images

অর্থনীতি

সর্বজনীন পেনশন স্কিমে প্রথম দিনে নিবন্ধন ৮ হাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৮ আগস্ট ২০২৩, ০৯:২০ পিএম

দেশের নাগরিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পেনশন ব্যবস্থার আওতায় আনতে সর্বজনীন স্কিম চালু করেছে সরকার। এই কর্মসূচি চালুর প্রথম দিনই ভালো সাড়া মিলেছে। এদিন আট হাজারের বেশি গ্রাহক নিবন্ধনের আবেদন পাঠিয়েছেন। এর মধ্যে ১ হাজার ৭০০ জন আবেদনের পুরো প্রক্রিয়া শেষ করে চাঁদা পরিশোধ করেছেন।

শুক্রবার (১৮ আগস্ট) জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য গোলাম মোস্তফা গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার পেনশন কর্মসূচির উদ্বোধনের দিন বিকেল পর্যন্ত প্রায় ছয় হাজার মানুষ নিবন্ধন করেছেন। রাত ১২টা পর্যন্ত সেটি বেড়ে ৮ হাজারে দাঁড়ায়। তবে প্রথম দিন সব মিলিয়ে ১ হাজার ৭০০ জন পেনশনের চাঁদা পরিশোধ করেছেন। যেহেতু পেনশনের নিবন্ধন থেকে শুরু করে চাঁদা পরিশোধের পুরো প্রক্রিয়াটি অনলাইনে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই করা যাচ্ছে, সেহেতু আবেদনকারীর সংখ্যা প্রতি মুহূর্তেই বাড়ছে।’

এর আগে, বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) এ কর্মসূচির ছয়টি স্কিমের মধ্যে চারটি স্কিম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাকি দুটি পরে চালু করা হবে। এর মধ্যে ‘প্রবাস’ স্কিমটি প্রবাসীদের জন্য। ‘প্রগতি’ স্কিম চালু করা হয়েছে বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য। অনানুষ্ঠানিক খাত অর্থাৎ স্বকর্মে নিয়োজিত নাগরিকদের জন্য রয়েছে ‘সুরক্ষা’। আর ‘সমতা’ স্কিমটি নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য। ১৮ বছরের বেশি দেশের চার শ্রেণির প্রায় ১০ কোটি মানুষ এ কর্মসূচিতে অংশ নেবে বলে আশা করছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

আরও পড়ুন: সর্বজনীন পেনশনে কত জমা দিলে কত পাবেন?

অর্থ বিভাগের সূত্রগুলো জানায়, যে দুটি পরে চালু করা হবে তার মধ্যে একটি শ্রমিক শ্রেণির জন্য, অন্যটি শিক্ষার্থীদের জন্য।

পেনশন কর্মসূচি বা স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হলে ৬০ বছর বয়সের পর থেকে আজীবন পেনশন সুবিধা পাবেন একজন গ্রাহক। গ্রাহক মারা গেলে তার নমিনি বা উত্তরাধিকারী পেনশন পাবেন। এ ক্ষেত্রে গ্রাহকের ৭৫ বছর বয়স হতে যত বছর বাকি থাকবে, সেই সময় পর্যন্ত নমিনি পেনশন তুলতে পারবেন। ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী যে কেউ পেনশন কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন। ৫০ বছরের বেশি বয়সীরাও বিশেষ বিবেচনায় পেনশনভুক্ত হতে পারবেন। তবে আজীবন বা ন্যূনতম ৭৫ বছর বয়স পর্যন্ত পেনশন সুবিধা পেতে কমপক্ষে একাধারে ১০ বছর নির্দিষ্ট হারে চাঁদা পরিশোধ করতে হবে।

আরও পড়ুন: সর্বজনীন পেনশনের আবেদন করবেন যেভাবে

সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হতে গেলে ইউপেনশন ওয়েবসাইটে যেয়ে নিবন্ধন করতে হবে। যেসব প্রবাসীর বাংলাদেশের এনআইডি নেই, তারা বৈধ পাসপোর্টের ভিত্তিতে ব্যাংকিং চ্যানেল, অনুমোদিত মোবাইল আর্থিক পরিষেবা এবং এক্সচেঞ্জ হাউসের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রায় চাঁদা দিয়ে কর্মসূচিতে যুক্ত হতে পারবেন। নিবন্ধনের পর একটি নম্বর পাওয়া যাবে, যা দিয়ে চাঁদা পরিশোধসহ সব কাজ করা যাবে। গ্রামীণ পর্যায়ে নিবন্ধন করতে সহযোগিতা করবে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার। এ কার্যক্রমকে আরও সহজ করতে শিগগির মোবাইল অ্যাপস চালু করবে পেনশন কর্তৃপক্ষ।

জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা জানান, কেউ যদি অনলাইনে পেনশন কর্মসূচিতে নিবন্ধন করতে না পারেন, তাহলে তিনি সোনালী ব্যাংকের যেকোনো শাখায় যেতে পারেন। সেখানে ব্যাংকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আগ্রহী ব্যক্তিদের পেনশনের জন্য নিবন্ধিত হওয়ার পাশাপাশি চাঁদা পরিশোধের বিষয়ে সহায়তা করবেন। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে পেনশন কর্তৃপক্ষের একটি সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) সই হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য ব্যাংকের সঙ্গেও অনুরূপ এমওইউ সই হবে বলে জানা গেছে।

এমএইচটি