images

অর্থনীতি

একদিনে রেকর্ড ২৪,৬১৫ কোটি টাকা ধার দিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক

ঢাকা মেইল ডেস্ক

২২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:৩১ এএম

তারল্য সংকটে থাকা দেশের বিভিন্ন ব্যাংককে অর্থ দিয়ে সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার রেকর্ড ২৪ হাজার ৬১৫ কোটি টাকা স্বল্পমেয়াদি ধার দিয়েছে। এর আগে একদিনে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এত টাকা ধার দেওয়ার নজির নেই। এর আগে সংস্থাটি গত সোমবার ১৬ হাজার ৯৭০ কোটি টাকা ধার দিয়েছিল।

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, প্রত্যাশা অনুযায়ী আমানত সংগ্রহ হচ্ছে না। একইসঙ্গে খেলাপি ঋণ বেড়ে যাচ্ছে। আবার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রির কারণে বাজার থেকে বড় অঙ্কের টাকা উঠে আসছে। এসব কারণে কোনো কোনো ব্যাংকের তারল্য প্রবাহ কমে গেছে।

চলতি অর্থবছরের নভেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে প্রায় ৫০০ কোটি ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিপরীতে বাজার থেকে ব্যাপক পরিমাণে টাকা উঠে এসেছে।

এ অবস্থায় সাময়িক চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অন্য ব্যাংক থেকে ধারের চাহিদা বেড়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন সরাসরি সরকারকে ঋণ দিচ্ছে না। সরকার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ঋণ নিচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকে বুধবার বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য রেপো, লিকুইডিটি সাপোর্ট সুবিধা, স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটি এবং শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর জন্য ইসলামিক ব্যাংকস লিকুইডিটি সুবিধার (আইবিএলএফ) নিলাম অনুষ্ঠিত হয়।

এই নিলামে একদিন মেয়াদি রেপো সুবিধার আওতায় একটি ব্যাংক ৩৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা, ৭ দিন মেয়াদি রেপো সুবিধার আওতায় ২৫টি ব্যাংক ও ৩টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ১২ হাজার ৮৩৮ কোটি টাকা, একদিন মেয়াদি লিকুইডিটি সাপোর্ট সুবিধার আওতায় ১৪টি প্রাইমারি ডিলার ব্যাংক মোট ৭ হাজার ৪৯৯ কোটি টাকার বিড বা দরপ্রস্তাব দাখিল করে।

এ ছাড়া একদিন মেয়াদি স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটি হিসেবে একটি ব্যাংক ২১৫ কোটি টাকার দরপত্র এবং ১৪ দিন মেয়াদি ইসলামিক ব্যাংকস লিকুইডিটি সুবিধার আওতায় ৬টি ব্যাংক ৪ হাজার ২৭ কোটি টাকার দরপ্রস্তাব জমা দেয়।

নিলাম কমিটি সব দরপ্রস্তাবই গ্রহণ করে। ফলে রেপো, লিকুইডিটি সাপোর্ট সুবিধা, স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটি ও আইবিএলএফের আওতায় সব মিলিয়ে ২৪ হাজার ৬১৫ কোটি টাকা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে বার্ষিক সুদের হার হচ্ছে ৭.৭৫ থেকে ৯.৭৫ শতাংশ পর্যন্ত। অনেকদিন ধরে দেশের মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের কাছাকাছি থাকলেও তা কমানোর কার্যকর উদ্যোগ ছিল না।

একদিকে সুদহারের সর্বোচ্চ সীমা ৯ শতাংশে আটকে রাখা হয়। আবার গত অর্থবছর ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার যে ১ লাখ ২২ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিল, এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরাসরি দেয় ৯৭ হাজার ৬৮৪ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংক সরাসরি ঋণ দেওয়া মানে নতুন টাকা ছাপানোর মতো। এ প্রবণতা মূল্যস্ফীতিকে উস্কে দেয়। যে কারণে বেশ আগে থেকে এভাবে ঋণ সরবরাহ না করার পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন অর্থনীতিবিদরা।

আইএমএফের ঋণের শর্তের কারণে গত জুলাই থেকে সুদহারের সীমা তুলে নতুন ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর গত ২৭ নভেম্বর রেপোর সুদহার ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৭.৭৫ শতাংশ করা হয়েছে। সূত্র: মানবজমিন

/এএস