৎপর হয়েছে উঠেছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দফতরগুলো। রমজানকে সামনে রেখে নিত্যপণ্যের বাজারে লাগাম টানতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে তারা।  

আরও পড়ুন

নিত্যপণ্যের বাজারে লাগাম টানতে নানা উদ্যোগ

রমজানের আগে দ্রব্যমূল্যে ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে প্রয়োজনীয় কৌশল নিয়ে আলোচনা করতে রোববার (২১ জানুয়ারি) বৈঠক করেছেন সংশ্লিষ্ট পাঁচ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা। অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, এনবিআর চেয়ারম্যানসহ রাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা।

HHH

বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জানান, রমজানে প্রয়োজনীয় সব পণ্যের যথেষ্ট মজুদ আছে। কেউ কারসাজি করে দাম বাড়াতে চাইলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দ্রব্যমূল্য ইস্যুতে কেউ যাতে ঘোলাটে পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে না পারে সে ব্যাপারে সরকার সতর্ক বলেও জানান মন্ত্রী।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মূল্যস্ফীতির সর্বশেষ যে হিসাব দিয়েছে তাতে দেখা যায়, গত ডিসেম্বরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে ৯.৪১ শতাংশ হয়েছে। এটা গত সাত মাসে সর্বনিম্ন। এই সময়ে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও খাদ্য বহির্ভূত পণ্যেও মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।

আরও পড়ুন

নতুন সরকারের সামনে পুরনো অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ

গত অক্টোবরে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.৯৩ শতাংশ। নভেম্বরে কমে হয় ৯.৪৯ শতাংশ। গত এপ্রিলে এটি ছিল ৯.২৪ শতাংশ। কিন্তু মে মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯.৯৪ শতাংশ।

বিবিএসের তথ্যমতে, ডিসেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ৯.৫৮ শতাংশ, আগের মাসে যা ছিল ১০.৭৬ শতাংশ। কিন্তু চালের দাম বাড়তে থাকায় মূল্যস্ফীতি যে সামান্য কমে স্থিতিশীল হয়েছে তা কতটা ধরে রাখা যাবে তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

জেবি